নির্যাতিতার পরণে ছিল অন্তর্বাস, হয়নি ব্যথা - কিন্তু হয়েছে ধর্ষণ, বলল হাইকোর্ট

যৌনাঙ্গে ব্যথা না পেলেও এবং তার অন্তর্বাস না খোলা হলেও ভারতীয় দণ্ডবিধি (Indian Penal Code) অনুযায়ী হয়েছে ধর্ষণ (Rape)। ১০ বছরের এক কিশোরীর ধর্ষণের মামলার তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল মেঘালয় হাইকোর্ট (Meghalaya High Court)।

নির্যাতিতা তার যৌনাঙ্গে ব্যথা অনুভব করেনি এবং ধর্ষণের সময় তার অন্তর্বাস খোলা হয়নি। এতে করে প্রমাণ হয় না, যে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে কিছু অনুপ্রবেশ করানো হয়নি। আর, ভারতীয় দণ্ডবিধি (Indian Penal Code) অনুযায়ী যোনি বা মূত্রনালীতে কোনো বস্তু প্রবেশ করালেই তাকে ধর্ষণ (Rape) বলে গন্য করা হবে। ২০০৬ সালের এক ১০ বছরের কিশোরীর ধর্ষণের মামলার আবেদনের শুনানিতে, বুধবার এক তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল মেঘালয় হাইকোর্টের (Meghalaya High Court) এক ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Justice Sanjib Banerjee) এবং বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংদোহে (Justice W Diengdoh)। 

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ওই মাসেই এই বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অক্টোবর মাসে নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, মেয়েটির যোনি নরম এবং লাল হয়ে রয়েছে এবং তার হাইমেন বা যোনিচ্ছদ ফেটে গিয়েছে। ফলে, পরীক্ষাকারী চিকিৎসক বলেছিলেন, মেয়েটির ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ঘটনার মানসিক আঘাতে সে ভুগছে। ২০১৮ সালে ট্রায়াল কোর্ট অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল এবং তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Latest Videos

আরও পড়ুন - মালদহে নিজের বউদিকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেফতার দুই দেওর

আরও পড়ুন - বাবার ধর্ষণে ৮ মাসের গর্ভবতী, ১০ বছরের বালিকার গর্ভপাতের নির্দেশ আদালতের

আরও পড়ুন - Shillong Blast: ভরসন্ধেয় পুলিশ বাজারে বিস্ফোরণ, কেঁপে উঠল শিলং

তবে, এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল দোষী পক্ষ। তারা দাবি করেছিল, কিশোরীটির যোনিতে কিছু অনুপ্রবেশ করা হয়নি। নির্যাতিতার অন্তর্বাস খুলে ফেলা হয়নি। দোষী শুধুমাত্র নির্যাতিতার নিম্নাঙ্গে নিজের যৌনাঙ্গ ঘষেছিল। এতে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারা দেওয়া যায় না। এছাড়া, আসামী পক্ষ বলেছিল, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দোষীর স্বীকারোক্তিতে অনুপ্রবেশের কথা বলা থাকলেও, তা ধরা উচিত নয়। কারণ, অভিযুক্তের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব ছিল।

আদালত বলেছে, সাক্ষ্যপ্রমাণগুলিকে সামগ্রিকভাবে দেখা উচিত। মামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সামাজিক অবস্থা, তাদের শিক্ষার স্তর এবং বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে। জিঙ্গাসাবাদের সময় নির্যাতিতা তার বক্তব্যে যা বলেছে, তা উপযুক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে এবং তাকে কিছুটা অগ্রাধিকার দিতে হবে। শুনানি চলাকালীন সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলেও, ঘটনার বিবরণ জানানোর সময় সে অত্যন্ত অস্বস্তিকর অবস্থায় ছিল, নার্ভাস ছিল। 

প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী যোনি বা মূত্রনালীতে কোনও বস্তু প্রবেশ করানোকেই ধর্ষণ বলে ধরতে হবে। এমনকী, নির্যাতিতা অন্তর্বাস পরা অবস্থাতেও যদি নির্যাতিতার যোনি বা মূত্রনালীতে আসামী জোর করে তার অঙ্গ প্রবেশ করায়, তাহলেও তা আইনের চোখে অনুপ্রবেশের সমান হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে, অন্যভাবে যোনি বা মূত্রনালীতে অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য কোনও ব্যক্তি যদি নারীর শরীরের কোনও অংশে হেরফের ঘটায়, সেই কাজটিও ধর্ষণের সমান হবে। কাজেই, মেঘালয় হাইকোর্ট, ট্রায়াল কোর্টের আদেশই বহাল রেখেছে।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

Live: সাংবাদিক সম্মেলনে শমীক ভট্টাচার্য ও শিশির বাজোরিয়া, কী বলছেন, দেখুন সরাসরি
জগদ্দলে গুলি ও বোমাবাজি, তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক-কে দায়ী করলেন অর্জুন সিং | Arjun Singh
চরম উত্তেজনা মাদারিহাটে, বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের গাড়িতে হামলা তৃণমূল সমর্থকদের
‘ওপারে ইউনূস এপারে মমতা দুজনেই এক’ মমতাকে তোপ শুভেন্দুর, দেখুন কী বললেন | Suvendu Adhikari
সাংবাদিকদের দেখেই দে ছুট! চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়, ব্যপার কী? দেখুন