উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জ জেলার একটি থানার ভিতরে ২২ বছর বয়সী আলতাফের মৃত্যুর ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ (UP Police) হেফাজতে তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত উত্তর প্রদেশ। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কাসগঞ্জ জেলার (Kasganj district) একটি থানার ভিতরে ২২ বছর বয়সী আলতাফের মৃত্যুর ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের (Unknown People) বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে একটি এফআইআর (first information report) ও দায়ের করা হয়েছে।
আলতাফের বাবা চাঁদ মিয়ার লিখিত অভিযোগের পরে এফআইআর দায়ের করা হয়। এফআইআরে বলা হয়েছে যে ওই ব্যক্তি পুলিশ স্টেশনের ওয়াশরুমের একটি কলে তার জ্যাকেটের স্ট্রিং দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করার পরে মারা যায়। ইটাহের পুলিশ প্রধান রোহন প্রমোদ বোত্রে একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন একজন অতিরিক্ত এসপির নেতৃত্বে একটি বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও, পাঁচজন পুলিশ কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি ম্যাজিস্ট্রিয়াল তদন্ত শুরু করা হয়েছে। শনিবার রেজিস্ট্রির মাধ্যমে একটি অভিযোগ পায় পুলিশ। এর ভিত্তিতে ৩০২ ধারার অধীনে এফআইআর দায়ের করা হয়।
আলতাফের পরিবার তাদের ছেলেকে হত্যার জন্য পুলিশকে অভিযুক্ত করেছে, কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে সে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু সেখানে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কেন এফআইআর 'অজানা' লোকেদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। পুলিশের আত্মহত্যা তত্ত্বে একাধিক ত্রুটি রয়েছে, যার মধ্যে আলতাফের বাবার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রশ্ন তুলছে। ওই চিঠিতে আলতাফের বাবার বুড়ো আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এই চিঠিতে ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা লেখা রয়েছে।
বুধবার রাতেই এই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এটি প্রথম কে পোস্ট করে, তা জানা যায়নি। আলতাফের বাবা বলেন "আমি নিরক্ষর। চিঠির বিষয়বস্তু কী ছিল তা আমি জানতাম না। সিও (ইউপি পুলিশের সার্কেল অফিসার) এর পীড়াপীড়িতে আমি এতে আমার থাম্বপ্রিন্ট রেখেছিলাম। আমি বিচার চাই,"।
Rahul Gandhi-হিন্দুত্ব মানেই শিখ-মুসলিমকে পেটানো, বিজেপিকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর
Climate Summit-জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় ২১টি দেশ, কোন প্রশ্নে এককাট্টা ভারত-চিন
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে এক হিন্দু মহিলাকে অপরহণের অভিযোগে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দা আলতাফকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। থানার লকআপেই জিজ্ঞাবাদ করা হচ্ছিল তাঁকে। জিজ্ঞাসাবাদেরর সময়ই আলতাফ শৌচাগারে যেতে চেয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীরা তাঁকে সেই অনুমতি দিয়েছিল। লকআপের শৌচাগারেই পাঠান হয়েছিল তাঁকে। কিছুক্ষণপরে শৌচাগারেই অচেতন অবস্থায় তাঁকে দেখতে পায় পুলিশ। উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ নিহতের পরিবার। নিহতের বাবা কাতান মিঞার দাবি তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন সোমবার রাত ৮টায় পুলিশ তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল। স্থানীয় থানায় নিয়ে গিয়েছিল। তারপর তিনিও থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেনি। উল্টে দুর্ব্যবহার করেছিল। গ্রেফতারের কপি দিয়ে দ্বিতীয় থানায় যাতে তিনি আর না যান তার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের তিনি ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। তাঁর ছেলে নির্দোষ। অতীতেও তাঁর ছেলে কোনও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি। আলতাফের পরিবারের সদস্যদের দাবি উত্তর প্রদেশ পুলিশ তাঁর ছেলেকে বিনা বিচারে আচকে রেখেছিল। সোমবার গ্রেফতারির পর মঙ্গলবার ম্যাডিস্ট্রেটের সামনে আলতাফকে হাজিরও করায়নি। পুলিশ লকআপে আলতাফকে খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।