ইউরোপের একের পর এক তাবড় তাবড় দেশ ব্রিটেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, রাশিয়া, জার্মানি যখন করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, তখন পথ দেখাল ছোট্ট দেশ স্লোভেনিয়া। ইউরোপের প্রতম দেশ হিসাবে করোনাভাইরাসের ফলে তৈরি হওয়া মহামারী পরিস্থিতির ইতি ঘোষণা করল এই দেশ। শুক্রবার দেশের প্রধানমন্ত্রী জ্যানেজ জানসার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, ইউরোপে আজ পর্যন্ত করোনা মহামারীতে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে স্লোভেনিয়া। যা সাধারণভাবে আমাদের মহামারি ঠেকাতে সক্ষম করেছে।
প্রশাসনের তরফে জানান হয়েছে, স্লোভেনিয়াতে সব কিছুই এখন স্বাভাবিকভাবে চলবে। বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন পথে নামবে। এমনকি রাজধানী লুবলিয়ানাতে অবস্থিত দেশটির একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইয়োজে পুচনিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকেও ফ্লাইট চলাচলের ব্যাপারে এখন থেকে আর কোনও নিষেধাজ্ঞা রইল না।
একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত ৪২ জন, প্রশাসনের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল হাওড়ার বস্তি
করোনার আঁতুরঘর চিনকে এবার পেছনে ফেলে দিল ভারত, বিশ্বের ক্রম তালিকায় উঠে এল ১১ নম্বরে
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন পাঠিয়েছিলেন মোদী, ভেন্টিলেটর দিয়ে এবার ঋণ শোধ করছেন ট্রাম্প
সব ধরনের বার, রেস্তোরাঁ, কফিশপ ইতিমধ্যে খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী সোমবার থেকে স্লোভেনিয়াতে করোনাভাইরাসের কারণে যে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল, সেসব প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানই আগামী সোমবার থেকে খুলতে যাচ্ছে।
পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে প্রতিবেশি দেশ যেমন- ইতালি, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং হাঙ্গেরির সঙ্গেও স্লোভেনিয়ার সীমান্ত সংযোগ পুনরায় খুলে দেওয়ার কথা জানান হয়েছে। এখন থেকে চাইলে অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা স্লোভেনিয়ার রুট ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশের নাগরিক নন এমন কেউ যদি স্লোভেনিয়ায় প্রবেশ করেন তাহলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের ক্ষেত্রে এখানে কোনও বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহামারী পরিস্থিতির ইতি টানার ঘোষণার পর দেশটিতে বসবাসরত নাগরিকদের জীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনেক নাগরিককেই উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা গেছে। তবে জ্যানেজ জানসার মনে করিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি যতোই স্বাভাবিক হোক না কেনও এখনও আশঙ্কা কিছুটা হলেও রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ যাদি যথার্থ সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি মাথায় না রাখেন তাহলে যে কোনও সময় গত শতাব্দীর দ্বিতীয় ধাপে স্প্যানিশ ফ্লু-এর মতো মহামারী পরিস্থিতি স্লোভেনিয়াতে আবারও তৈরি করতে পারে করোনাভাইরাস।
স্লোভেনিয়ায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৪ মার্চ। জানা যায়, ওই ব্যক্তি প্রতিবেশী ইতালি থেকে স্লোভেনিয়ায় আসেন। পরে ১২ মার্চ দেশজুড়ে মহামারী ঘোষণা করা হয়। স্লোভেনিয়ায় এখনও পর্যন্ত ১, ৪৬৭ জন করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে এবং মারা গিয়েছেন ১০৩ জন। তবে গত দু’সপ্তহ ধরেই দেশটিতে দৈনিক ৭ জনেরও কম মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ২০ এপ্রিল থেকেই লকডাউন শিথিল করতে শুরু করেছিল স্লোভেনিয়া।