সোনম ওয়াংচুক আমাদের শেখান প্রকৃত শিক্ষার মানে। তিনিই বলতে পারেন শিখতে চাইলে কোনও স্কুল বা শিক্ষকের দরকার পড়ে না। প্রকৃতিই জীবনের সেরা শিক্ষা দেয়।
থ্রি ইডিয়টসের ফুংসুক ওয়াংরুকে কেউ ভোলেননি নিশ্চয়ই? সেই ফুংশুক ওয়াংরু যে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে এক আশ্চর্য স্কুল গড়ে তুলেছিল। এক স্বপ্নের জগত। এভাবেও যে কেউ পড়াশোনা শিখতে পারে, যা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল, তাই সম্ভব করে দেখিয়ে ছিল সে? ফুংশুক ওয়াংরু তো আসলে সেই লোকটা, যে লোকটা একদিকে ইঞ্জিনিয়র, অন্যদিকে শিক্ষক। একদিকে শিক্ষা সংস্কারক অন্যদিকে শিল্পোদ্যোগী। তিনিই তো সোনম ওয়াংচুক।
সেই সোনম ওয়াংচুক আমাদের শেখান প্রকৃত শিক্ষার মানে। তিনিই বলতে পারেন শিখতে চাইলে কোনও স্কুল বা শিক্ষকের দরকার পড়ে না। প্রকৃতিই জীবনের সেরা শিক্ষা দেয়। মানুষের কাছে যথার্থ সফটওয়্যার হল আগ্রহ, যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেলে তবেই পূর্ণ শিক্ষিত হতে পারেন কোনও মানুষ। লাদাখের হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভসের ডিরেক্টর সোনম ইশা ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'ইশা ইনসাইট: দ্য ডিএনএ অফ সাকসেস'-এর একটি অধিবেশনে যোগ দেন। সেখানে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষার কিছু অংশ শেয়ার করেন।
তিনি বলেন "অধিকাংশ নয়, কিছু শিক্ষক এই শেখার সফ্টওয়্যারটি মুছে দেন বা বাবা-মায়েরা পড়ার আনন্দ মুছে দেন। আমার পরামর্শ এই সফ্টওয়্যারটি ব্যবহার করুন এবং তারপর সময় ব্যয় করুন জানার চেষ্টা করুন কেন আমার সন্তান শেখার এবং পড়তে আগ্রহী নয়।"
তিনি বলেন সহানুভূতি হল জীবনে শেখার দ্বিতীয় স্তম্ভ। সহানুভূতি শুধুমাত্র একজন ভালো মানুষ হওয়া সম্পর্কে নয় বরং আপনি যা করেন তা অন্যদের সাহায্য করার জন্য এবং অন্যের ক্ষতি না করার জন্য। তবেই সম্পূর্ণ হয় কোনও শিক্ষা।"
উদ্যোক্তা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ওয়াংচুক বলেন, "ব্যবসা মানুষের সমস্যা সমাধানের প্রকৃত তাগিদ থেকে উদ্ভূত হয়। সেই শর্ত পূরণ হলে কোনও বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন হয় না। কারণ আপনি প্রকৃত সমস্যার সমাধান করছেন। আপনার ব্যবসা যদি সহানুভূতির উপর ভিত্তি করে হয়, তাহলে এই ব্যবসাগুলোই হবে আসল শিক্ষার পরিণতি।"
সোনম ব্যাখ্যা করেছেন যে জীবনের তিনটি স্তম্ভ -- কৌতূহল, সহানুভূতি এবং উদ্যোগ নেওয়া -- এই তিনটি জিনিস আমাদের স্কুলে কখনও পড়ানো হয় না। উল্লেখ্য, লাদাখের সরকারি স্কুলে সংস্কার আনতে গত ৩০ বছর ধরে কাজ করছেন ওয়াংচুক। তাঁর দাবি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় ফাঁক রয়েছে। তিনি আরও বলেন "জনসংখ্যার মাত্র পাঁচ শতাংশ তাদের সন্তানদের যে স্কুলে দিয়েছেন যা আমেরিকার তুলনায় ভাল। কিন্তু আমাদের ৯৫ শতাংশ শিশু সাব-সাহারান আফ্রিকান স্কুলগুলির চেয়ে খারাপ স্কুলে পড়াশোনা করে"।