শরীরের ট্যাটুতেই যদি মাপা যায় হার্টরেট থেকে অক্সিজেন, কীভাবে বাস্তব হল এই কল্পবিজ্ঞান

শরীরেই ট্যাটুর মতো লেগে থাকবে সেন্সর

তাতে মাপা যাবে হার্টরেট থেকে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা

শুনলে মনে হয় কল্পবিজ্ঞানের গল্প বোধহয়

কিন্তু কীভাবে তা বাস্তবে সম্ভব হল জানেন

 

amartya lahiri | Published : Oct 10, 2020 7:49 PM IST

কয়েক দশক আগেও হার্টরেট, বা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া ছাড়া গতি ছিল না। এখন অবশ্য এইসব জটিল পরিমাপ হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্ট ওয়াচ, ইলেক্ট্রোড, ফিটনেস ব্যান্ড কিংবা পালস অক্সিমিটারেই মেপে নেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু, যদি এমনটা হতো, যে এইসব গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক পরিসংখ্যান জানার জন্য আলাদা করে কোনও যন্ত্র ব্যবহার করতে হতো না, শরীরেরই থাকত এমন সেন্সর, যা জানিয়ে দিত এই সবকিছু? কল্পবিজ্ঞান মনে হলেও এই বিষয়টি এখন ঘোর বাস্তব।

মার্কিন পেন স্টেট ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড মেকানিক্স বিভাগের প্রফেসর চেনের হুয়ানু ল্যারি চেং ও তাঁর গবেষক দল এবং চিনের হার্বিন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একটি গবেষক দল মিলে এমন এক সেন্সর যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যেটি মানুষের ত্বকে অস্থায়ী উল্কির মতো মুদ্রণযোগ্য। এটা করতে খুব একটা তাপও ব্যবহার করতে হয় না বলেই দাবি করেছেন গবেষকরা।

চেং জানিয়েছেন, সিন্টারিং নামক একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পরিধানযোগ্য সেন্সরগুলিতে ব্যবহৃত ধাতব উপাদানগুলির সরাসরি ত্বকে মুদ্রণ করা যায়। কিন্তু, এই প্রক্রিয়াতে, সেন্সরের রৌপ্য ন্যানো পার্টিকেলগুলিকে একত্রে আবদ্ধ করতে প্রায় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন। মানুষের দেহের গড় তাপমাত্রা ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেই ত্বক সামান্য় পুড়ে যেতে পারে। কাজেই ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা একটি মানব শরীরের পুরোপুরি ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।

এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে চেং ও তাঁর গবেষক দল একটি সিন্টারিং এইড লেয়ার তৈরি করেন। অর্থাৎ এমন একটি স্তর যা ত্বকের ক্ষতি করে না এবং অল্প তাপমাত্রাতেই সিন্টারিং ঘটাতে পারে। এরপর তাঁরা ন্যানো পার্টিকেলের একটি স্তর যুক্ত করে সিন্টারিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রার ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনেন। কিন্তু, এই তাপমাত্রাতেও ত্বক পুড়ে যেতে পারে। এর সমাধানের জন্য তাঁরা ত্বক এবং সেন্সরের মধ্যে একটি পলিভিনাইল অ্যালকোহল পেস্টের স্তর ব্যবহার করেছেন।

এই সেন্সর হার্ট রেট, অক্সিজেনের মাত্রা, শরীরের আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে পারে। জলে, এমনকী গরম জলেও সেন্সরটির ক্ষতি হয় না। গবেষণা দলটির দাবি, এই 'অন-বডি সেন্সর'এর সাহায্যে কোভিড-১৯ এর উপসর্গগুলি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

 

Share this article
click me!