ইমরান খানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তান মসনদ থেকে। এবার ইমরান খানতে দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা।
প্রধানমন্ত্রীর পদ গেছে। এবার যেতে পারে দলীয় প্রধানের পদও। তেমনই রাস্তা তৈরি করছেল পাকিস্তান। ইমরান খানের রাজনৈতিক জীবনে ইতিটানতে মরিয়া নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার পারিস্কানের নির্বাচন কমিশন তোষাখানা-কাণ্ডে ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে পাকিস্তানের তেহরিক-ই -ইনসাফ পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা ডন পত্রিকাকে বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে একটি নোটিশ পাঠান হয়েছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি প্রচুর মূল্যবান সামগ্রী বিভিন্ন দেশে থেকে উপহার পেয়েছিলেন। সেগুলি তিনি সরকারকে না জানিয়ে ব্যক্তিগত কারণে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপহারগুলি মূলত দেশের সম্পত্তি।
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর হিসেবে পাওয়া সব উপহারই তোষাখানায় রাখতে হবে। তবে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে সেগুলি তোষাখানা থেকে কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে তা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। তোষাখানায় মামলায় ইমরামের বিরুদ্ধে মিথ্যা বিবৃতি ও ভুল ঘোষণা করার অভিযোগও রয়েছে। ১৯৭৪ সালের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় ডিপোজিটরির হিসেব অনুযায়ী ২১.৫ মিলিয়ন টাকায় সেগুলি বিক্রি করা হয়েছে। যদিও সেগুলির মূল্য প্রায় ১০৮ মিলিয়ন ।
যদিও পিটিআই-এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, কোনও আইনই অপরাধীকে কোনও রাজনৈতিক দলে প্রধান বা পদাধিকারী হতে বাধা দিতে পারে না। যদিও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ ২০১৮ সালে একটি মামলার রায়ে বলেছিল, পাকিস্তান সংবিধানের ৬২ ও ৬৩ নম্বর ধারায় কোনও অযোগ্য ব্যক্তি একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে পারে না। এই আইনের বলেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল।
অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষম হারানো প্রধানমন্ত্রী সোমবার মার্কিন সাইফার সম্পর্কি অডিও ফাঁসের বিষয়ে সরকারের তদন্তের দাবি নিয়ে লাহোর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ইমরান খানকে নিয়ে রীতিমত বিধ্বস্ত শাসকদল। কারণ তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও তিনি অদম্য। সবকিছু নতুন করে শুরু করে পাকিস্তানের নাগরিকদের মন জিতে নিচ্ছেন। তাঁর লংমার্চ রীতিমত সফল। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ পাশে রয়েছেন ইমরানের। এই অবস্থায় তাঁকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারলেই কেল্লা ফতে পাকিস্তানের শাসকদলের। কারণ আগামী বছরই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে শাসকদলের পথের কাঁটা ইমরান খান। তাই এখন থেকেই তোষাখানা মামলায় ইমরানকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।