সিএএ-তে নাগরিকত্ব পেতে লাগবে ধর্মের প্রমাণ, অসম-ই এখন অমিত শাহ-এর অস্বস্তি

তিন প্রতিবেশী দেশের অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে।

সিএএ-র পিছনে কেন্দ্রের এটাই যুক্তি।

কিন্তু তা পাওয়ার জন্য উদ্বাস্তুদের ধর্মের প্রমাণ লাগবে।

সিএএ-র সঙ্গে অসম চুক্তি-কে মেলানোটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

 

পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান - এই তিন দেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুদের সহজে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আনা হয়েছে। বারবার করে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির সর্বস্তর থেকে এই দাবি আওড়ানো হচ্ছে। কিন্তু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, তাতে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়াটা, 'হাত ঘোড়ালে নাড়ু পাবে'-র মতো সহজ হবে না। লাগবে বেশ কিছু নথিপত্র।

ইতিমধ্যেই সিএএ কার্যকর করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মতো বেশ কিছু রাজ্যে সিএএ-র অধীনে কারা কারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারেন তার তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কিসের ভিত্তিতে তিন প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য বলে চিহ্নিত করা হবে, তাই স্পষ্ট নয়। বর্তমানে এই বিষয়ে খসড়া বিধি তৈরি করছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আর সেখানেই এই বিভিন্ন প্রমাণাদির প্রসঙ্গ থাকছে বলেই দাবি করেছে মন্ত্রকের একটি সূত্র।

Latest Videos

জানা গিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে গেলে এই তিন দেশ থেকে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুদের প্রথমেই তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রমাণ দিতে হবে। এছাড়া হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন বা পার্সি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের নথিপত্র দিয়ে প্রমাণ করতে হবে তারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে ভারতে প্রবেশ করেছে।

ধর্মের প্রমাণ হিসেবে, যে কোনও সরকারি দলিল, যেখানে আবেদনকারী তার ধর্ম ঘোষণা করেছেন তা গৃহীত হবে। ধরা যাক কেউ তার বাচ্চাদের সরকারী স্কুলে ভর্তি করেছেন। ভর্তির সময় তাঁদের ধর্ম উল্লেখ করতে হয়েছে। সেই নথিও তার ধরীয় বিশ্বাসের প্রমাণ হিসেবে দাখিল করা যাবে। আর ভারতের প্রবেশের সময়ের প্রমাণ হিসেবে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে আধার কার্ড বা অন্য কোনও সরকারি পরিচয়পত্র অর্জন করেছে বলে দেখাতে হবে আবেদনকারীদের।

তবে, এখনও স্পষ্ট নয় যে বিষয়টি তা হল, আবেদনকারীরা যে স্বদেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়েই ভারতে পালিয়ে এসেছেন তা কিসের ভিত্তিতে বোঝা যাবে। ধর্মীয় নির্যাতন না অন্য কোনও কারণে ভারতে এসেছেন তাঁরা, তা বোঝার ভিত্তি কি হবে তা এখনও জানা যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রেও এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এর সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে 'অসম চুক্তি' নিয়ে সমস্যা।

'অসম চুক্তি' অনুসারে যে সমস্ত অবৈধ উদ্বাস্তু ১৯৭১ সালের পর ভারতে প্রবেশ করেছে এবং অসমে বসবাস করছে, তাদের ধর্ম নির্বিশেষে অবৈধ উদ্বাস্তু হিসেবে সনাক্ত করে বন্দি শিবিরে পাঠানোর কথা। অথচ সিএএ-তে অমুসলিম উদ্বাস্তুদের ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তাই, সিএএ অসম চুক্তির বিধান লঙ্ঘন করছে, বলে এই আইনের বিরুদ্ধে অসমে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে।

এর সমাধানে আগেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সিএএ-র অধীনে আবেদনের জন্য অসমের অমুসলিম উদ্বাস্তুদের সীমিত সময় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তা মেনেই তাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতেমাত্র তিন মাস সময় দেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে। সেটিও অসমবাসী কতটা মেনে নেবেন তাই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ মাত্র কয়েক মাস আগেই সব কাজ ফেলে জাতীয় নাগরিকপঞ্জীতে নাম তোলার জন্য তাদের হত্যে দিতে হয়েছে। পরের কয়েকমাসেই যদি সেই কৃচ্ছসাধন মূল্যহীন হয়ে যায়, তা মেনে নেওয়া কঠিন

 

Share this article
click me!

Latest Videos

চার হাজার ভোটে হেরে গিয়েও MLA সুকান্ত পাল! বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি তৃণমূল নেতার
Basanti News: আবাস যোজনার ঘর থেকে বঞ্চিত প্রাপকরাই! TMC-র বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ BJP-র | Canning
ভেজাল স্যালাইন কাণ্ডে মমতার গ্রেফতারির দাবিতে প্রতিবাদ যাত্রা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari News
Netaji Subhash Chandra Bose-কে সামনে রেখে শুধুই ফায়দা লুটছে রাজনৈতিক দলগুলি? দেখুন
Kolkata-র বুকে ফের বহুতল বিপর্যয়! Tangra-এ হেলে পড়লো আস্ত ৬ তলা বিল্ডিং, আতঙ্কে গোটা এলাকা | Kolkata