মঙ্গলবার সংসদ ভবনে এনআরসি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বুধবার তারই জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যসভায় জবাবী ভাষণে বলেন, 'এনআরসি নিয়ে আমি কথা বলতে চাই। এনআরসি আমাদের মস্তিষ্করপ্রসূত নয়। রাজীব গান্ধী প্রথম এনআরসির কথা বলে। অ্যাকর্ডটি রাজীব গান্ধীর মস্তিষ্ক প্রসূত। আর আমরা সুপ্রিম কোর্টের কথা অনুযায়ী এনআরসি লাগু করছি। এখানে কোনও রাজনীতি নেই, ভোটব্যাঙ্ক নেই।'
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এনআরসি নিয়ে মঙ্গলবার প্রখ্যাত হিন্দি কবি-র শায়েরির অবতারণা করেছিলেন। বলতে গেলে, নবীনতম সাংসদ যে ভাবে লোকসভা নির্বাচনের পরে প্রথম অধিবেশনের কয়েক দিনেই নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানিয়েছেন তা অবাক করেছে রাজনৈতিক মহলকে। মহুয়া তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের স্নাতকের সার্টিফিকেট দিতে পারে না। আর তাঁরা ৫০ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা মানুষকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছে। আসলে সাংসদ মহুয়া মৈত্র-র নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি নিয়ে প্রবল বিরোধিতা করে আসছেন। বারবার এই ইস্যুতে মোদী সরকার থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ-দেরও আক্রমণ শানাতে ছাড়েননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা ভোটেও এনআরসি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। এমনকী, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও এনআরসি বিরোধিতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম এজেন্ডা ছিল।
আরও পড়ুনঃ এনআরসি নিয়ে ঝড় তুলেছিলেন মহুয়া, ১২ ঘণ্টায় বাদ গেল লক্ষাধিক বাঙালি মুসলমানের নাম
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন রাজ্যসভায় এনআরসি-নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে তিনি কৌশলে কংগ্রেসের ঘাড়েও দায় চাপিয়েছেন। ১৯৮৫ সালে অসম অ্য়াকর্ডের ভিত্তিতেই এনআরসি-র অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর এতে যে রাজীব গান্ধী সই করেছিলেন তা এদিন রাজ্যসভায় ফের একবার স্মরণ করিয়ে দেন মোদী। তাঁর মতে, তিনি রাজীব গান্ধীর সই করা চুক্তিকে বাস্তবায়িত করছেন। এতে যা হবে তার দায়ভার যেমন মোদীর উপরে বর্তাবে তেমনি কংগ্রেসের উপরেও যাবে।
বলাই বাহুল্য ১৯৭১ এর ২৪ আগস্টের পর থেকে বসবাসকারী দেড় কোটি মানুষের ভবিষ্যতকে কার্যত অনিশ্চিত করে দিয়েছে নাগরিকপঞ্জির বিধি। এদিনই নতুন করে লক্ষাধিক ভোটারের নাম নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সবমিলিয়ে নাগরিক পঞ্জি-তে অসমের তিরিশ লক্ষাধিক মানুষের নাম নেই বলেও দাবি করা হচ্ছে। গতবছর নাগরিক পঞ্জি-র খসড়া তালিকা প্রকাশ করার সময় এই সংখ্যাটা ৪২ লক্ষ ছিল। এই জুনে অসমের নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা থাকলেও তা ৩১ জুলাই-এ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।