মাটিতে দাঁড়িয়ে লড়াই আর ঘনঘন বক্তৃতা জেলেনস্কিকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথম দিন থেকেই জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামনাসামনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ইউরোপ বা আমেরিকা বা ন্যাটোর প্রত্যক্ষ সাহায্য না পেলেও তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভোমত্বের জন্য বিনা যুদ্ধে মাটি না ছড়ার পণ করে মন জিতে নিয়েছেন ইউক্রেনবাসীর।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটলে তা শুধু ইউক্রেন (Ukraine) নয় ইউরোপের (Europe) চূড়ান্ত পরিণতি ডেকে আনবে। রীতিমত হুংকার দিয়ে বলেলেন প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr zelensky)। প্রথম থেকে তিনি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দেশেবাসীর মন কড়ে নিয়েছেন। রাশিয়ার প্রবল প্রতাপ, বিশালত্বের কাছে নিতান্তই নগন্য ইউক্রেন। কিন্তু টানা সাত ধরে ছোট্ট দেশটি ভালোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে বিশাল রুশ সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। যা জেলেনস্কিকে শুধু ইউক্রেনের ইউরোপ ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
মাটিতে দাঁড়িয়ে লড়াই আর ঘনঘন বক্তৃতা জেলেনস্কিকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথম দিন থেকেই জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামনাসামনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ইউরোপ বা আমেরিকা বা ন্যাটোর প্রত্যক্ষ সাহায্য না পেলেও তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভোমত্বের জন্য বিনা যুদ্ধে মাটি না ছড়ার পণ করে মন জিতে নিয়েছেন ইউক্রেনবাসীর। তাই টানা ৯ দিন ধরে যুদ্ধে বিপর্যন্ত হয়েও এখনও ইউক্রেনীয়জের মনের মণিকোঠায় অবস্থান করছেন তিনি। জেনেনন তাঁর কারণ গুলি।
প্রথম কারণ
রাশিয়া স্থল আকাশ আর সমুদ্র পথে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলা ঘোষণার পরই তার বিরোধিতা করে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন জেলেনস্কি। তিনি তড়াঘড়ি সামরিত আইন জারি করেন। ঘোষণা করেন ইউক্রেন দেশের প্রত্যেক মানুষকে অস্ত্র দেবে। যাতে তারা রুশ সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু তার মাত্র এক দিন আগেই জেলেনস্কির এক আবেগতাড়িত ভাষণ দিয়ে বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চায় না।
দ্বিতীয় কারণ
রাশিয়া সেনা যখন কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসছে তখনই জেলেনস্কি নিজের ঘেরাটোপ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপিত ভবনের বাইরে থেকে নিজের শ্যুট করা একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়ে দেন প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে রয়েছে। কেউ ইউক্রেন ছেড়ে যাবে না। তিনি ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। যা ইউক্রেনবাসীর মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছিল বলেও মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তৃতীয় কারণ
তৃতীয় দিন জেলেনস্কির অস্ত্র নেওয়ার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। অথচ সেই দিনই রুশ সেনা কিয়েভ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু সেই পর্যন্ত তিনি রুশ সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বিষয়ে বদ্ধপরিকর বলেও দাবি করেছেন।
চতুর্থ কারণ
রাশিয়ার বিরুদ্ধে জেলেনস্কি দেশের সাধারণ মানুষের ওপর হামলার অভিযোগ করেন। তারজন্য তিনি সরাসরি দায়ি ককরেন পুতিনকে। তিনি বলেন রুশ সেনারা ইউক্রেনের শহরগুলি তছনছ করে দিচ্ছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তিনি ন্যাটো ও পশ্চিমের দেশগুলির থেকে আরও বেশি করে সাহায্যেরও দাবি জানিয়েছিলেন।
পঞ্চম কারণ
দীর্ঘ টালবাহানার পর বেলারুশে আলোচনায় বসতে রাজি হন জেলেনস্কি। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার আর প্রবল রুশ চাপের কাছে তিনি মাথা নত করেননি। উল্টে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে নিজের দেশের অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।
ষষ্ঠ কারণ
রাশিয়ার প্রবল চাপের বিরুদ্ধে জানিয়েছে জেলেনস্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। যা তাঁকে জাতীয় হিরোর তকমা প্রদান করেছে। তিনি বলেছেন তাঁর দেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রয়েছে। তাঁরা যেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার দেশের পাশে দাঁড়ায়। তিনি আরও বলেছেন তাঁদের দেশের প্রত্যেকটি মানুষ গণতন্ত্র আর স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সপ্তম কারণ
জেলেনস্কি আমেরিকা, ব্রিটেনসহ একাধিক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি আলোচনা করেছেন। গোটা বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যাতে আরও কঠোর হয় তার দাবি জানিয়েছেন। রাশিয়ার পরমাণু কেন্দ্রে হামলারও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বলেছেন এই কেন্দ্রে যদি বিস্ফোরণ হয় তাহলে তা ইউরোপের ধ্বংস ডেকে আনবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থানের পাশে তিনি ইউরোপ আর আমেরিকাকে পাশে পেতে একাধিক কৌশল গ্রহণ করেছেন। যা কিছুটা হলেও কাজে দিচ্ছে।