মাতৃদিবসে লকডাউনের বলি কাশ্মীরি মা ও গর্ভস্থ শিশুর, হেল্পলাইন নিয়েই উঠল প্রশ্ন

রবিবার বিশ্ব মাতৃ দিবস

আর এই দিনেই লকডাউনের বলি হলেন এক কাশ্মীরি মা ও শিশু

তাঁর মৃত্যু তুলে দিল অনেক প্রশ্ন

সরকারি হেল্পলাইন নম্বর কি আদৌ কাজ করে

রবিবার বিশ্ব মাতৃ দিবস। আর এই দিনেই বেদনাদায়ক পরিণতি হল কাশ্মীরের এক মা ও শিশুর। যার পর লকডাউনে নাগরিকদের সহায়তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে হেল্পলাইন নম্বরগুলি গুলি তৈরি করা হয়েছে সেগুলির কার্যকারিতা নিয়েই বড় প্রশ্ন উঠে গেল।

জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মীরের পীর পঞ্চাল অঞ্চলের ওই ২৬ বছর বয়সী হতভাগ্য মহিলার নাম মাসরাত জান। তাঁর স্বামী রেয়াজ আহমেদ মুঘলু জানিয়েছেন, এদিন সকালে বাড়িতেই তাঁর স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়েছিল। পার্বত্য উপত্যকায় তাঁদের বাড়ি, লকডাউনে স্ত্রীকে ওই অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা ঝুঁকির হবে মনে করে তাঁরা বাড়িতেই প্রসবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মাসরাত এক অপরিণত মৃত সন্তানের জন্ম দেন এবং তারপর থেকে তাঁর নিজেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।   

Latest Videos

পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে নিরুপায় হয়ে দৌলতাবাদের পার্বত্য অঞ্চল থেকে ঘরোয়াভাবে তৈরি বাঁশের স্ট্রেচারে করে মনজমো-তে নামিয়ে আনা হয় মাসরাত জান-কে। সেখানে তাঁদের প্রায় পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল একটি গাড়ি পাওয়ার জন্য, যাতে করে তাঁকে সবচেয়ে কাছের হাসপাতাল, কোয়াজিগুন্ড ট্রমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। এই সময় সাহায্যের জন্য তাঁরা বেশ কয়েকটি সরকারি সঙ্কট এবং হেল্পলাইন নম্বরে ডায়াল করেছিলেন। অভিযোগ, কোনওটি থেকেই কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

শেষ পর্যন্ত একটি প্রাইভেট গাড়ি জোগার করে তাঁরা মাসরাত-কে কোয়াজিগুন্ড ট্রমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মাসরাত-এর অবস্থা দেকেই তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে অনন্তনাগের সরকারী মেডিকেল কলেজের প্রসূতি ও শিশু বিভাগে স্থানান্তরিত করেন। সেখানে নিয়ে যাও.ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

অনন্তনাগের সরকারী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাক্তার শওকত গিলানী বলেছেন, ওই মহিলাকে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর অবস্থার ব্যাপক অবনতি হয়েছিল। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাঁর মতে বাড়িতে প্রসবের সিদ্ধান্তের জন্যই তাঁর এই পরিণতি। মাসরাত-কে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় কর্তব্যরত ডাক্তার কুরাত বলেছেন, মৃত্যুর কারণ নিয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন, তবে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তাঁদের মনে হয়েছে ফুসফুসের স্ফিতি।

করোনভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে মাসরাত-এর দেহ তাঁর স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর মৃত্যু তুলে দিয়েছে অনেকগুলি প্রশ্ন। আবদুল রশিদ নামে তাঁর এক আত্মীয়ের অভিযোগ, অনন্তনাগের চিকিত্সা সরকারী মেডিকেল কলেজে তাঁকে আগে ভর্তি করা হয়েছিল। ককিন্তু গত ৭ মে তাঁর শারীরিক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। এই অবহেলাই মাসরাত-এর মৃত্যুর কারণ।

তবে, দৌলতাবাদের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আসল কারণ হল দৌলতাবাদের প্রতি প্রশাসনের উদাসীনতা। তাঁদের অভিযোগ সবাই ভোটের আগে একবার করে আসেন, অনেক কিছু প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু, ভোট মিটলে আর তাঁদের দেখা যায় না। স্বাস্থ্যসেবা এবং রাস্তার মতো পরিকাঠামোগত প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত। নাহলে মাসরাতের এবং তাঁর গর্ভের সন্তানের এই পরিণতি হতো না।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

শীতের রাতে যমুনার আতঙ্ক! একের পর এক জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাঘিনী | Bandwan Tiger News
চমকে উঠবেন! কৃষ্ণনগর পক্সো আদালতের বড় সাজা ঘোষণা | Nadia Latest News
জঙ্গি গ্রেফতারে কড়া বার্তা মিঠুনের | Mithun Chakraborty #shorts #mithunchakraborty #shortsvideo
Viral Video! আবাসের টাকা ঢুকতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাটমানি চাইছেন TMC কর্মী | Murshidabad Latest News
'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari