ভারত কেন রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়ায় জার্মান বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকে জয়শঙ্কর জানান যে ইউরোপীয় সরকার গুলি রাশিয়ার তেল নিয়ে ভারতের অবস্থান বোঝে।আশা করা যাচ্ছে যে ইউরোপীয় মিডিয়া এই বিষয়গুলি বুঝবে
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন কার্যত একঘরে করে দিয়েছে রাশিয়াকে। যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১০ টি দেশ একসময় রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করতো, যুদ্ধ শুরুর পর সেই সব দেশ রাশিয়াকে বয়কট করেছে এখন। কিন্তু এইরকম পরিস্থিতির মাঝেও ভারত কেন রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়ায় জার্মান বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকে জয়শঙ্কর জানান যে ইউরোপীয় সরকার গুলি রাশিয়ার তেল নিয়ে ভারতের অবস্থান বোঝে। এবং যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই এই যুদ্ধ নিয়ে ভারতের কি অবস্থান সেবিষয়ে স্পষ্ট করেছিল ভারত। আশা করা যাচ্ছে যে ইউরোপীয় মিডিয়া এই বিষয়গুলি বুঝবে ও অহেতুক প্রোপাগান্ডা ছড়াবে না।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে যেভাবে রক্ষা করলেন তা দেখে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশেষজ্ঞমহল। কিছুদিন আগেই জি ২০ সম্মেলনের নেতৃত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে ভারত। তাই এখন থেকে ভারতের সব কার্যকলাপেই নজর থাকবে বিশ্বের। তাই জি ২০ সম্মেলন শেষ হওয়ার চারদিন পরই জার্মাণ বিদেশমন্ত্রী বেয়ারবক দুদিনের সফরে আসেন ভারতে। বৈঠক করেন জয়শঙ্করের সঙ্গে। ভারতের জ্বালানি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে রাশিয়া ছাড়া আর অন্য কোনো দেশ বিকল্প হতে পারে কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। যার জবাবে জয়শঙ্কর বলেন যে বর্তমানে রাশিয়ার কাছে জীবাশ্ম জ্বালানি , তেল , প্রাকৃতিক গ্যাসের যা সম্ভার আছে তা ভারতের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য অন্যতম ভালো বিকল্প। এছাড়াও ভারতকে বাধা দেওয়ার আগে ইউরোপের এখন উচিত তাদের নিজস্ব জ্বালানির চাহিদা কিভাবে মিটবে সেবিষয়টি নিয়ে ভাবা।
এদিনের এই বৈঠকে জ্বালানি ছাড়াও , রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ , চীন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ প্রভৃতি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় দুই দেশের মন্ত্রীর মধ্যে। এপ্রসঙ্গে জয়শঙ্কর জানান যে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের দেশের সম্পর্ক ও আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এইমুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করা যাচ্ছে না তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বোঝাপড়ার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছবে ভারত ও পাকিস্তান।
ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রসঙ্গেও তিনি জানান যে এখন সময় নয় যুদ্ধের , আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উচিত সমস্যার সমাধান করা।
আনালেনা বেয়ারবক বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে জানান যে ভারত অত্যন্ত কঠিন সময়ে জি ২০ এর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই সফরে জার্মান যদিও সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ভারতকে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তন যেভাবে সারা বিশ্বের জীবন ও জীবিকাকে বিপদের মুখে ফেলেছে। ভারত তার মোকাবিলা কতটা শক্ত হাতে করতে পারবে তা নিয়ে একটু সংশয়ও প্রকাশ করেছেন বেয়ারবক। কারণ কাজটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। জলবায়ু সংকটের পাশাপাশি আঞ্চলিক সংকট মেটাতেও সিদ্ধহস্ত হতে হবে এখন থেকে ভারতকে।