মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রিপুরা দখলের স্বপ্ন এবারও অধরা থেকে গেল। ইঙ্গিত দিচ্ছে বুথ ফেরত সমীক্ষা।
একাধিক সংবাদ চ্যানেলের এক্সিট পোলে দেখা যাচ্ছে রীতিমত ঝড় তুলেই ত্রিপুরায় দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপির। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি ৩৬টিরও বেশি আসন পাবে বলেও দাবি করা হচ্ছে বুথ ফেরত সমীক্ষায়। তবে বাম-কংগ্রেস জোট আর টিপরা মোথার মধ্যে বিধানসভায় দ্বিতীয় স্থান দখলের জন্য লড়াইয়েরও ইঙ্গিত দিয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষা। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষায় খারাপ ইঙ্গিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের জন্য। কারণ এবারও তৃণমূলকে ত্রিপুরার মানুষ খালি হাতেই ফেরনোর ইঙ্গিত দিয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষা।
২০০৮ সাল থেকেই ত্রিপুরায় পা রাখার চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি সফল হননি। এবারও ত্রিপুরায় ঘাসফুল ফোটানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারই শুধু নয়, ত্রিপুরায় দলীয় সংগঠন তৈরির জন্য কংগ্রেস ছেড়ে আসা সুস্মিতা দেবসহ একাধিক নেতার ওপর ভরসা করেছিলেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানস ভুঁইয়ার ওপর অনেকটাই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মমতার পাশাপাশি ত্রিপুরায় একাধিক নির্বাচনী প্রচার করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মমতার রোডশোতে প্রবল ভিড় হলেও ভোট বাক্স কিন্তু বলছে অন্য কথা। চলতি বছর ত্রিপুরা বিধানসভায় ৬০ আসনের মধ্যে ২৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল মমতার তৃণমূল। কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত গোয়ার মতই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে ঘাসফুলকে।
২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বাম দুর্গো ভেঙে ফেলে বিজেপি। তারপর সেখানে বামেদের পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধেও লড়াই শুরু করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। যদিও তাঁকে আরএসএস দূর্গা বলে অভিহিত করেছে। কিন্তু মমতার কথায় তিনি প্রকৃতই বিজেপি বিরোধী। ত্রিপুরার অধিকাংশ মানুষই বাংলাভাষী। তাই এই রাজ্যে পা রাখা অনেকটাই সহজ হবে বলেও মনে করেছিলেন মমতা। এই রাজ্যেও পশ্চিমবঙ্গের মত বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তুদের বাস রয়েছে। যারা ভোটবাক্সে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে ত্রিপুরায় প্রায় ৩০ শতাংশ জনগণই উপজাতি। তাই ত্রিপুরায় জয়ের আশা করেছিল তৃণমূল।
অন্যদিকে বিজেপি প্রায়ই তৃণমূলকে আঞ্চলিক দল হিসেবে কটাক্ষ করে। ত্রিপুরায় জয়ের পর সেই জাতীয় দলের স্বীকৃতি পাওয়া অনেকটা সহজ হয়ে যেত। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানান অনেকটাই সহজ হয়ে যেত। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ থাকলেও আম আদমি পার্টির হাতে বর্তমানে দিল্লির পাশাপাশি পঞ্জাব রয়েছে। তাই সেই লড়াইয়েও কেজরিওয়াল মমতাকে কিছুটা হলেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন বলা যেতে পারে।