ইউরোপে যেকটি দেশে মারণ করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ফ্রান্স। দেশটিতে ইতিমধ্যে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার মানুষের। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৫০০ বেশি। এই অবস্থায় ফরাসি সরকার দেশে লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানোর পথেই হাঁটল।
আরও একমাস পর্যন্ত ফ্রান্সকে লকডাউন করে রাখার ঘোষণা করলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। দেশজুড়ে মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় লকডাউন ১১ মে পর্যন্ত বাড়ান হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে যুদ্ধে এখনও জয় আসেনি, স্বীকার করে নিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
ফ্রান্সে লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৭ এপ্রিল। কিন্তু ইতিমধ্যে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও দেশটিতে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। কমতে শুরু করেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও জটিল, আর সেই কারণেই লকডাউন বাড়িয়ে দিল পশ্চিম ইউরোপের দেশটি।
প্রিসেডন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ জণগণের উদ্দেশ্যে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘মহামারি কমতে শুরু করেছে। আপনারা ফল দেখতে পাচ্ছেন। আপনাদের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন আমরা একটু একটু করে উন্নতি করছি। কিন্তু আমাদের দেশ পুরোপুরিভাবে এই ক্রান্তিকালের জন্য প্রস্তুত নয়। আমাদের আরো সময় নিতে হবে। তাই লকডাউন ১১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলো।’
করোনা যুদ্ধে নতুন গাইডলাইন আনছে কেন্দ্র, মারণ ভাইরাসকে হারাতে দেশবাসীকে ৭টি বান দিলেন মোদীআক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে, নাচতে ব্যস্ত পাক চিকিৎসকরা, ভিডিও শেয়ার করলেন গম্ভীরআসছে কি তবে 'সেকেন্ড ওয়েভ', চিনে নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে ঘনীভূত আশঙ্কার মেঘফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'আপনাদের কাছে এখন সাহায্য চাইছি । যখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব হবে, আমি আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবো। সত্যিই বলছি, এখন আমার কাছে কোনো উত্তর নেই।'
ফ্রান্সে স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে দোকানপাট বন্ধ থাকবে ১১ মে পর্যন্ত । তবে রেস্তোরাঁ, হোটেল, ক্যাফে, সিনেমাহল খোলা হবে আরোও পরে। যেসব পরিবার এবং শিক্ষার্থীর সাহায্য দরকার, তাদেরকে সহায়তার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাক্রঁ।
প্রেসিডেন্ট জানান, ১১ মের মধ্যে ফ্রান্স তাদের দেশে করোনার লক্ষণ রয়েছে এমন সবাইকে পরীক্ষা করাতে পারবে। এরপর স্কুল, কলেজ, গীর্জা আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করবে।
মার্চের ১৭ তারিখ প্রথম দফায় লকডাউন ঘোষণা করে ফ্রান্স। ৩০ দিনের লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৭ এপ্রিল। কিন্তু সেটা প্রায় আরো এক মাস বাড়িয়ে করা হল ১১ মে পর্যন্ত।
ইউরোপে ইতালি ও স্পেনের পর সবচেয়ে বেশি করোনায় মারা গেছে ফ্রান্সে। তবে আগে থেকে করোনাভাইরাাস মোকাবেলার ব্যাপারে প্রস্তুতি না থাকার কথাও স্বীকার করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আমরা কি আগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম এই মহামারি ঠেকানোর ব্যাপারে? এটার মুখোমুখি হয়ে মনে হচ্ছে, যথেষ্ট ছিলাম না। কিন্তু আমরা লড়াই করছি। এই মুহূর্তে আমরা সৎ থাকি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের চাহিদা অনুযায়ী ফেস্ক মাস্ক সরবরাহ করতে পারিনি।