তদন্তকারীদের দাবি সেতু সংস্কারে বরাদ্দ ২ কোটি টাকার মাত্র ১২ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের আরও দাবি, যে সংস্থাকে ঠিকা দেওয়া হয়েছিল তাদেরও সেতুর প্রযুক্তিগত বিষয়ে সে ভাবে জ্ঞান নেই।
মোরবী সেতু বিপর্যয় প্রথম থেকেই কাঠগরায় সেতু সংস্কারকারী সংস্থা ওরেভা। একটি ঘরি প্রস্তুতকারী সংস্থাকে কেন সেতু সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই বিষয় প্রশ্ন তুলে আগেই সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। এবার আর্থিক তছরূপের অভিযোগও উঠল এই সংস্থার বিরুদ্ধে। তদন্তকারীদের দাবি, মোট বরাদ্দ টাকার মাত্র সামান্য কিছু অংশই খরচ করা হয়েছে। এমন কি সেতু মজবুত করার বদলে তা কেবল রং করা হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে কি মাচ্ছু নদীর উপর সেতু বিপর্যয়ের মূল কারণ সংস্কারে গাফিলতিই?
সূত্রের খবর, একটি ঘরি প্রস্তুতকারী সংস্থা ওরেভার সঙ্গে মোরবীর শতাব্দীপ্রাচীন এই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ বছরের চুক্তি করা হয়। চুক্তিমতই এগোয় সেতু মেরামতের কাজ। দীর্ঘ রক্ষণাবেক্ষণের পর ২৪ অক্টোবর ওরেভার চেয়ারম্যান জয়সুখ পটেল জানান, সেতুটির সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই ব্রিজ। এই ঘটনার তিন দিনের মাথায়ই ভেঙ্গে পড়ে ব্রিটিশ আমলের এই সেতু। মৃত্যু হয় কমপক্ষে ১৩০ জনের, আহত শতাধিক।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এবার তদন্ত সূত্রেই উঠে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি সেতু সংস্কারে বরাদ্দ ২ কোটি টাকার মাত্র ১২ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের আরও দাবি, যে সংস্থাকে ঠিকা দেওয়া হয়েছিল তাদেরও সেতুর প্রযুক্তিগত বিষয়ে সে ভাবে জ্ঞান নেই। তাঁরা আরও দাবি করেন, মজবুত করার বদলে কেবল রং করা হয়েছিল সেতুটি।
রবিবার সন্ধ্যায় প্রায় ৫০০ জন পর্যটক-সহ গুজরাটের মাচু নদীর উপর ভেঙে পড়ল ঝুলন্ত সেতু। ঘটনায় সলিল সমাধি কমপক্ষে ৯০ জনের। নিখোঁজ শতাধিক। ক্রমেই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। উল্লেখ্য,মেরামতির জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এই সেতু। দীর্ঘ রক্ষণাবেক্ষণের পর গত ২৬ অক্টোবর সেতুটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র তিনদিনের মাথায়ই ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে একটি টুইট করেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল। টুইটে তিনি লিখেছে। এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত এবং আহতদের চিকিৎসা এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে গতি আনতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার পরই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল টুইট করে জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে গতি আনার পাশাপাশি একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য এবং পরিস্থিতির দিকে সজাগ নজর রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যেরও ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন -