চিকিৎসার অর্থ নেই, ১ বছরের শিশুকে মেরে ফেলতে চেয়ে আদালতে বাবা-মা

  • দীর্ঘায়ু নয়, সন্তানের মৃত্যু চাইছেন বাবা-মা
  • আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা 
  • সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তাঁরা 
  • মত, সন্তানের জন্য ক্ষমা-মৃত্যু একমাত্র পথ

debojyoti AN | Published : Oct 11, 2019 2:24 PM IST

আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। শুধু বাঙালি নয়, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের বাবা-মা এটাই প্রার্থনা করেন যুগ-যুগ ধরে। কতটা অসহায় হলে, কোনও বাবা-মা তাঁর সন্তানের মৃত্যু চাইতে পারে! শুধুমাত্র সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে জেলা আদালতের কাছে এক বছরের শিশুর ক্ষমা মৃত্যু চাইলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক বাবা-মা। 

অন্ধ্রপ্রদেশের দম্পতি বাবাজান আর শাবিরের এক বছরের সন্তান ডাইন সিন্ড্রোমের রোগী। এছাড়াও শিশুটির মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। জন্মের পর থেকে এখনও পর্যন্ত শিশুটি লাইফসাপোর্টের সাহায্যে বেঁচে রয়েছে। সন্তানের চিকিৎসা করতে গিয়ে বসত বাড়ি টুকুও ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। মনে আশা ছিল, ঘটি-বাটি যাক, সন্তান তো থাকল। সে সুস্থ হয়ে উঠুক। কিন্তু সমস্ত সম্বল শেষ হয়ে গেলেও সন্তানের সেরে ওঠার কোনও ভরসা চিকিৎসকরা দিতে পারছেন না। এক বছরে সন্তানের শারীরিক কোনও উন্নতিও হয়নি। বিনা চিকিৎসায় ছেলেকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখার মতো শক্তি তাঁদের নেই। বাধ্য হয়েই তাই অন্ধ্রের মাদানপালের শহরের এই দম্পতি একটি ফ্যামিলি কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। 

'ইউথানাশিয়া' বা স্বেচ্ছামৃত্যু এখনও এই দেশে বৈধ নয়। তবে পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু-র অনুমোদন ক্ষেত্র বিশেষে দেওয়া হয়ে থাকে। এর জন্য এক কঠোর নির্দেশিকা পালনও করতে হয় আবেদনকারীকে। বিশেষ করে পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু-তে রোগীকে আগেভাগে একটি 'লিভিং উইল' করে রাখতে হয়, যাতে উল্লেখ থাকতে হয় যে কোনওভাবে কোমা থেকে ফেরার সম্ভাবনা না থাকলে বা টার্মিনাল ইলনেস হলে তাকে যেন পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর সুযোগ দেওয়া হয়। একজনের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকারের আওতায় এই পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। সরাসরি স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার এখন পর্যন্ত আইন করে বলবৎ করেছে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, কলম্বিয়া ও লুকেস্মবার্গ। এমনকী আত্মহত্যা-কে অধিকার বলে স্বীকার করে নিয়েছে সুইৎজারল্যান্ড, জার্মানি, জাপান, কানাডা এবং আমেরিকার নির্দিষ্ট কিছু প্রদেশ। অন্ধ্রপ্রদেশের ১ বছরের শিশুর স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে কিছু আইনি জটিলতা অবশ্যই আছে। এখন দেখার বাবা-মা-এর অসহায়তার কথা ভেবে কোন পদক্ষেপ নেয় আদালত। 

Share this article
click me!