২০১৬ সলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জাতীয় পতাকা তুললেন তার বাবা।
ছেলে ছিল দুর্ধর্ষ হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার। যার মৃত্যুতে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে আগুন জ্বলেছিল উপত্যকায়। রবিবার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের দিন তারই বাবা মোজাফ্ফর ওয়ানি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার একটি স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন। তাঁর সেই পতাকা উত্তোলনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোস্য়াল মিডিয়ায়। কাশ্মীরের উন্নয়নের পথে এই ছবি একটা বড় মাইলফলক বলে মনে করা হচ্ছে।
মৃত জঙ্গি বুরহান ওয়ানির বাবা মোজাফ্ফর ওয়ানি পেশায় একজন শিক্ষক। ত্রাল সেক্টরের সরকারি বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিনি। ওয়ানি পুলওয়ামার ত্রালের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে 'আজাদি কা অমৃত মহোৎসব' উদযাপনের অংশ হিসাবে, শিক্ষা দপ্তর-সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির সমস্ত বিভাগকে স্বাধীনতা দিবসে সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কোভিডের জন্য এমনিতে স্কুল বন্ধ থাকলেও সরকারি নির্দেশে, সকল স্কুলেই স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে বলা গুগল ড্রাইভে সেইসব অনুষ্ঠানের ভিডিও এবং ছবি আপলোড করতেও বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনেই মোজাফ্ফর ওয়ানি এদিন ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ কাশ্মীরে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানি। যার জেরে পরের পাঁচ মাস ধরে উপত্যকার জায়গায় জায়গায় ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্য়ু হয়েছিল এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছিলেন। কাশ্মীর উপত্যকায় তরুণ বুরহান ওয়ানি দারুণ জনপ্রিয় ছিল। সোশ্য়াল মিডিয়ায় তার উজ্জ্বল উপস্তিতি ছিল। সোশ্য়াল মিডিয়াকে ব্যাবহার করে উপত্যকার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিয়েছিল সে। বহু যুবককে সে হিজদবুল শিবিরে টেনেছিল।
আরও পড়ুন - সত্যিই কি ভারতের আগে স্বাধীন হয়েছিল পাকিস্তান, কেন তারা একদিন আগে এই দিনটি উদযাপন করে
আরও পড়ুন - ব্রিটিশ পুলিশের প্রথম গুলির সাক্ষী, ঝালদার সেই রক্তে রাঙা মাঠেই শহিদদের স্মরণ কংগ্রেসের
সরকারি নির্দেশ থাকলেও জম্মু -কাশ্মীরে অনেক স্কুলেই এদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠান হয়নি বলে জানা গিয়েছে। উপত্যকায় মোট ২৩,০০০ সরকারি স্কুল রয়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী শ্রীনগর থেকে শিক্ষা বিভাগের এক অফিসার জানিয়েছেন, তাঁর জোনের ১২০টি স্কুলের মধ্যে মাত্র তিনটি স্কুলে এদিনের অনুষ্ঠান হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্কুল এবং চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ অগাস্ট অনুষ্ঠানের জন্য জমায়েতে কোভিড বিধিও শিথিল করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে সবথেকে বড় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানটি হয়েছে শ্রীনগরের শের-ই -কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা পতাকা উত্তোলন করেন।