আনন্দ মোহন এক সময়ে বিহার পিপলস পার্টি প্রতিষ্ঠা করে ক্ষত্রিয় রাজনীতির পুরো ব্যবস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বিহারের রাজনীতিতে রাজপুতদের মধ্যে তা এখনও কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। তিনি কতটা কার্যকর তা ২০২৪-২৫ লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচনে জানা যাবে।
বিহারের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে পেশিপ্রধানরা। এরই মধ্যে, বিহারের বাহুবলী নেতা আনন্দ মোহনের মুক্তির বিষয়টি পাটনা হাইকোর্টে পৌঁছেছে। প্রাক্তন সাংসদ আনন্দ মোহনের মুক্তি সংক্রান্ত আইনে সংশোধনীর বিরুদ্ধে পিআইএল দায়েরকারী অ্যাডভোকেট অলকা ভার্মা বলেন, এর উদ্দেশ্য কী? এ ধরনের কোনো সংশোধনী জনস্বার্থে হওয়া উচিত, তা জনস্বার্থে নয়, এটি একটি স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ। এই সংশোধনী স্বেচ্ছাচারী এবং এটি অন্যায্য। একই সঙ্গে নীতীশ কুমারের ওপর ক্ষুব্ধ এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও। তিনি বলেন, নীতিশ কুমার বিরোধী ঐক্যের নামে সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী দাবি করছেন। আপনি ২০২৪ সালে দলিত সম্প্রদায়কে বলবেন যে একজন দলিত অফিসারকে হত্যাকারীকে আপনি মুক্তি দিয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে, আনন্দ মোহন এক সময়ে বিহার পিপলস পার্টি প্রতিষ্ঠা করে ক্ষত্রিয় রাজনীতির পুরো ব্যবস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বিহারের রাজনীতিতে রাজপুতদের মধ্যে তা এখনও কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। তিনি কতটা কার্যকর তা ২০২৪-২৫ লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচনে জানা যাবে। তিনি কার সঙ্গে থাকেন, সেটাও অনেকাংশে নির্ভর করবে। তা ছাড়া, এটাও বড় কথা যে ১৯৯৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে এই বিহার ছিল না। তখনকার এবং এখনকার তরুণদের মেজাজের মধ্যে বিস্তর ফারাক। রাজনৈতিকভাবে উর্বর বিহারে রাজপুতদের ভোটের দোলাচলে আনন্দ মোহন কতদূর পারবেন, সেটা সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আনন্দ মোহনের সঙ্গে মোট ২৭ জনকে ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ২৬ জনকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং আনন্দ মোহনের আগে অনেককে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রযুক্তিগত কারণে কিছু এখনও মুক্তি পায়নি বা তাদের মুক্তিতে সময় লাগতে পারে। যতদূর জাতিগত সমীকরণ সম্পর্কিত, এই ২৭ জনের মধ্যে ৮টি যাদব, পাঁচ জন মুসলিম, চারজন রাজপুত, তিনজন ভূমিহার, দুই জন কোয়েরি, একটি কুর্মি, একটি গঙ্গোতা এবং একটি নোনিয়া জাতি। জাতি শুমারি প্রক্রিয়ার মাঝে তাদের জাত নিয়েও আলোচনা সরগরম, তবুও অনেক চেষ্টা করেও জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ২ জনের জাত নির্ণয় করা যায়নি।
আনন্দ মোহন কোন মামলায় সাজা ভোগ করেন?
গোপালগঞ্জের তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জি কৃষ্ণাইয়াকে খুন করেছিলেন আনন্দ মোহন। ১৯৯৪ সালে মুজাফফরপুরে এক গ্যাংস্টারের শেষকৃত্যের সময় আইএএস অফিসার কৃষ্ণাইয়া নিহত হন। আনন্দ মোহন এখন নিজের বাড়িতে যাচ্ছেন। কৃষ্ণাইয়া হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গত ১৫ বছর ধরে তিনি জেলে ছিলেন।