সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে দুই রূপান্তরকামীকে নিয়োগ করল তেলঙ্গানা সরকার। রাজ্য সরকারের ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে ওই দুজনকে
৩৭৭ ধারা লাগু হওয়ার পর থেকেই সমাজের প্রান্তিক মানুষদের সামাজিক স্বীকৃতি দিয়েছিলো সরকার। তার অনেক আগে থেকেই তাদের পড়াশুনা শিখিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করার উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে প্রচুর কাজ হয়েছে। এইসব প্রান্তিক মানুষদের মূলস্রোতে ফেরানোর যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছিলো সরকার অবশেষে হলো তার সার্থক রূপায়ণ। এবার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে দুই রূপান্তরকামীকে নিয়োগ করল তেলঙ্গানা সরকার।
সমাজে এখন তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে। আগেকার মতো সেই পুরোনো ধ্যান ধারণা ঝেড়ে ফেলে সমাজ এখন এগোচ্ছে নতুন দিশায়। তার মাঝেই তৃতীয় পরিসরের মানুষদের এমন সামাজিক স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে নজির গড়লো ভারতবর্ষে। তেলঙ্গানার দুই রূপান্তরকামী মহিলা প্রাচী রাঠোর এবং রুথ জন পলকে রাজ্য সরকারের ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে শনিবার।
জানা গেছে এলাহাবাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২০১৫ সালেই ডাক্তারি পাশ করেছিল প্রাচী।শনিবার সরকারি নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে চোখের জল বাঁধ ভাঙলো প্রাচীর। তিনি বলেন ,'প্রতিটি রূপান্তরকামীর মতোই আমার জীবনও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বন্ধু, পরিবার, স্কুল, কলেজ সর্বত্র হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে আমাকে। আমাকে কেউ উৎসাহ দেয়নি কিন্তু আমি চাই আমাকে দেখে আমার মতো মানুষরা স্বপ্ন দেখতে শিখুক।'
সরকারি হাসপাতালে চাকরি পেয়ে আপ্লুত রুথও । তিনি বলেন যে ছোটবেলা থেকে বিদ্রুপ এবং ব্যঙ্গের শিকার হতে হয়েছে তাকে । তবু সব কিছু ভুলে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন তিনি , এইভাবেই শুরু হয়েছিল তার চিকিৎসক হবার জার্নি । বন্ধু, পরিবার এবং সমাজের ছোড়া তিরে বিদ্ধ হতে হয়েছে তাকে প্রতি দিন। কিন্তু তবুও হাল ছাড়েনি সে। সেদিন সাফল্যের সেই সোপানে পৌঁছে তার শিক্ষকদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি। কারণ তাদের অপরিসীম উৎসাহ ছাড়া তিনি কোনোমতেই এই জায়গায় পৌঁছতে পারতেন না বলে ধারণা তার।