কলকাতার চিকিৎসক আহেল বন্দ্যোপাধ্যায় আটকে পড়েছিলেন হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরের মোরে শহরে। বলতে গেলে মণিপুরে ঘটে যাওয়া হিংসার মাত্রায় মোরে ছিল দ্বিতীয় স্থানে। জাতির হিংসার মাত্র ১ মাস আগে মোরে হাসপাতালে পোস্টেড হয়েছিলেন আহেল।
আহেল বন্দ্যোপাধ্যায়, মণিপুরে আটকে পড়া চিকিৎসক---- ইম্ফলের বীর তিকেন্দ্রজিৎ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে যখন বিমানটা আকাশে উড়ল তখন সন্ধে ঘনিয়ে এসেছে। তারিখ ৯ মে, ২০২৩। ঘড়ির কাঁটা সন্ধে ছটার ঘরটা পেরিয়ে গিয়েছে। আকাশ থেকে গোটা ইম্ফল শহরের আলো-আধারি চেহারাটা চোখের সামনে দৃশ্যমান। কিছু জায়গায় অনেকটা অঞ্চল জুড়ে অন্ধকার। মনে হয় ওই সব এলাকাও গত কয়েক দিন ধরে চলা হিংসায় বিধ্বস্ত, হয়তো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে অনেক কিছু। শুধুই কি প্রাণ! হয়তো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে কারও স্বপ্ন, কেউ হয়তো এই আতঙ্কের প্রহরকে স্মরণ করেই সারাটা জীবন বেঁচে থাকবে। প্লেনে করে আমার এখন গন্তব্য কলকাতা। সেখানে এতক্ষণে বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আমার বাবা-মা। গত কয়েক দিন ধরে তাঁদের উপর দিয়ে কম ঝড়-ঝাপটা যায়নি। মণিপুর হল বীরাঙ্গণাদের স্থান। মহাভারতেও যার উল্লেখ মেলে। অর্জুনের স্ত্রী চিত্রাঙ্গদাও এইখানকার কন্যে ছিলেন বলে কথিত। মহাভারতকে ছেড়ে যদি বর্তমান বাস্তবের মাটিতে পা রাখি তাহলে এই বীর মণিপুরেরই আর এক বীরাঙ্গণা শর্মিলা চানু। যে মাটিতে এত নারীর বীরগাথা, সেখানে আজ রক্তের বন্যা! সত্যিকারে আমার মতো শান্ত প্রকৃতির মেয়েকেও যে এমন এক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে তা এতদিন যাবৎ ঠাহরই করতে পারিনি।
ডাক্তারির প্রাথমিক পাঠ চুকিয়ে বছর খানেক আগে ভর্তি হয়েছিলাম ইম্ফলের রিমস-এ। মেডিক্যাল-এর পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন। এপ্রিল মাসে আমাকে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল ইম্ফলের মোরে হাসপাতালে। পাঠ্যক্রমের আওতায় এমন কিছু হ্যান্ড অন এক্সপেরিয়েন্স প্রোগ্রাম থাকে। আমাদের হাসপাতাল থেকেকিছুটা হাঁটলেই মায়ানমার বর্ডার। পাহাড়ের কিছুটা নিচেই মায়ানমার বাজার। ইম্ফলের রিমস ক্যাম্পাস থেকে মোরের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। কিন্তু তিনটে পাহাড় টপকে মোরে শহরে আসতে হয়, তাই রাস্তার সময়সীমা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লেগে যায়।
৩ মে। সবে কাজ সেরে সন্ধ্যায় মোরে হাসপাতালের কোয়ার্টারে ঢুকেছি। কোয়ার্টার বলতে একটা একতলা দেওয়ালের ঘর। মাথায় টিনের ছাউনি। প্রবল গরমে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়েছে ততদিনে। কোয়ার্টার থেকেই আশপাশের সমানে অনেকগুলো ধোঁয়ার কুণ্ডলি আকাশে উঠতে দেখেছিলাম। সেই সঙ্গে কিছু কিছু জায়গায় আকাশটা যেন লাল গনগনে আঁচের মতো চেহারা নিয়েছিল। আশপাশে কেন এত আগুন জ্বলছে তা বুঝতে পারিনি। আসল ঘটনা টের পেলাম ক্যান্টিনে খেতে গিয়ে। কারণ, ক্যান্টিনে ঢোকার আগেই রীতিমতো লোডশেডিং। লোডশেডিং আসলে মোরে শহরের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই লোডশেডিং-এর সঙ্গে সঙ্গে যেন আকাশ লাল করে জ্বলে ওঠা