শুধু হিন্দুরা নয়, রাম মন্দির নির্মাণে মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সমাজের সব সম্প্রদায়ের সব ধর্মের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত। অযোধ্যা মামলার রায় বের হওয়ার দিন কয়েক আগে এমনটাই মত কামেশ্বর চৌপল-এর। বাবরি মসজিদ ভাঙারও তিন বছর আগে ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দিরর নির্মাণের জন্য ভিত্তি-প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন এই দলিত সম্প্রদায়ের মানুষটিই। ৬৩ বছর বয়সে এসেও রামমন্দির নিয়ে তাঁর আবেগ অনুভূতি একটুও বদলায়নি। বলছেন, সমাজের সব সম্প্রদায়ের মানুষ এক হয়ে রামমন্দির নির্মাণ করলে বিশ্বজুড়ে বার্তা যাবে, ভারতে সমস্ত সম্প্রদায় এবং সব ধর্মের প্রতি সমান আচরণ করা হয় এবং ভারতীয়রা একে অপরের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করে।
কামেশ্বর চৌপল-এর সাফ কথা রামই এই দেশের বাস্তবতা এবং রামই এই দেশের সারমর্ম। তিনি আরও বলেছেন রামমন্দিরের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য অন্য পথও অনুসরণ করা যেত। কিন্তু ভারতের বিচার বিভাগ, ভারতীয় গণতন্ত্র এবং সংবিধানের প্রতি বিশ্বাস ছিল বলেই এতদিন অপেক্ষা করেছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত যে রাম মন্দির হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তা যে শুধু বিজেপি সরকারে থাকাতেই হয়েছে, তা মানতে রাজি নন কামেশ্বর। তাঁর মতে কংগ্রেস সরকার রাম মন্দিরের পক্ষেই কাজ করেছিল। তিনি জানিয়েছেন পিভি নরসিংহ রাও-এর নেতৃত্বাধীন সরকার শিলান্যাসগুলি করেছিলেন, রাজীব গান্ধী তালা খুলেয়েছিলেন। তবে তাঁর মতে এই বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দলই রাজনীতি করেছে। তা না হলে অনেক আগেই রাম মন্দির তৈরি হত। বিষয়টি ভোট-ব্যাঙ্ক রাজনীতিতে এসে পড়ায় সাধারণ মানুষ এই ইস্যুতে চূড়ান্ত অবস্থান নিয়েছিল। এই জন্যই রামের সত্যে তাঁরা পৌঁছতে পারেনি।
কামেশ্বরদের সময়ে রামমন্দির নিয়ে হইচই উঠলেও নতুন প্রজন্মের অনেকেরই রাম মন্দিরের রায় নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই। একটা অংশ বলছে মন্দির নয়, তাদের চাকরি দরকার। কামেশ্বর চৌপল এই বিতর্কে ইতি টেনে বলছেন রাম আর রুটি, এইদেশে দুটোই চাই। রাম থাকলে তবেই রুটি জুটবে। এই বক্তব্য ব্যাখ্যাও করেছেন তিনি। জানান, বছরের পর বছর ভারত দাসত্বে ডুবে ছিল। তারমধ্য়েই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বন্দে মাতরম-এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তখনও ভারত মাতাকে দেখা না গেলেও তার অনুভূতি উস্কে উঠেছিল সেই ডাকে। রাম মন্দিকরও বন্দে মাতরম-এর মতোই প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্বাস কামেশ্বরের।