পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ ছিল নয়া পাক সেনাপ্রধান আসীম মুনিরের, ভারতের ঝুঁকি কি আরও বাড়ল?

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের (এনএসএবি) সদস্য এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের বিশেষ সচিব হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত তিলক দেবাশের দাবি করেছেন যে আসীম মুনির পাকিস্তানের সেই ব্যক্তিদের মধ্যে একজন যারা ২০১৯ সালে পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।

Web Desk - ANB | Published : Nov 25, 2022 2:06 PM IST

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে দেশের নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন মুনির। কামার জাভেদ বাজওয়া ২৯ নভেম্বর অবসরে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন নতুন সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিতর্কের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তার উদ্দেশ্য ভারতের জন্য কখনোই ভালো ছিল না।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের (এনএসএবি) সদস্য এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের বিশেষ সচিব হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত তিলক দেবাশের দাবি করেছেন যে আসীম মুনির পাকিস্তানের সেই ব্যক্তিদের মধ্যে একজন যারা ২০১৯ সালে পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।

তিলক দেবাশের বলেছেন যে পুলওয়ামা হামলার সময় তিনি আইএসআই-এর ডিজি ছিলেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় হামলা হয়েছিল। পুরো ঘটনাটি তার নজরে ছিল। আসীম মুনীর কাশ্মীরের উপর কড়া নজরদারি অফিসার ছিলেন। তিনি সেইসব সীমান্ত এলাকায় কাজ করেছেন যেগুলো ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আসীম মুনির ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের সাথে পরিচিত

আসীম মুনীর ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের সাথে পরিচিত। এমন পরিস্থিতিতে ভারতকেও তাদের প্রতিটি গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হবে। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন।

তিলক দেবাশের বলেছেন, ভারতের প্রতি পাকিস্তানের কোনো সেনাপ্রধানের খুব বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নেই। এই ধারাবাহিকতা ভাঙবেন না আসীম মুনির। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব অবলম্বন করে থাকবেন। তিলক দেবাশের বলেছেন, পাকিস্তানে সমস্যা বাড়লে তা মোকাবেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধানের মনোভাবও ভারতের জন্য খুব একটা সদর্থক নয়। আমেরিকা ও চিনের প্রতিও তার মনোভাব আগের মতোই থাকবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুনির অফিসার্স ট্রেনিং স্কুলের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জেনারেল বাজওয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তিনি আইএসআই জেনারেল ডিরেক্টর পদে নিযুক্ত হন। গত বছরের অক্টোবরে ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) প্রধান করা হয়।

শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে তার মেয়াদ ছিল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চাপে আট মাসের মধ্যে তাকে এই পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং তার জায়গায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে নিয়োগ করা হয়।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সৈন্য মোতায়েন, নিয়োগ ও স্থানান্তরের ক্ষমতা রয়েছে। এ কারণেই সেনাবাহিনীতে সেনাপ্রধানকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানে সেনাবাহিনীকে অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানের অস্তিত্বের ৭৫ বছর হয়ে গেছে এবং দেশটি অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে সেনাবাহিনী দ্বারা শাসিত হয়েছে। নিরাপত্তা ও বিদেশনীতিতে সেনাবাহিনীর অনেক হস্তক্ষেপ রয়েছে।

নতুন সেনাপ্রধানের নিয়োগ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ অনেকেই মনে করেন যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমাবেশ সেনাবাহিনীতে কমান্ড পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। তিনি তার সমর্থকদের ২৬ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে জড়ো হতে বলেছেন, যার দুই দিন পরে জেনারেল বাজওয়া নতুন সেনাপ্রধানের কাছে কমান্ড হস্তান্তর করবেন।

Share this article
click me!