শিশুদের মনকে আরও বেশি শক্তিশালী করাই উদ্দেশ্য, ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পাওয়া কাশ্মীরের পণ্ডিত রমিজ সুধন বললেন

তরুণ শিক্ষক রমিজ সুধন নিয়মিত বিষয়গুলি শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক আঘাত , স্কুলের নিরাপত্তা ও ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

সালটা ২০১৬। বারামুল্লার একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষক ছিল রমিজ সুধন। তিনি ছাত্রদের বিষয়ে আলোচনার জন্য তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ই এক ছাত্রের অভিভারক একটি শিক্ষক সভারও আয়োজন করেছিলেন। তখনও রমিজ কল্পনা করতে পারেননি এই সভাই তঁকে আমূল বদলে দেবেন। কারণ সেই ইভেন্টটিও একটি বিশাল পরিবর্তন এনেছিল। অঞ্চলের শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানসিকতা বদলে দিয়েছিল।

সুধন, তিনি যে পার্থক্যের সূচনা করেছিল তা কেবল সরকার পরিচালিত স্কুলে বৈপ্লবিক পরিবর্তনই আনেনি বরং এমন একটি ঘটনাও ঘটিয়েছে যার ফলে সুধন ২০২৩ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পাওয়া একমাত্র ভারতীয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছিলেন। তার বৃত্তির সময় তিনি মহাদেশ জুড়ে প্রায় পঞ্চাশটি বিভিন্ন দেশের শিক্ষক সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। সেখানে, তিনি একজন শিক্ষক হিসাবে কাশ্মীরে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এবং অন্যান্য দেশের শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা শুনেছিলেন। কিন্তু তাদের কারও অভিজ্ঞতাই কাশ্মীরের মত হিংসার ছিল না।

Latest Videos

ফুলব্রাইট স্কলারশিপ এমন কিছু ছিল না যা তার কোলে পড়েছিল। কাশ্মীরের সবচেয়ে কঠিন পর্যায়ে সরকারী স্কুল সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন এবং শিক্ষার্থীদের এবং তাদের অভিভাবকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য সুধনের প্রচেষ্টাই তাকে তার সমবয়সীদের মধ্যে বিশিষ্ট করে তুলেছে।

অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠকের ধারনাটি কাশ্মীরের আশান্তির সাক্ষী ছিল। যে অঞ্চলে সুধন পড়াতেন সেখানেই তরুণদের সাধারণ জীবন স্রোতে ধরে রাখাটাই তাঁর কাথে চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ ওই এলাকার তরুণরা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সন্ত্রাসবাদী বুরহান ওয়ানির মৃত্যু দেখেছিল। যা অনেক তরুণ তরুণীকে বিরক্ত করেছিল। একজন শিক্ষক হিসেহে তরুণদের মনকে সঠিক পথে পরিচালিত করাই তাঁর কাছে ছিল সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জে।

তরুণ শিক্ষক তাঁর নিয়মিত বিষয়গুলি শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক আঘাত , স্কুলের নিরাপত্তা ও ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে পরামর্শ দিতে সময় ব্যায় করেন। তিনি বলেন, 'আমি আর বসে থাকতে পারতাম না এবং দেখতে পারতাম না আমার শেখা সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে।' তিনি আরও বলেন, আমি বিচলিত ছিলাম, প্রথমত সরকারি স্কুলের নেতিবাচক চিত্র এবং দ্বিতীয়ত কাশ্মীরের অশান্তির প্রভাব তরুণদের মনে।" মালিকানা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুধন। "মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং এখানকার মানুষকে ঘিরে থাকা নেতিবাচকতাকে উল্টানোর দায়িত্ব নিতে কেউ প্রস্তুত ছিল না।"

সুধন শিশুদের হাত করে ক্রমাগত অভিভাবকদের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে উপলব্ধ করেছেন। রাজনৈতিক সামাজিক অস্থিরতার কারণে শৈশব হারিয়ে যাচ্ছিল। এমন একটি এলাকায় এটি করা জরুরি ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। সাধারণ শিক্ষকদের সজ্ঞার মধ্যে ফেলা যায় না সুধনকে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রাইভেট স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে স্থানান্তরিত করা শুরু করেছিল শুঘুমাত্র সুধনের সঙ্গ দেওয়ার জন্য। “পিতামাতার ব্যস্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এলাকাটি সহিংসতার জন্য পরিচিত ছিল। শৈশব হারিয়ে যাচ্ছিল,” সুধন বলেছেন তার উদ্যোগের বর্ণনা যা তাকে এক ধাপ থেকে অন্য ধাপে নিয়ে গিয়েছিল। “কাশ্মীরের শিশুরা দেশের অন্যান্য অংশে তাদের সমবয়সীদের তুলনায় বেশি চাপে ছিল। স্কুলগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ ছিল, শিশুরা সহিংসতা এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছিল, বলেন সুধন। তিনি আরও জানিয়েছেন এই উদ্যোগ তাঁর কাছে খুবই সাধারণ ছিল। স্কুলে তিনি জুনিয়ারদের পড়াতেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, বাচ্চাদেশের শেখানোর পাশাপাশি তাদের সমস্যা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন।

সুধন কাশ্মীরের স্কুলের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য দুই মাসের দীর্ঘ স্কলারশিপ থেকে ফিরে এসেছেনতিনি জানিয়েয়েছন অন্যান্য দেশের শিক্ষকদের থেকে তিনি কাজের অভিজ্ঞনা সঞ্চয় করেছেন। দেশের সমস্ত শিশুদের নিরাপত্তা দেওযার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তাদের সুখী করার অত্যান্ত জরুরি। তিনি আরও জানিয়েছেন সাধরণের মধ্যে শিক্ষার প্রসারলাভ করাই তাঁর জীবনের অন্যতম উদ্দেশ্য।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
'কুমিল্লা ছেড়ে চলে যা' কুমিল্লায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা! | Bangladesh News |
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari
Viral Video! আবাসের টাকা ঢুকতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাটমানি চাইছেন TMC কর্মী | Murshidabad Latest News
‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News