আগুন আর ধোঁয়ার কুণ্ডলীর যোগ মনের কোণেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। একটা হালকা আতঙ্কের অনুভূতি, চারপাশের থমথমে পরিবেশ যেন একটা কু ডাক দিচ্ছিল। তখন-ই ক্যান্টিনের এক কর্মীর কাছ থেকে জানতে পারলাম মণিপুর এই মুহূর্তে জাতি হিংসায় বিধ্বস্ত। সুপ্রিম কোর্টের রায় মণিপুরের স্থানীয় মেইতিদের তপশীল ও তপশিলী উপজাতির আওতা ভুক্ত করায় সম্মতি দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে কুকি সম্প্রদায়। ইম্ফল-সহ আরও কিছু স্থানে আবার মেইতিরা আক্রমণ করেছে কুকিদের। হিংসার সূত্রপাত্র চূড়াচাঁদপুরে। সেখান থেকে মোরে শহরে তার প্রভাব পড়েছে। এই জাতি হিংসায় নাকি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হওয়ার তালিকায় চূড়াচাঁদপুরের পরেই নাকি ছিল মোরে। ক্যান্টিন কর্মীর পরামর্শ মতো আধপেটা খেয়ে আমরা সকলেই সেই রাতে কোনওমতে ভয়ে ভয়ে কোয়ার্টারে ফিরি। আমাদের বলে দেওয়া হয়েছিল কোনওভাবেই যেন কোয়ার্টারে আলো না জ্বলে এবং সকলকে শান্ত ও চুপচাপ থাকতে বলা হয়েছিল। কারণ, হাসপাতালে ততক্ষণে খবর পৌঁছেছে যে সশস্ত্র কুকিরা ধেয়ে আসেছে হাসপাতালের দিকে। তাদের নিশানা হাসপাতালে কর্মরত মেইতিরা।
কোয়ার্টারে ফিরতেই হাসপাতালের চারপাশ যেন আরও লাল গনগনে আঁচের মতো হয়ে উঠেছিল। সেই সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা আর ধোঁয়ার কুণ্ডলি যেন অনন্ত হয়ে আকাশের দিকে ধাবমান। সেই সঙ্গে ক্রমাগত বিস্ফোরণের শব্দ ও গুলির আওয়াজ। জীবনে এত ভয় কোনওদিনই পায়নি। সমানে খেয়াল পড়ে যাচ্ছিল কলকাতায় থাকা বাবা-মা-র মুখটা। মোবাইল নেটওয়ার্কও কাটঅফ ছিল। ফলে সেই মুহূর্তে বাড়িতে কথা বলার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। আর কি বা বলব! এমন পরিস্থিতি শুনে বাবা-মার চিন্তা আরও বেড়ে যাবে। ঠিক করলাম যতটা পারা যায় স্বাভাবিক থেকেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করব।
সারাটা রাত বিছানার মধ্যে এপাশ-ওপাশ, সঙ্গে আতঙ্কে ভরা চোখ মুখে বিনিদ্র রজনীর ছাপ, রাতের অন্ধকার কাটিয়ে ভোরের আকাশটা আলোয় ভরতে একটু যেন বল পেলাম শরীরে। রাতেই শুনেছিলাম যে হাসপাতালে কর্মরত মেইতিদের বিভিন্ন স্থানে লুকোতে বলা হয়েছিল। সারারাত তাদের কেউ চৌকির নিচে, বা হাসপাতালের গলি-ঘুপচির মধ্যে কাঠ হয়ে পড়েছিল। সকালের আকাশে তখন আগুনের লেলিহান শিখা না থাকলেও বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলিকে উপরে উঠতে দেখা যাচ্ছিল। সারা রাত নাকি মোরে হাসপাতালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে লাশের ভিড় লেগেছিল। সেই সঙ্গে জখমদের সংখ্যাও ছিল মারাত্মকরকমের। একটা সময় হাসপাতাল থেকে আমাদের বলাও হয়েছিল যে প্রয়োজনে আমাদেরকেও এমার্জেন্সিতে আসা ক্ষত-বিক্ষত মানুষের চিকিৎসা করতে হবে। যদিও, তা করতে হয়নি সেদিন।
