কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া গত চারদিন ধরে দিল্লিতে রয়েছেন। এই সময়ে, তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। মিডিয়া রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হচ্ছে, কংগ্রেস সিদ্দারামাইয়ার নাম অনুমোদন করেছে। এখন উপ মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য ডিকে শিবকুমারের নাম প্রস্তাব করা হচ্ছে। এটাও বলা হচ্ছে যে ডি কে শিবকুমার উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে সন্তুষ্ট নন এবং এখনও তার পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করছেন। এদিকে, আলোচনা রয়েছে যে আজ সন্ধ্যার মধ্যে কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারে কংগ্রেস দল।
সিদ্দারামাইয়া-র নামে সিলমোহর পড়তে চলেছে-খবর পাওয়া মাত্রই বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লি পর্যন্ত তাঁর সমর্থকরা উদযাপন শুরু করেছেন। তার সমর্থকরা বেঙ্গালুরুতে সিদ্দারামাইয়ার বাড়ির বাইরে জড়ো হয়ে তার কাটআউটকে দুধ দিয়ে স্নান করে উদযাপন করেন। দু'দিন ধরে সিদ্দারামাইয়া সমর্থকরা ক্রমাগত আশায় ছিলেন যে কখন তাঁর নাম ঘোষণা করা হবে।
কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের চার দিন পরে, শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদ কে দখল করবে সে সম্পর্কে চিত্র প্রায় পরিষ্কার বলে মনে হচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রে বিশ্বাস করা হলে সিদ্দারামাইয়াই হবেন কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, ১৮ মে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও শপথ নিতে পারেন তিনি। বলা হচ্ছে ডিকে শিবকুমারকে নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড। ডিকে ডেপুটি সিএম সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা যেতে পারে। আসলে, ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে কংগ্রেসে কোন্দল শুরু হয়। এই কারণেই গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে ক্যাম্প করছেন প্রবীণ নেতারা।
রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন সিদ্দারামাইয়া
কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া গত চারদিন ধরে দিল্লিতে রয়েছেন। এই সময়ে, তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। একইসঙ্গে সূত্রের খবর, বুধবার তাঁর বাসভবনে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন তিনি। বলা হচ্ছে, হাইকমান্ড সিদ্দারামাইয়ার নাম অনুমোদন করেছে। সিদ্ধকে কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করা প্রায় নিশ্চিত।
কেন মুখ্যমন্ত্রী করা হল সিদ্দারামাইয়াকে
১. সিদ্দারামাইয়ার নামে সিলমোহরের পিছনে অনেক কারণ বলা হচ্ছে। যেমন কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে সিদ্দারামাইয়ার মর্যাদা অনেক বড়। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস রাজ্যে তাদের শক্ত ভিত ধরে রেখেছে। তার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয় সিদ্দারামাইয়াকেই। তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে মোট ১২টি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, যার মধ্যে তিনি ৯টিতে জয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ তার জয়ের অনুপাত চমৎকার হয়েছে। ক্রিকেটের ভাষায় বললে, সিদ্দারামাইয়ার স্ট্রাইক রেট চমৎকার। যেটি যেকোনো দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
২. এ ছাড়া বর্তমানে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে কোনো বড় মামলা নেই। তিনি পরিচ্ছন্ন এবং অভিজ্ঞও বটে। এমতাবস্থায়, ডিকে-র তুলনায় কংগ্রেস হাইকমান্ডের সামনে তাঁর ভারী হাত ছিল।
৩. সিদ্দারামাইয়া ইতিমধ্যেই রাজ্যের কমান্ড খুব ভালভাবে সামলেছেন। ১৯৯৪ সালে, তিনি জনতা দল সরকারে থেকে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা পালন করেছিলেন। যেকোন মুখ্যমন্ত্রী পদে নেতার একটা বড় গুণ থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সেটা হল দুর্নীতিমুক্ত ভাবমূর্তি। সিদ্দারামাইয়ার ইমেজটা এমনই কিছুটা। কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই।
৪. গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠতা
সিদ্দারামাইয়ার নামে সিলমোহর পড়ার একটা বড় কারণ হল তাকে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ইতিমধ্যেই সিদ্ধারামাইয়ার খুব ঘনিষ্ঠ। জনতা দল থেকে সিদ্দারামাইয়াকে কংগ্রেসে যোগদানেও বড় ভূমিকা রেখেছেন খাড়গে।