লাশের স্কুলে আর যাব না, ১৯ জুন বাহানাগা স্কুল খোলার আগেই বেঁকে বসল পড়ুয়া আর শিক্ষকরা

অস্থায়ী মর্গ বাহানাগা স্কুল। জড়ো করা হয়েছিল ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের দেহ আর দেহাংশ। তাই নিয়ে বিপত্তি ওড়িশা শিক্ষা দফতরের

 

Web Desk - ANB | Published : Jun 8, 2023 5:51 PM IST / Updated: Jun 09 2023, 07:42 AM IST

 

ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার পর বাহানগা স্কুলেই তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী মর্গ। কারণ এই এলাকা ছিল শহর থেকে অনেকটা দূরে। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে মৃত্যুপুরীর আকার নিয়েছিল গোটা এলাকা। আর সেই কারণে দ্রুত শহরের কোনও মর্গে মৃতদেরগুলি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা না করে বাহানগা স্কুলে অস্থায়ী মর্গ তৈরি করে সেখানেই জড়ো করা হয়েছিল দুর্ঘটনায় নিহতদের দেহ। কিন্তু এখন সেই বাহানগা স্কুল নিয়ে তৈরি হয়েছিল সমস্যা। কারণ পড়ুয়া থেকে শিক্ষক কেউ আর সেই স্কুলে যেতে রাজি নয়।

আগামী ১৯ জুন এই বাহানগা স্কুল খোলার কথা। কিন্তু তার আগেই স্থানীয়দের মুখে মুখে ছড়িয়ে গেছে স্কুলের ভয়ঙ্কর অবস্থার কথা। কারণ দুর্ঘটনাস্থল থেকে লরি বা ট্রাকে করে সেখানেই মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে জড়ো করা হয়েছিল। সেখানেই তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী মর্গ। বর্তমানে সব দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভূবণেস্বর এইমস-এ। সেখানেই রাখা হয়েছে দেহ।

কিন্তু এই ঘটনার পর আর স্কুলে যেতে চাইছে না শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। এই অবস্থায় চরম সংকটে ওড়িশার শিক্ষা দফতর। কারণ স্থানীয়দের দাবি বাহানগা স্কুল ভেঙে ফেলে নতুন বিল্ডিং তৈরি করতে হবে। স্কুল লাগোয়া যাদের বাড়ি তারাও স্কুলের অবস্থা দেখে রীতিমত মর্মাহত। এই অবস্থায় স্কুলেরই এক শিক্ষক জানিয়েছেন তিনি আর এই স্কুলে পা দেবেন না। এখনও স্কুলের মেঝেতে লেগে রয়েছে রক্তের দাগ। একাধিক ঘরে পড়ে রয়েছে দুর্ঘটনায় নিহতদের পচা-গলা দেহাংশ। গোটা পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই অবস্থায় ওই স্কুলে আর যাবেন না বলেও জানিয়েছেন।

ওড়িশার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস-যশবন্তপুর এক্সপ্রেস-মালগাড়ি তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ল। সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে। ২৭৮ জনের। কারণ আহতদের মধ্যে তিন জন মঙ্গলবার মারাগেছে। তবে এখনও পর্যন্ত ১০১ জনের মৃতদের সনাক্ত করা যায়নি। মৃতদেহগুলি পড়ে রয়েছে ওড়িশার মর্গে। এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছে ট্রেনে কাটাপড়া বা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া দেহগুলি বেশি দিন সরক্ষণ করা যাবে না। তাই দেহগুলি যাতে দ্রুত সনাক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয় তারও আর্জি জানিয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে ১২৪৮ এর আপ মেইন লাইনের সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। টেকঅফ করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি একটি লুপ লাইনে প্রবেশ করে। আপ লুপ লাইনে আগে থেকেই মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেটিকে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ১২৮৬ ডাউন অর্থাৎ যশবন্তপুর এক্সপ্রেস মেইন লাইনে চলে আসে। করমণ্ডলের দুটি লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা মেরে সেটির পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। রিপোর্টে বলা হয়ে মালগা়ড়ির সঙ্গে ধাক্কায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি কারমা লাইনচ্যুত হয়। কারমাগুলি যে ট্র্যাকে পড়েছিল সেখান দিয়েই যায় যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। তাতেই দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার নেয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার। আর যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের গতি ছিল ১১৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট রেলওয়ে বোর্ডের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

Share this article
click me!