মেঘালয়ের স্থানীয় সংগঠনগুলি সরকারি কর্মীদের এর প্রতিবাদে অফিসে না যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। পর্যটনের মরশুমে থমথমে গোটা শিলং, মেঘালয় জুড়ে সশস্ত্র বাহিনী আর জ্বালানির ট্যাঙ্কার।
অসম ও মেঘালয় সীমান্তে বেআইনি কাঠ পাচারকে কেন্দ্র করে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি, প্রাণ হারান পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলস জেলার ৬ জন মানুষ। ফরেস্ট গার্ডের দাবি, এই ৬ জনই কাঠ পাচার করছিলেন এবং ধরা পড়ার পর পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। এরপর পুলিশ বাহিনীকে লক্ষ্য করে বঁটি, কাটারি, বাঁশ, লাঠি নিয়ে সীমান্ত এলাকায় চড়াও হন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। সেই ঝড় আপাতত নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও থমথমে হয়ে রয়েছে পূর্ব খাসি পাহাড় লাগোয়া মনোরম পর্যটনক্ষেত্র শিলং।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাহাড়ি শিলং সেজে ওঠে ভারতের বিখ্যাত চেরি ব্লসম ফেস্টিভালের আনন্দে। কিন্তু, গুলিবর্ষণের টাটকা ক্ষত ফিকে করে দিয়েছে পাহাড়ের রং, ২০২২-এর নভেম্বরে রঙিন উৎসবের ছটা থেকে বঞ্চিত পর্যটকরা, স্তব্ধ পাহাড়ের মানুষরাও। অসম সীমান্ত লাগোয়া জয়ন্তিয়া পাহাড়ে ফরেস্ট গার্ডের গুলিতে ৬ গ্রামবাসীর মৃত্যুর পর থেকে শিলং শহরের সরকারি অফিসগুলিতে কর্মীদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে মাত্র ৩০ শতাংশ। শনিবার করে শুরু হচ্ছে ‘রেড ফ্ল্যাগ মার্চ।’ মেঘালয় রাজ্যের প্রতিটি কোণায় মানুষের ক্ষোভ প্রতিবাদের আগুনের মতো জ্বলন্ত হয়ে রয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে শিলং শহরে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে কেএসইউ, জেএসইউ, এফকেজেজিপির মতো একাধিক সংগঠন। অসম-মেঘালয় সীমান্ত এলাকার দীর্ঘদিনের যে সংঘাত চলছিল, তাতে নতুন করে উস্কানি দিয়ে দিয়েছে সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে মুখরোহ গ্রামের ৬ জন বাসিন্দার মৃত্যু।
সূত্রের খবর, এই মৃত্যুর প্রতিবাদে মেঘালয়ের স্থানীয় সংগঠনগুলি এলাকার সরকারি কর্মীদের অফিসে না যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। শহরের স্কুলগুলিতে এই সময় ফাইনাল পরীক্ষা রয়েছে। পর্যটনের মরশুম হওয়ার দরুন শিলং শহরের লইতমুখরা এলাকায় বহু গাড়ির আনাগোনা শুরু হয় নভেম্বরের শেষ দিক থেকে। তবে, সাম্প্রতিক অশান্তি যেন সবকিছুই স্তব্ধ করে দিয়েছে আনন্দের শিলং শহরে। প্রায় নিস্তব্ধ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে অসম থেকে মেঘালয়ে এসে ঢুকছে বহু জ্বালানির ট্যাঙ্কার, সেগুলিকে কড়া নিরাপত্তা দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী।
রাজ্যের অন্দরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মেঘালয় প্রশাসন কড়া নির্দেশ দিয়েছে, কোনও মতেই যেন যথাযথ প্রয়োজন ছাড়া অসমের নম্বরপ্লেট লাগানো গাড়ি মেঘালয়ে না ঢোকে। কারণ, দেখে দেখে অসমের প্লেট লাগানো গাড়িগুলিকেই নিশানা করছে মেঘালয়ের প্রতিবাদীরা। অন্যদিকে, অসমেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেঘালয়ের প্লেট লাগানো গাড়িগুলিকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ২২ নভেম্বর, মঙ্গলবার অসমের নম্বরপ্লেট লাগানো একটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় মেঘালয়ের আন্দোলনকারীরা। তার পর থেকে আরও সতর্ক হয়ে রয়েছে দুই রাজ্যের প্রশাসন।
আরও পড়ুন-
ঘুম থেকে উঠেই রাস্তায় বেরিয়ে মানুষজনকে ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করল জলপাইগুড়ির তহিজুল, ছেলের কাণ্ড দেখে হতবাক পরিবার
মুম্বই হামলার বদলা না নিলে মানুষ ভারতকে গুরুত্বহীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখবে: লেফটেন্যান্ট কর্নেল সন্দীপ সেন
টিরেটি বাজারের কাছে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, তড়িঘড়ি পৌঁছলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু