পঞ্জাবের ভোট ঘোষণার ঠিক কয়েক মিনিট আগেই এই পদক্ষেপ করে কংগ্রেস সরকার। সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বদলে পঞ্জাবের নতুন পুলিশ প্রধান হলেন ভিকে ভাওরা।
বুধবার পঞ্জাবের ফিরোজপুরে (Firozpur) যাওয়ার পথে অবরোধের মুখে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) কনভয়। পঞ্জাবের ডিজিপি নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন সম্পূর্ণ বলে, নিশ্চিত করার পরই রওনা দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয় (Modi Convoy)। তার পরেও তাঁর চলার পথে বিক্ষোভকারীরা কীভাবে এল, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। প্রশ্নের মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা। আর এনিয়ে এখন সরগরম রয়েছে জাতীয় রাজনীতি। ইতিমধ্যেই এনিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই এবার বদল করা হল পঞ্জাব পুলিশের ডিজিপিকে (Punjab Director General Of Polic)। পঞ্জাবের ভোট ঘোষণার ঠিক কয়েক মিনিট আগেই এই পদক্ষেপ করে কংগ্রেস সরকার। সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বদলে পঞ্জাবের নতুন পুলিশ প্রধান হলেন ভিকে ভাওরা (VK Bhawra)।
বুধবার পঞ্জাবে একাধিক প্রকল্পের (Various Project) উদ্বোধনের জন্য সকালে ভাতিন্ডায় (Bathinda) নেমেছিলেন মোদী। এরপরেই শুরু হয় যাত্রাপথের বিভ্রাট (Security breach)। ভাতিন্ডা থেকে হেলিকপ্টারে হোসেনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, বৃষ্টি এবং দুর্বল দৃশ্যমানতার কারণে, প্রায় ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করতে হয় মোদীকে। কিন্তু, তারপরও আবহাওয়ার কোনও উন্নতি হয়নি। তখন বলা হয়েছিল সড়কপথে তিনি গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এরপরেই পঞ্জাব পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। যাত্রা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু, হুসাইনিওয়ালায় জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে, যখন প্রধানমন্ত্রীর কনভয় একটি ফ্লাইওভারে পৌঁছয় ঠিক সেই সময় দেখা যায় যে কয়েকজন বিক্ষোভকারী (Agitation) রাস্তা অবরোধ করেছে। এই অবরোধের (Roadblock) জেরে আটকে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট কনভয় আটকে থাকে ফ্লাইওভারে। এভাবে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ক্ষুদ্ধ হয়ে নিজের যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করে ফের ভাতিন্ডা বিমানবন্দরে ফিরে যান তিনি। এরপরই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Union Home Ministry) দাবি করে, ফিরোজপুরের ওই ঘটনা আসলে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় বড়সড় গলদ। পঞ্জাব সরকার তথা পাঞ্জাব পুলিশ যৌথভাবে এই গাফিলতির জন্য দায়ী।
তবে গাফিলতির তত্ত্ব মানতে নারাজ পঞ্জাব সরকার। তাদের যুক্তি, শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর রুট বদলের ফলে তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু, তাতে তাঁর প্রাণভয় ছিল না। বরং তিনি সফর বাতিল করেছেন ফিরোজপুরের সভায় লোক না হওয়ায়। এদিকে গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করলেও চাপ বাড়ছিল রাজ্য সরকারের উপরে। কারণ কেন্দ্রের দেওয়া নথি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর রুট বদলের কথাও আগে থেকেই জানত পঞ্জাব সরকার। সেক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করা যাচ্ছে না। আর এনিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিদায়ী ডিজিপি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তৈরি করা কমিটি। আর তারপরই সিদ্ধার্থের পরিবর্তে নতুন ডিজিপি করা হয় ভিকে ভাওরাকে। বদল করা হয়েছে ফিরোজপুরের এসএসপিকেও। ১৯৮৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার ভিকে ভাওরা।
আরও পড়ুন- কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াইয়ে আপ-বিজেপির, কেমন ছিল ২০১৭ সালের পঞ্জাব বিধানসভার ফল
নতুন পুলিশ প্রধান পদে নিযুক্ত হওয়ার পর ভিকে ভাওরা জানিয়েছেন, "নির্বাচনে যাতে কোনও বাধা না আসে, সে দিকে নজর দেবেন। প্রযুক্তির ব্যবহার করে অপরাধ দমনে কাজ করবে পুলিশ।" এছাড়াও ফিরোজপুরের এসএসপি আইপিএস হরমনদীপ সিং হানসকে লুধিয়ানায় বদলি করা হয়েছে। ফিরোজপুরের নতুন এসএসপি হলেন নরিন্দর ভার্গভ। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে ভোটের আগে ডিজিপি বদলের ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।