৪ মে। সকালের আলো ফোটার কিছু পরেই এদিক-সেদিক ফোন লাগাতে শুরু করেছিলাম। কথা বলি রিমসেও। কিন্তু পরিস্থিতি যে সকলেরই নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। জাতি হিংসার প্রতাপ এতটাই ভয়ঙ্কর মাত্রায় যে মণিপুর সরকারও প্রায় হাত তুলে নিয়েছে। নেমে পড়েছে সেনাবাহিনী ও আধা সেনা-র দল। এমনই এক সেনার একটা দল এসে মোরে হাসপাতালে আটকে থাকা সকলকে স্থানীয় থানায় নিয়ে গেল। হাসপাতাল যে কোনও মুহূর্তে হামলার শিকার হতে পারে তা সেনাবাহিনী থেকে পুলিশ সকলেরই কথা থেকেই বোধগম্য হচ্ছিল। কোয়ার্টার থেকে তেমন কিছু সঙ্গে নিয়ে আসতে পারিনি। কোনওমতে ল্যাপটপ আর ব্যাগপ্যাক, কাগজপত্রের ফাইল নিয়ে বেরিয়ে এসেছি। কিন্তু, মোরে শহরের মানুষের সুরক্ষা ছেড়ে হাসপাতালের অন্দরে থাকা এত মানুষের সুরক্ষা কীভাবে সুরক্ষিত করবে পুলিশ, একটা সময় সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। জানতে পারলাম মোরে শহরের বাইরে সেনাবাহিনীর একটা ক্যাম্প হয়েছে। সেখানে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তারা অবশ্য টেন্ট খাটিয়ে রয়েছে। আমরা টেন্ট পাবো কোথায়! জানতে পারলাম সেনাবাহিনীর ওই ক্যাম্পে একটা হাসপাতাল রয়েছে, আপাতত হিংসায় মৃত ও আহতদের সেখানেই নিয়ে যাওযা হচ্ছে। এদের চিকিৎসার জন্য প্রচুর ওষুধ দরকার এবং দরকার চিকিৎসাবিদ্যায় পারিদর্শীদের। সেই হাসপাতালেই ঠাঁই হল আমাদের। আমরা সকলে ঢুকে পড়েছিলাম সেনা ক্যাম্পে। মোরে হাসপাতাল থেকে সুপারভাইজার নিয়ে এলেন প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের বিশাল বিশাল প্যাকেট। মিলল আশ্রয়। সঙ্গে হাসপাতালে আগতদের দেখভাল ও চিকিৎসা। নিরাপত্তার খাতিরে তখন আমরা চিকিৎসক ও আমাদের সহযোগী নার্সরাও মেনে নিয়েছেন সবকিছু। থাকার জন্য মিলল একটা ঘর। প্রথমে ছয়, সেখান থেকে আস্তে আস্তে সেই ঘরে ঠাঁই হল ১২ জনের। কেউ ম্যাট্রেসে শুয়েছিল। আর যাদের তা জোটেনি, তারা খালি মেঝেতেই পড়েছিল কয়েক দিন ধরে। সকলের সুরক্ষা এবং তাঁদের দেখভালের প্রতি সেনাবাহিনীর জওয়ান থেকে শুরু করে উপর মহলের কর্তাদের নজরদারি দেখে সত্যি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এর আগে কোনও দিনই সেনাবাহিনীর লোকেদের এত কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। যেভাবে প্রতিটা মুহূর্তে তারা নিজেদের সুরক্ষার কথা ভুলে গিয়ে অন্যদের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন তাতে সত্যি তাদের কুর্ণিশ জানিয়েও ঋণ শোধ করা যায় না।
৭ মে। সেনা ক্যাম্পে থাকা অন্য রাজ্যের আমাদের সতীর্থরা একে একে তাদের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ফিরে যাচ্ছিল ইম্ফলে। আর সেখান থেকে বাড়ি। কিন্তু, মোরে সেনা ক্যাম্পে আটকে পড়েছিলাম পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমি, রাজস্থান এবং তামিলনাড়ু থেকে একজন একজন চিকিৎসক। এই দিন সকালে মেঘালয়ের আমার এক রুমমেটও রওনা দেয় বাড়ির উদ্দেশে। এবার যেন কিছুটা হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলাম। এই পরিস্থিতি থেকে কী করে উদ্ধার পাবো মাথায় আসছিল না। এই কয়দিন আতঙ্ক এবং কষ্ট কম হয়নি। কিন্তু চোখের জল ফেলিনি। মেঘালয়ের বন্ধুর বাড়ি ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পরিস্থিতিকে যেন গ্রহণ করতে পারছিলাম না। চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এসেছিল সেদিন। সেদিন আরও অসহায় লাগছিল যখন সেনাবাহিনীর লোকজন জানালো মোরে শহরে আর খাবার মজুত নেই। দোকান সব ফাঁকা। এবার হয়তো পাহাড়ের নিচ থেকে খাবারের মজুতভাণ্ডার না আসা পর্যন্ত একবেলা খেয়েই হয়তো দিন কাটাতে হবে। যদিও, বাস্তবে তা আর হয়নি। সেনাবাহিনীর লোকজন খুঁজে খুঁজে মোরে