ওড়িশার দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবিতে সরব বিরোধীরা। যদিও ঘণ্টার ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় মনে তাঁর পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন রেলমন্ত্রী।
ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। রেস সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে। যাইহোক দুর্ঘটনার পর থেকেই গোটা ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পদত্যাগ করুন -এমনটাই দাবি তুলেছে বিরোধীরা। শনিবার সন্ধ্যায় বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে রেল মন্ত্রী জানিয়ে দিলেন 'এখন রাজনীতির সময় নয়, পুনরুদ্ধারের কাজে মননিবেশ করার সময়।' যার অর্থ আপাতত তিনি পদত্যাগ করবেন না।
গতকাল দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা দ্বিগ্বিজয় সিং বলেছেন, যখন রেলমন্ত্রী বারবার বলছেন তাদের সিস্টেম সুরক্ষিত ও কোনও গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটতে পাকে না তখন এটি ঘটল কী ভাবে। পাশাপাশি তিনি লালবাহাদুর শাস্ত্রীর উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন রেল দুর্ঘটনার দায়ভায় মাথায় নিয়ে শাস্ত্রীজি পদত্যাগ করেছিলেন। সেইমত অশ্বিনী বৈষ্ণবেই মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রেলমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি রেলমন্ত্রীর সামনে অভিযোগ করেন রেলের সমন্বয়ের অভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা ঘটনার জন্য অবশ্য দায়ী করেছেন মোদীকে। তিনি বলেন, বন্দে ভারত ট্রেন চালোনোর দিকেই নজর রয়েছে মোদী সরকারের। কিন্তু বাকি ট্রেন চালানো ও যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের কোনও মাথাব্যাথা নেই।
প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আহতদের এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার যাতে কোনও অসুবিধের সম্মুখীন না হয় ও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় সাহয্য পায় তা তিনি নিজে দেখবেন। হাসপাতালে গুরুতর আহতদের সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ভূবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার স্টেশন। ঘটনাস্থলের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার নিয়ে যায়। তিনি দুর্ঘটনায় আহতদের ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেন। আগেই দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন।
অন্যদিকে এদিন করমণ্ডল এক্সপ্রেস- যশবন্তপুর ও মালগাড়ির সংঘর্ষে আহত যাত্রীদের দেখতে ওড়িশায় যান। সেখানে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টানায়েক ও রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরে রেলের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
গোদের ওপর বিষ ফোঁড়া!বালেশ্বর থেকে আহতদের উদ্ধার করে আনার পথে মেদিনীপুরে দুর্ঘটনার কবলে বাস
মৃত্যুপুরী বালাসোর, করমণ্ডল-যশবন্তপুর-মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে যাওয়া কামরায় ঝুলছে মানুষের হাত-পা
কতটা সুরক্ষিত আধুনিক LHB কোচ? করমণ্ডল - যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর উঠছে একাধিক প্রশ্ন