কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ 'অপারেশন মা', অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান জানালেন এই প্রকল্পের ইতিকথা

জম্মু কাশ্মীরে দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখেছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ধিলন। কিনতে গাজি আয়ে কিনতে গাজি গেয়ে বইতে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ দমনেরও কথা।

 

Web Desk - ANB | Published : Mar 5, 2023 11:20 AM IST

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যাপক সাড়া দিয়েছিল 'অপারেশন মা'। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ধিলন তাঁর বইয়ে তেমনই দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের দায়িত্বে থাকার সময় কী করে 'অপারেশন মা'কার্যকর করে জঙ্গিঘাঁটি থেকে কাশ্মীরি যুবকদের তাদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তারও বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর বইয়ে। তিনি তাঁর নতুন বইয়ে নির্দিধায় জানিয়েছেন, নিহত এক সন্ত্রাসবাদীর কাছে থেকে তাঁর মায়ের চিঠি পেয়েছিলেন তিনি। সেই চিঠিই তাঁকে 'অপারেশন মা' চালু করার প্রেরণা দিয়েছিল। ধিলন আরও বলেছেন, তাঁর সময় এই প্রকল্প যথেষ্ট কার্যকর ছিল। হিংসার পথ থেকে অনেকেই সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছিল।

ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (DIA) এর প্রধান হিসেবে কাজ করেছিলেব ধিলল। তার আদে ছিলি জম্মু ও কাশ্মীরের কৌলসগত XV কর্পসের প্রধান ছিলেন। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর যখন রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছিল তখনই তিনি উপত্যকার দায়িত্বে ছিলেন। XV কর্পসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই ২০১৯ সালে জইশ-ই - মহম্মদ হামলা চালিয়েছিল সিআরপিএফ-এর কনভয়ের ওপর। সেই সময় প্রাণ গিয়েছিল ৪০ জন জওয়ানের। ধিলন তাঁর নতুন বই, 'কিতনে গাজি আয়ে কিতনে গাজি গেয়ে' নামে একটি বই লিখেছেন, অবসরগ্রহণের পর। সেখানেই তুলে ধরেছেন কাশ্মীরে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা। স্বভাবতই সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ। তিনি লিখেছেন, কাশ্মীরে কাজ করতে গিয়ে তিনি প্রথমেই বুঝতে পেরেছেন, উপত্যকার বাসিন্দারা মূলত ছেলেরা তাদের বাবার থেকে অনেক বেশি মায়ের ঘনিষ্ট। মায়ের সমস্ত কথার গুরুত্ব তাদের কাছে অনেক বেশি।

ধিলন তাঁর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই হিংসার পথ থেকে যুবকদের ফেরাতে চেয়েছিলেন। আর তাঁকে সেই কাজে সাহায্য করেছিল স্থানীয় মায়েদের চিঠি। তিনি আরও বলেছেন, তিনি সন্ত্রাসবাদী ছেলের লেখা বা মায়ের ছেলেকে লেখা একাধিক চিঠি পেয়েছিলেন। যা থেকেই তিনি আপারেশন মা-এর নীল নক্সা তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেছেন, সেই চিঠিগুলি স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেয় কাশ্মীরি তরুণরা তাদের মায়ের সঙ্গে একটি শক্তিশালী বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি আরও দাবি করেন একজন জঙ্গির জীবন তিনি সঠিক মূল্যায়ন করতে পেরেছিলেন।

ধিলন আরও বলেছেন, স্থানীয় যুবক যারা কাশ্মীরে জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়ে বন্দুক তুলে নিয়েছিলেন তারে ৭ শতাংশ প্রথম ১০ দিনের মধ্যেই এনকাউন্টারে মারা যেত, ১৭ শতাংশের মৃত্যুতে সময় লাগত মাত্র তিন মাস। ৩৬ শতাংশের মৃত্যু হত ৬ মাসের মধ্যে। বাকিরা বড়োজোড় এক বছর কি দেড় বছর বেঁচে থাকতে পারত। যারা সন্ত্রাসবাদী দলে যোগ দিত তারে ৮৩ শতাংশেরই পাথর ছোঁড়ার ইতিহাস রয়েছে।

সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তিনি কাশ্মীরি বাবা ও মায়েদের সঙ্গ দেখা করেছিলেন। তাঁদের সমস্ত তথ্য দিয়ে বুঝিয়ে বলেছিলেন। ছেলেদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাতে কমপক্ষ ৫০ জন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে বলেও দাবি করেছেন তাঁর বইতে। তিনি আরও বলেছেনস সীমান্তে ওপার থেকেই কনকাঠি নাড়ে পাকিস্তান। কিন্তু অপারেশ মা-এর মাধ্যমে যাদের তিনি ফিরিয়ে এনেছিলেন তাদের অনেকেই এখন কলেজ পড়ুয়া।

আরও পড়ুনঃ

বিজেপির 'আলোচনার ডাকে' সাড়া প্রদ্যোৎ দেববর্মার, ভোটারদের হতাশ করবেন না বলে আশ্বাস টিপরা প্রধানের

টিপরা মোথাকে দলে টানতে মরিয়া বিজেপি, আলোচনার পথ খোলা বলে জানালেন হেমন্ত বিশ্বশর্মা

ভয়ঙ্কর ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে রুদ্রপ্রয়াগে, সতর্ক করল ইসরোর উপগ্রহ চিত্র

Share this article
click me!