দেশে করোনা পরিস্থিতি ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে। সংক্রমণ আটকাতে ২ মাসের বেশি লকডাউন করে রাখা হয়েছিল দেশকে। ফলে বন্ধ ছিল অর্থনৈতিক কাজকর্ম। ধীরে ধীরে দেশ আনলক হতে শুরু করলেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছয়নি। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা এনআর নারায়ণমূর্তি দেশের জিডিপি প্রশ্নে উদ্বেগের কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি সর্বনিম্ন হতে পারে।" আর ভারতীয় এই উদ্যোগপতির আশঙ্কাকে হাতিয়ার করে এবার আসরে নেমেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
দেশের আর্থিক ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরই আক্রমণাত্মক কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। করোনা পরিস্থিতি হোক, বা ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা, সব বিষয়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব হতে দেখা গেছে সোনিয়া তনয়কে। লকডাউন থেকে পরিযায়ী শ্রমিক সব বিষয়েই সুর চড়িয়েছেন তিনি। বুধবারও সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি স্লোগান দিয়েছিল, ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।’ অর্থাৎ মোদী থাকলে সবই সম্ভব। সেই স্লোগান নিয়েই এদিন কটাক্ষ করেছেন রাহুল। নারায়ণমূর্তির সেই আশঙ্কার প্রসঙ্গ টেনেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাহুল। জিডিপি নিয়ে নারায়ণমূর্তির সেই আশঙ্কার প্রসঙ্গ টেনেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাই করে রাহুল ট্যুইট করেন “মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায় ।”
সোমবার ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তি মন্তব্য করেন, অর্থনীতিকে যে করেই হোক আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ভাইরাসের সঙ্গেই বাঁচতে হবে মানুষকে। ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা লেখেন, “ভারতের জিডিপি কমপক্ষে পাঁচ শতাংশ কমবে। ১৯৪৭ সালের পরে হয়তো সবচেয়ে কম জাতীয় উৎপাদন হবে এই বছরে।” এরপরে নারায়ণমূর্তি লিখেছেন, “বিশ্ব জুড়ে জিডিপি-ও কমেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমেছে যথেষ্ট পরিমাণে। পর্যটন প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক জিডিপি সম্ভবত পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ কমতে চলেছে।” এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থব্যবস্থা সঠিক দিশায় নিয়ে আসা উচিত বলেও জানান নারায়ণমূর্তি। এমন একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপরও জোর দিতে বলেন যেখানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রের প্রতিটি ব্যবসায়ী পূর্ণ ক্ষমতার সঙ্গে কাজ করার অনুমতি পায়।
এদিকে অগাস্টের শুরুতেও দেশের অর্থনীতির হাল নিয়ে মোদীর সমালোচনা করেছিলেন রাহুল। তিনি ট্যুইট করেন, “দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে যে যোগ্যতা দরকার তা মোদী বা তাঁর টিমের কারও নেই।” দেশে করোনার সংক্রমণ যে দিন ২০ লক্ষ পেরোল, সে দিনও মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ’২০ লক্ষ ছাড়াল সংক্রমণ, মোদী সরকার কোথায়!’ দেশের অর্থব্যবস্থাকে সামাল দেওয়ার মতো ক্ষমতা মোদী সরকারের নেই বলেও কটাক্ষ করেছিলেন তিনি।
এদিকে বুধবারই অবশ্য জানা গিয়েছে, কোভিড ১৯ অতিমহামারীর ধাক্কায় বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় প্রকল্পের কথা ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সম্ভবত ১৩ অগাস্ট মোদী নতুন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করবেন। ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’-এর অংশ হিসাবেই নতুন অর্থনৈতিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করা হবে।