শেষপর্যন্ত জামিন পেলেন ২৩ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা সাফুর জারগার। গত ফেব্রুয়ারি দিল্লি হিংসা সম্পর্কিত একটি মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার .করা হয়েছিল জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাফুরাকে। অন্তঃস্বত্ত্বা ছাত্রীটিকে জামিন দিল দিল্লি হাইকোর্ট। সাফুরা জারগরের মুক্তি বিষয়ে পুলিশ ‘মানবিক কারণে' বিরোধিতা না করার পরে মঙ্গলবার হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালীন গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে যে দাঙ্গা হয়েছিল তা নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ড (প্রতিরোধ) আইনে ১০ এপ্রিল সাফুরা জারগরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য জামিনও পেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু মুক্তির পরেই আরও গুরুতর অভিযোগ এনে ফের সাফুরাকে জেলে পাঠান হয়।
আরও পড়ুন: গত ১০ বছরে তিহার জেলে জন্ম হয়েছে ৩৯টি শিশুর, সাফুরার জামিন আটকাতে যুক্তি দিল দিল্লি পুলিশ
গ্রেফতার হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই সাফুরা জানতে পেরেছিলেন, তিনি মা হতে চলেছেন। করোনা আবহে এ ভাবে তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে জেলে পুরে রাখা নিয়ে সোচ্চার হন নেটিজেনরা ৷ ওঠে তীব্র প্রতিবাদ ৷ ২৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সাফুরা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসওর্ডারেও ভুগছেন। আর তাই মানবিকতার ভিত্তিতেই জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। চতুর্থবারের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল দিল্লি হাইকোর্ট।
জামিন দিলেও দিল্লি হাইকোর্ট সাফুরা জারগারকে তদন্তে বাধা দিতে পারে এমন কার্যকলাপে জড়িত না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অনুমতি ছাড়া তিনি দিল্লি ছাড়তে পারবেন না। সাফুরা জারগারকে অন্তত ১৫ দিনের মধ্যে একবার ফোনে তদন্তকারী কর্মকর্তার সংস্পর্শে থাকতে হবে এবং ১০,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডও দিতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ছাড়াল, মৃতের সংখ্যা পেরোল ১৪ হাজারের গণ্ডি
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রতিবাদী মুখ হিসেবে সাফুরার নাম এদেশে বিশেষভাবে চর্চিত ৷ সাফুরার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছিল, তিনি বিভিন্ন সভায় টানা বক্তৃতার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ঘৃণা ছড়িয়েছেন ৷ পুলিশের দাবি, এই ঘটনাই দিল্লির দাঙ্গাকে তরান্বিত করেছে। সাফুরার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ, খুন, মারামারিতে উসকানি, খুনের উদ্যোগ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় লোকদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি করার অভিযোগ এনেছে দিল্লি পুলিশ। যদিও পুলিশের প্রতিনিধিত্বকারী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা মানবিক কারণে মঙ্গলবার তার জামিনের বিরোধিতা করেননি।
যদিও গত সোমবার, সাফুরা জারগারের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে দিল্লি পুলিশ বলেছিল “সাফুরার গর্ভধারণের সত্যতা দিয়ে তাঁর অপরাধের তীব্রতা কোনওভাবেই হ্রাস করা যায় না।"