শাহী ইদগা মসজিদের ট্রাস্টের পক্ষে প্রধান আইনজীবী তাসিনীম আহমাদি তাঁর যুক্তিতে বলেছেন, কমিশন নিয়োগের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের আদেশটি ভুল ছিল।
কৃষ্ণ জন্মভূমি বিতর্কে আপাতত দাঁড়ি টানতে উদ্যোগ নিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। উত্তর প্রদেশের মথুরায় কৃষ্ণ জন্মভূমি- শাহী ইদগা কমপ্লেক্সে একটি একটি সমীক্ষা চালানোর আর্জি নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল একটি মামলা। এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৪ ডিসেম্বর কমিশন নিয়োগের অনুমতির আদেশ দিয়েছিল। হাইকোর্ট কমিশন নিয়োগ ও জরিপের রূপরেখা নির্ধারণ করার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেই আদেশ কার্যকর করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে মথুরার শাহী ইদগায় সমীক্ষার দাবি জানিয়ে হিন্দু পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছিল তা অস্পষ্ট। সেই কারণেই এই আদেশ জারি করা হয়েছে। শুনানির সময় বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, 'এটি ভুল, আপনি কমিশন কিসের জন্য চান সেই বিষয়টা আপনাকে স্পষ্ট করতে হবে। আপনি একটি সর্বজনীন আবেদন করতে পারেন না।'
শাহী ইদগা মসজিদের ট্রাস্টের পক্ষে প্রধান আইনজীবী তাসিনীম আহমাদি তাঁর যুক্তিতে বলেছেন, কমিশন নিয়োগের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের আদেশটি ভুল ছিল। আহমাদি আরও বলেছেন, অর্ডার ৭ বিধিন ১১ র অধীনে রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি ইতিমধ্যেই আদালতের বিচারাধীন। প্রধান আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতির রায়ের ওপর ভিত্তি করে বলেন, রক্ষণাবেক্ষণ যোগ্যতা ও এখতিয়ারের প্রাথমিক ইস্যুটি প্রথমে সিদ্ধান্ত না নিলে অন্তর্বর্তীকালীন ছাড় দেওয়া যাবে না। বিচারপতি খান্নার পর্যবেক্ষণ ছিল 'এখানে আইনি সমস্যা রয়েছে। আদেশ ৬ বিধি ১১ আবেদন মুলতবি অস্পষ্ট। এটি কি এভাবে করা যেতে পারে। তৃতীয় সমস্যাটি হল স্থানান্তরের বিষয়টি বিচারাধীন এই আদালতের।'
এদিন সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্টে এই নিয়ে যে যে বিষয়ে শুনানি চলছে তা চালাতে শীর্য আদালত কোনও বাধা দিচ্ছে না। আদালতের পক্ষ থেরে বলা হয়েছে, 'আমরা সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ জারি করছি না।' আদালত বলেছে শুধুমাত্র সমীক্ষার ওপরই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
শীর্ষ আদালত আপাতত মসজিদ ট্রাস্টের দায়ের করা আবেদনের জবাব দেওয়ার জন্য হিন্দু ভক্তদের একটি নোটিশ জারি করেছে। এটির শুনানি হবে ২৩ জানুয়ারি। ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে টেম্পল ট্রাস্ট ও মসজিদ ট্রাস্টের মধ্যে নিষ্পত্তি চুক্তিকে বহার রেখে হিন্দু ভক্তদের আবেদনগুলি রক্ষণাবেক্ষণ যোগ্য নয় বলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে। মসজিদ কমিটি আরও যুক্তি দিয়েছে যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের দাবির পক্ষে কোন যোগ্য প্রমাণ আনেননি যে কৃষ্ণের জন্ম যেখানে "জেল সেল" ছিল সেটি বিদ্যমান ইদগাহ মসজিদের অধীনে ছিল। এটি যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে দাবির "প্রমাণ খুঁজে বের করার জন্য" একটি সমীক্ষা অনুশীলন করা যাবে না, যা ১৯৯১ আইন এবং নিষ্পত্তি চুক্তি দ্বারা নিষিদ্ধ। মথুরার ইদগা কমপ্লেক্স নিয়ে এলাহাবাদ হাইরকোর্টে এক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। হিন্দুদের দাবি মসজিদটি মুঘর সম্রাট ওরঙ্গজের তৈরি করেছিলেন। ভগবান কৃষ্ণের জন্মস্থানের ১৩য়৩৭ একর জমিতে একটি সমজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল।