১৮০ ডিগ্রি ঘুরে এবার সমর্থন ইউক্রেনকে ! পশ্চিমী দেশগুলির কাছ থেকে ভিক্ষে পেতে নয়া কৌশল পাকিস্তানের

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, পশ্চিমী দেশগুলো এর সুযোগ নিচ্ছে। আমেরিকা চাইছে পাকিস্তানের সাহায্যে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে যাতে চিন ও রাশিয়ার মধ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়। এছাড়া পাকিস্তানের মাধ্যমে ইউক্রেনে সহজেই যুদ্ধ অস্ত্র সরবরাহ করা সম্ভব।

Web Desk - ANB | Published : Mar 21, 2023 9:57 AM IST

অর্থনৈতিক মন্দার মুখে থাকা পাকিস্তান বিদেশি ঋণের জন্য পশ্চিমী দেশগুলোকে খুশি করার চেষ্টা শুরু করেছে। এ জন্য পাকিস্তান নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে। এক বছর আগে পর্যন্ত যে পাকিস্তান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিল, হঠাৎ করেই তার পক্ষ পরিবর্তন হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পাকিস্তান এখন ইউক্রেনকে যুদ্ধের জন্য ট্যাঙ্ক দেওয়ার কথা ভাবছে। বলা হচ্ছে, পাকিস্তান ইউক্রেনে ৪৪ টি-৮০ইউডি মেন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি) পাঠাতে পারে। বিশেষ বিষয় হলো, পাকিস্তান ১৯৮০-এর দশকে ইউক্রেনের কাছ থেকে এই ট্যাংকগুলো কিনেছিল।

এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে এক বছরে এমন কী ঘটল যে পাকিস্তান তার দিক পরিবর্তন করল? এই কোন মার্কিন কৌশল আছে? এতে পাকিস্তানের কী লাভ হবে? চলুন জেনে নিই।

আসলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। মূল্যস্ফীতি বিপাকে ফেলেছে সাধারণ নাগরিকদের। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রাও শেষ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে তেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানিতেও সমস্যায় পড়েছে পাকিস্তান। শুরুতে চিন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো ইসলামিক দেশগুলোর সামনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় পাকিস্তান। কিন্তু খুব একটা সাহায্য করেনি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল অর্থাৎ আইএমএফও পাকিস্তানের সামনে অনেক কঠিন শর্ত দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই অর্থনৈতিক মন্দায় ভেঙে পড়ছে পাকিস্তান।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, পশ্চিমী দেশগুলো এর সুযোগ নিচ্ছে। আমেরিকা চাইছে পাকিস্তানের সাহায্যে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে যাতে চিন ও রাশিয়ার মধ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়। এছাড়া পাকিস্তানের মাধ্যমে ইউক্রেনে সহজেই যুদ্ধ অস্ত্র সরবরাহ করা সম্ভব।

এক বছর আগে পর্যন্ত যে পাকিস্তান রাশিয়ার পাশে ছিল, এখন ইউক্রেনকে যুদ্ধে সাহায্য করার কথা ভাবছে। যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ছাড়াও পাকিস্তান থেকে ইউক্রেনকে গোলাবারুদ ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২,৪৬৭টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক খুবই দৃঢ়। দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও শিল্প সম্পর্ক রয়েছে।

পাকিস্তান পূর্ব ইউরোপীয় দেশ থেকে ৩২০টিরও বেশি T-80UD ট্যাঙ্ক কিনেছিল, এটি সোভিয়েত T-80-এর আপগ্রেডেড সংস্করণ। পাকিস্তান এবং ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তিতে গোলাবারুদ এবং খুচরো যন্ত্রাংশ সহ T-80UD ট্যাঙ্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি সম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৯১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশ ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন করেছে।

তাহলে আমেরিকার কৌশল কি?

বিদেশনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন 'পশ্চিমী দেশ ও বিশেষ করে আমেরিকার চাপে পাকিস্তান অসহায় হয়ে পড়েছে। পাকিস্তান আর কোনও দেশ থেকে সাহায্য পাবে বলে মনে হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে একমাত্র পশ্চিমী দেশগুলোই এর জন্য আশার আলো। ইউক্রেনকে সাহায্য করে পাকিস্তান পশ্চিমী দেশগুলো থেকে ঋণ পেতে পারে। একই সঙ্গে পশ্চিমী দেশগুলোও এর সুফল পাবে। রাশিয়া সমর্থনকারী একটি দেশ হ্রাস পাবে। এছাড়া করাচি বন্দর থেকেও ইউক্রেনকে সহজে সাহায্য দেওয়া যেতে পারে।

Share this article
click me!