বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং পঞ্জাব সরকারের দ্বারা গঠিত সমস্ত তদন্ত কমিটির কাজ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। পঞ্জাব সরকার এদিন আদালতের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন তদন্ত করার অনুমতি চায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) পঞ্জাব সফরে (Punjab Visit) নিরাপত্তা ভঙ্গ ইস্যুতে (PM's security breach) চার সদস্যের প্যানেল (Four member panel) গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সোমবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি নিয়োগের নির্দেশ দেয় আদালত।
ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা এবং বিচারপতি হিমা কোহলি এবং সূর্য কান্তের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ বলেছে যে কমিটিতে ডিজিপি চণ্ডীগড়, জাতীয় তদন্ত সংস্থার (NIA) ইনস্পেক্টর জেনারেল, পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং অতিরিক্ত ডিজিপি পঞ্জাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং পঞ্জাব সরকারের দ্বারা গঠিত সমস্ত তদন্ত কমিটির কাজ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। পঞ্জাব সরকার এদিন আদালতের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন তদন্ত করার অনুমতি চায়। পঞ্জাব সরকারের পক্ষে উপস্থিত হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল ডিএস পাটওয়ালিয়া বলেছেন, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, সমস্ত নথি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের হাতে নেওয়া হয়েছে।" তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন কেন্দ্রের দ্বারা গঠিত কমিটির কাছ থেকে সুষ্ঠু শুনানি পাওয়া যাবে না কারণ এর পেছনে কিছু রাজনীতি আছে।
এ জি পাটওয়ালিয়া আরও বলেন "আমরা মুখ্য সচিবের কাছ থেকে সাতটি শো-কজ নোটিশ পেয়েছি। প্রতিটিতেই এই ঘটনার জন্য কড়া শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে।" পাটওয়ালিয়া বলেন, পঞ্জাব সরকারের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শো-কজ নোটিশ জারি করা হয়েছে। তাঁর দাবি এই প্রতিটি চিঠিই অনুমান ও পূর্ব পরিকল্পনা নির্ভর। কোনও নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ এখানে দেখানো হয়নি।
এদিন শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন কোন তদন্ত হয়নি, সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের সামনে রয়েছে। তাহলে তারা কীভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করল? তিনি বলেন, "আমি আদালতের তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আমার অফিসারদের ফাঁসি দিন,"।
কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করার জন্য কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রমনা, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে জিজ্ঞাসা করেন কখন শো-কজ নোটিশ জারি করা হয়েছিল। এসজি মেহতা জানান, অ্যাডভোকেট জেনারেল ডিজিপি এবং মুখ্য সচিবকে জারি করা নোটিশের উপর নির্ভর করছেন। নোটিশটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আগে জারি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- শহর থেকে গ্রাম, কোভিড ১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় জোর মোদীর
এসজি মেহতা এরপর স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ (এসপিজি) আইনের ধারাগুলো পড়ে শোনান। এসজি মেহতা বেঞ্চকে বলেন যে পঞ্জাবের কর্মকর্তারা ব্লু বুকের অধীনে ভিভিআইপি এসপিজি সুরক্ষার নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। মেহতা আরও বলেন এটা রাজ্যের গোয়েন্দা ব্যর্থতা। প্রধানমন্ত্রীর কনভয় বিক্ষোভ এলাকার ১০০ মিটারের মধ্যে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল ডিজিপির।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনিন্দর সিং-এর আবেদনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে। আবেদনে বলা হয় পঞ্জাবের ফিরোজপুরে যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিরাপত্তায় ব্যাপক লঙ্ঘন ঘটেছে, যার ফলে তার কনভয় ভাতিন্ডায় একটি ফ্লাইওভারে আটকা পড়ে। যা দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি।