একদিকে আলোচনার টেবিলে সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর কথা বলছে চিন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা করছে না বেজিং। বারাবর স্যাটেলাইট চিত্রে তার প্রমাণ পাচ্ছে ভারত। আকসাই চিনে এখনও নিজেদের সেমা মোতায়েন করে রেখেছএ চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। গত ১৫ জুনের সীমান্ত সংঘর্ষ থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্ক ভারতীয় সেনাও। তাই এবার দেশএ তৈরি দুটি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারকে লাদাখ সীমান্তে পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, অ্যাপাচে ও চিনুক কপ্টারের চেয়েও দ্রুতগামী ও আক্রমণাত্মক এই এলসিএইচ কপ্টার গালওয়ান উপত্যকা, পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকাগুলোর উপর দিনে-রাত চক্কর কাটবে।
লাদাখে আগেই চিনুক হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে ভারত। দৌলত বেগ ওল্ডিতে রাতের গভীর অন্ধাকারে ইতিমধ্যে আকাশে চক্কর কেটে তারা চিনা সেনার গতিবিধির উপর নজর রাখছে। অন্যদিকে রাতের বেলা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কড়া নজরদারির জন্য রাফাল জেটগুলিকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। তবে রাফাল সীমান্তে পৌঁছনোর আগেই পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকায় কড়া নজরদারি চালাতে দুটি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারকে সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হল।
এই এলসিএইচ কপ্টারগুলি তৈরি হয়েছে একেবারে দেশিয় প্রযুক্তিতে। বানিয়েছে ভারতের যুদ্ধবিমান নির্মাতা সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হ্যাল)। সংস্থার চেয়ারম্যান আর মাধবন জানান, সীমান্তে বিদেশি কপ্টারের থেকেও বেশি নির্ভরযোগ্য দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার।জানা যাচ্ছে চলতি বছরের শেষেই হ্যালের থেকে এমন আরও ১৫টি হেলিকপ্টার কিনতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। হ্যালের চেয়ারম্যান মাধবন বলেন, সেনা ও বায়ুসেনার আরও অন্তত ১৬০টি এমন হেলিকপ্টার প্রয়োজন। আমেরিকার অ্যাটাক কপ্টারের চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক এই এলসিএইচ কপ্টার।
আরও পড়ুন: উপত্যকায় ফের সেনার অভিযান, পুলওয়ামায় এনকাউন্টারে খতম জঙ্গি, শহিদ হলেন জওয়ানও
কার্গিল যুদ্ধের পরেই এমন লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টের প্রোটোটাইপ তৈরি করে হ্যাল। উঁচু পাহাড়ি এলাকায় ওজনে হাল্কা অথচ ক্ষিপ্র গতির এয়ারক্রাফ্ট প্রয়োজন ছিল বায়ুসেনার। ২০০৬ সালে হ্যাল ঘোষণা করে ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনার জন্য এমন রোটোক্রাফ্ট তৈরি করছে তারা। ইতিমধ্যে সিয়াচেনের উঁচু পাহাড়ি এলাকার হেলিপ্যাডে ল্যান্ড করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছে এলসিএইচ রোটোক্রাফ্ট। হ্যাল জানিয়েছে, ১৩ থেকে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতার হেলিপ্যাডেও অনায়াসে অবতরণ করতে পারে এই হেলিকপ্টার।
ধ্রুব অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার তথা হ্যাল-ধ্রুবের আপডেটেড ভার্সন হল হ্যাল এলসিএইচ। যে কোনও আবহাওয়ারতেই দিন-রাত কাজ করতে পারে এই হেলিকপ্টার। টেস্ট-ফ্লাইটেও সাফল্যের সঙ্গে পাশ করেছে এলসিএইচ। ইতিমধ্যে হ্যালের তৈরি রুদ্র কপ্টারও মোতায়েন করা হয়েছে সীমান্তে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সশস্ত্র রুদ্র কপ্টারের শক্তি ও প্রযুক্তি মার্কিন অ্যাপাচেকেও হার মানাবে।