বুধবারই রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন একেবারে 'স্বাভাবিক'। কিন্তু, তার পরদিনই একেবারে তাঁকে মুকের উপর জবাব দিয়ে দিলেন উপত্যকাবাসী। বৃহস্পতিবার থেকে ফের স্বতঃস্ফুর্ত বন্ধ দেখা গেল কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে। দোকানপাটের শাটার নামানো ছিল। রাস্তায় বাস অটোর দেখা মেলেনি। ব্যক্তিগত গাড়িও ছিল হাতে গোনা। সব মিলিয়ে ৩৭০ ধারা বাতিলের পরের ১০০ দিনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হল আবার। শুক্রবারও সেই ছবিটা পাল্টায়নি।
গত ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর থেকে জম্মু ও কাশ্মীকরে বেশ কয়েকদিন ১৪৪ ধারা জারি ছিল। একেবারে বন্ধ ছিল ফোনলাইন, ইন্টারনেট পরিষেবা। আবার কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ রেখেছিলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পোস্টার দিয়ে স্থানীয়দের দোকান বন্ধ রাখার হুমকিও দিচ্ছিলেন।
তবে সম্প্রতি সত্যি সত্যিই পরিস্থিতিটা পাল্টাচ্ছিল। উপত্যকার বেশ কিছু অংশে পুরো দিন দোকান খোলা থাকছিল। পোস্টার-হুমকির তোয়াক্কা না করে নিত্যদিনের স্বাভাবিক রুটিনে ফিরছিলেন উপত্যকাবাসী। কিন্তু, বাধ সাধল অমিত শাহ-এর রাজ্যসভায় করা ওই 'স্বাভাবিক' মন্তব্যই। ওই মন্তব্য যে সাধারণ কাশ্মীরবাসী একেবারেই ভালোভাবে নেননি, তা তাঁদের প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবার সকালে শ্রীনগর-সহ উপত্যকার অনেক জায়গাতেই অধিকাংশ দোকানের শাটার নামানো রয়েছে। স্থানীয় দোকানদাররা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার প্রায় সব কাশ্মীরি ব্যবসায়ীরাই সারাদিন দোকান বন্ধ রেখেছিলেন। কাশ্মীর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি শেখ আশিক জানিয়েছেন, এই বনধ কিন্তু একেবারে স্বতঃস্ফুর্ত। কেউ ভয় দেখায়নি, বনধের ডাক পর্যন্ত দেয়নি কেউ। ব্যবসায়ীরা নিজে থেকেই দোকান বন্ধ রেখেছেন।
শেখ আশিকের মতে রাজ্যসভায় অমিতের কথার প্রতিক্রিয়াতেই ফের বনধের মুখে পড়েছে উপত্যকা। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে করা মন্তব্য একেবারেই ভ্রান্ত। তার থেকে বড় কথা হল, তাঁর কথায় মনে হয়েছে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উপত্যকাবাসী যেন দারুণ খুশি। এতেই আহত হয়েছেন কাশ্মীরিরা। শেখ আশিকের আশঙ্কা, এই নতুন করে চালু হওয়া বনধ বেশ কয়েকদিন ধরে চলতে পারে।