থেকে খাবার সংগ্রহ করেছিলেন ক্যাম্পে থাকা সাড়ে তিন হাজার মানুষের জন্য। এরমধ্যে সমানে খবর পাচ্ছি যে যারা যারা মোরে থেকে পাহাড়ের নিচে নামার চেষ্টা করেছে তাদের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, না হয় ভাঙচুর করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো আক্রান্তদের পরিণতি কি হয়েছে তার খবরও পাওয়া যায়নি। এমনকী, আহতদের নিয়ে যে অ্যাম্বুল্যান্স ইম্ফল যাওয়ার চেষ্টা করছিল তাতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ইতিমধ্যে বাবা-মা-কে প্রকৃত পরিস্থিতি জানাই। তারা তাঁদের দিক থেকেও আমাকে উদ্ধার করার জন্য চেষ্টার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। মোরে থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছিল না। ইন্টারনেট তারমধ্যে বন্ধ। কোনওভাবে মাঝে মাঝে মোবাইল টাওয়ার পেলে ফোন করছিলাম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও কয়েকটা হেল্পলাইন নম্বরও পেয়েছিলাম। কিন্তু কোনওভাবেই তাতে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। অবশেষে বাবা-মা-র কাতর আবেদনে বিভিন্ন মহল থেকে সাড়া মিলল। রবিবার বিকেল থেকে নানাভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন হল পশ্চিমবঙ্গের উদ্ধারকারী দলের। খোঁজ-খবর নিলেন সেনাবাহিনী ও আধা-সেনার একাধিক কর্তা ব্যক্তিত্ব। জানতে পারলাম ৮ তারিখ আমাকে মোরে সেনা ক্যাম্প থেকে ইম্ফলে নিয়ে আসা হবে সেনা এসকর্ট দিয়ে।
৮ তারিখ সকাল থেকে বসে থেকে থেকে ক্লান্ত। দুপুর ততক্ষণে ১২টার কাঁটা পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, উদ্ধারকারী দলের দেখা নেই। হতাশায়, মনকষ্ঠে এক নিদারুণ যন্ত্রণা নিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। এবার সত্যি সত্যি মনটা খারাপ করছিল কলকাতার বাড়ির জন্য। আচমকাই খেয়াল পড়ে গেল সেনাবাহিনীর এক কর্ণেলের কথা। তিনিও ফোন করেছিলেন ৭ তারিখে। তাঁকে ফোন করতেই তিনি নির্দেশ দিলেন অবিলম্বে একটা গাড়ি জোগাড় করে তৈরি থাকতে। ক্যাম্প থেকে যতজন ইম্ফলে পৌঁছতে চায় তাদের সকলকে তিনি সেনাবাহিনী দিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দিলেন। আমাদের এক ভিনরাজ্যের বন্ধুর গাড়িও ছিল সেনাবাহিনীর হেফাজতে। কোনওমতে তাতে পারমিশন নিয়ে আমরা চেপে বসলাম সেই গাড়িতে। এছাড়াও আরও কিছু জন অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে বসল। অবশেষে বিকেল ৪টা নাগাদ এল সেনাবাহিনীর এসকর্ট। শুরু হল এবার মুক্তির যাত্রা।
যত এগোচ্ছি ততই হিংসার করাল গ্রাসটা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। চারিদিকে আগুনে ঝলসে যাওয়া কঙ্কালসার সব দোকান, কোথাও কোথাও তো আবার মাটিতে মিশে গিয়েছে সবকিছু। জায়গায় জায়গায় মানুষ অসহায়ের মতো কয়েকটা পুটলি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অথবা বসে রয়েছে। এরাও আসলে এক নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। এদের চোখে মুখে এক্কেবারে দিশেহারা ভাব। সঙ্গে বাচ্চা-কাচ্চা। কী হবে এদের কে জানে! (ক্রমশ---- পর্ব ২-এর জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন)
'জাত্যাভিমানের সংঘর্ষে কীভাবে ধ্বংস হল প্রাণ, পুড়ল ঘরবাড়ি', মণিপুরের ভয়ঙ্কর সেই ৭ দিন-- পর্ব-২