
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করার লক্ষ্য নিল কেরলে বাম সরকার। সেই রাজ্যের নয়া সংশোধনী বিলের উদ্যোগ অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাজনীতিকরা বলছেন, তাহলে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই হাঁটতে চলেছেন পিনারাই বিজয়ন।
বাংলায় রাজ্যপাল থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মমতার নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়। উপাচার্য নিয়োগ সহ শিক্ষা ক্ষেত্রের নানা বিষয় ঘিরে কেরলের অবস্থা এখন আরও দোলাচলে। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে বিজয়ন সরকারের সংঘাত আরও তীব্র। কালিকট, কান্নুর ও সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সরকারের পছন্দের নামগুলি নিয়ে ঘোর আপত্তি রাজ্যপাল আরিফ খানের। কখনও তিনি অধ্যাপক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের সিদ্ধান্ত আটকে দিয়েছেন, কখনও আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির নাম ছাড়াই উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি ঘোষণা করে দিয়েছেন!
ঠিক যে ভাবে বাংলার আইন সংশোধন করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সরকারের পছন্দের বাইরে গিয়ে রাজ্যপাল তথা রাজ্যের আচার্য কাউকে উপাচার্য হিসেবে মনোনীত করতে পারবেন না, এমন একটি গণ্ডি কেটে দেওয়া হয়েছিল এবং তারপর রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকেই সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসাতে বিল পাশ হয়ে গেছে বঙ্গের বিধানসভায়। সেই একইভাবে রাজ্যের আইন সংশোধন করে এ বার আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের ক্ষমতা ছেঁটে দিতে চাইছে কেরল সরকারও।
কেরলের বিধানসভায় এখনও পেশ করা হয়নি প্রস্তাবিত সংশোধনী বিলটি। তবে, রাজ্য মন্ত্রিসভায় আলোচনা করে বিলের খসড়া তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে এ বার থেকে ৩ জনের পরিবর্তে ৫ জনের থাকার সংস্থান হবে। রাজ্যপাল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউজিসি-র প্রতিনিধি ছাড়াও আরও ২ জন থাকবেন সেই সার্চ কমিটিতে।
এমন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এ রাজ্যে তৃণমূল এবং কেরলে বাম সরকারের বক্তব্যও কার্যত একই রকম। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী আর.বিন্দুর মতে, ‘‘এটা সরকারি নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন নয়। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষায় সংস্কার আনার লক্ষ্যে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সার্চ কমিটিতে ৩ জন প্রতিনিধির সঙ্গে শিক্ষা জগতের আরও ২ জনকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তাবটিই বিবেচনা করা হচ্ছে।’’ রাজ্যপাল আরিফ খানও হাল ছাড়তে রাজি নন। তিনি বলে দিয়েছেন, ‘‘নিয়মের বাইরে কিছু হতে দেব না। কোন বিল সই করব, রাজ্যপাল হিসেবে সেটাও বিবেচনা করব!’’
আরও পড়ুন-
কেরলে বৃষ্টি আর ভূমিধসে বাড়ছে মৃত্যু, প্রধানমন্ত্রী মোদী কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে
ডিজিটাল লেনদেন পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, ঘোষণা করল অর্থ মন্ত্রক
শুভেন্দুর এলাকায় তৃণমূলের জয়জয়কার, সমবায় ভোটে খাতাই খুলতে পারল না বিজেপি