বিশ্বের বড় বড় নেতা, রাজনীতিবিদ ও ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে এর মাধ্যমে। নতুন করে ফাঁস হওয়া এসব আর্থিক নথিতে, বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে অন্তত ৩৫ রাষ্ট্রনেতা এবং বিভিন্ন দেশের তিন শতাধিক সরকারি কর্মকর্তার বিশাল অঙ্কের গোপন লেনদেন এবং সম্পত্তির তথ্য ফাঁস করা হয়েছে।
পানামা পেপার্স (Panama Papers), প্যারাডাইস পেপার্সের পর বিশ্বের কাছে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ্যে এল। বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য রাজনীতিক (Politician), ব্যবসায়ী (Businessman), অভিনেতাদের (Actor) গোপন সম্পদ এবং আর্থিক লেনদেনের গোপন নথি ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে, 'প্যান্ডোরা পেপার্স'।প্যান্ডোরা পেপার্স (Pandora Papers) নাম রয়েছে প্রায় ৩৮০ জন ভারতীয়র। বিশ্বের বড় বড় নেতা, রাজনীতিবিদ ও ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে এর মাধ্যমে। নতুন করে ফাঁস হওয়া এসব আর্থিক নথিতে, বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে অন্তত ৩৫ রাষ্ট্রনেতা এবং বিভিন্ন দেশের তিন শতাধিক সরকারি কর্মকর্তার বিশাল অঙ্কের গোপন লেনদেন এবং সম্পত্তির (assets) তথ্য ফাঁস করা হয়েছে।
প্যান্ডোরা পেপারস ঠিক কি?
ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়াম অফ ইনভেসটিগেটিভ জার্নালিস্টস (ICIJ) সংস্থার উদ্যোগে অন্তত ৬৫০ জন সাংবাদিকের তত্ত্বাবধানে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। মূলত বিবিসি প্যানোরমা, দ্য গার্ডিয়ান-সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংবাদসংস্থার উদ্যোগে গত সাত বছর ধরে চলা এই গোপন তদন্তের নথি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। এই নথিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে বিশ্বের তুখোড় রাজনীতিক, অভিনেতা, ব্যবসায়ী ও ধনীদের একাংশ তথ্য গোপন করে সম্পদের লেনদেন করেছেন, কত পরিমাণ সম্পদ কোথায়, কাদের মধ্যস্থতায় হস্তান্তরিত হয়েছে। সে বিষয়ে অন্তত ১২ কোটির বেশি তথ্য সম্বলিত বিশেষ নথি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন-শচীন থেকে শাকিরা, প্যান্ডোরা পেপার্সে ফাঁস রাঘব বোয়ালদের আর্থিক গোপন লেনদেন
প্যান্ডোরা পেপার্সে কি উল্লেখ করা থাকে?
কীভাবে ধনী, বিখ্যাত ব্যক্তিরা কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ট্রাস্ট তৈরি করেন। তার মাধ্যমেই কর ফাঁকি দেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই এই ধরনের একাধিক ব্যক্তি তদন্তকারী সংস্থার নজরে রয়েছেন। ট্রাস্ট তৈরি করার মধ্যে দিয়ে কীভাবে তাঁরা কর ফাঁকি দেন সেকথার উল্লেখ থাকে এই প্যানডোরা পেপার্সে। নিজেদের পরিচয় গোপন করে যাতে কর ফাঁকি দেওয়া যায় সেই লক্ষ্যেই এই টাস্ট তৈরি করা হয়।
পানামা পেপারের সঙ্গে প্যানডোরার পার্থক্য কোথায়?
মোসাক ফনসেকা নামে পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান কিছু গোপন করফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছিল। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে বড় বড় ব্যক্তিত্বরা কীভাবে সুকৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে নিজেদের সম্পদ বাড়িয়েছেন তার উল্লেখ ছিল পানামা পেপার্সে। অফশোর ট্রাস্টের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার পর এক নতুন পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ এর মাধ্যমে আর্থিক তছরুপ, জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য ও কর ফাঁকি দেওয়া হত। সেকথাই উল্লেখ করা হয়েছে প্যানডোরা পেপার্সে।
আরও পড়ুন- Cyclone Shaheen: ঘূর্ণিঝড় শাহিনে লন্ডভন্ড মরুদেশ ওমান, বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জীবন
ট্রাস্ট কি ?
ট্রাস্টকে একটি বিশ্বস্ত ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে যেখানে একটি তৃতীয় পক্ষ, যাকে ট্রাস্টি বলা হয়, সেই ব্যক্তি বা কোনও সংস্থার পক্ষ থেকে সম্পদ নিয়ে উপকৃত হয়। এটি সাধারণত এস্টেট পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে এবং উত্তরাধিকার পরিকল্পনার জন্য ব্যবহৃত হয়। বড় ব্যবসায়ী পরিবারগুলিকে তাদের সম্পদ একত্রিত করতে সাহায্য করে এই ট্রাস্ট।
ট্রাস্ট কি বেআইনি?
একেবারেই নয়। ভারতীয় ট্রাস্ট আইন ১৮৮২ অনুসারে ট্রাস্টের ধারণাকে বৈধ করা হয়েছিল। যদিও এই ট্রাস্ট তৈরির মাধ্যমেই বহু ব্যবসায়ী কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেন।