তালিবান নেতার সাংবাদিক বৈঠক। অফগান মহিলাদের আশ্বস্ত করা হয়। বিশ্ববাসীকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আফগান মাটি জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার করা হবে না।
আফগানিস্তানের মাটি থেকে কোনও দেশকেই হুমকি গেওয়া হবে না। রবিবার কাবুল দখল করার পর মঙ্গলবার বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করতে সাংবাদিক বৈঠকে একথাই বলেছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মিজাহিদ। মুসলিম এই রাষ্ট্রটি বিশ্বের সবকটি দেশকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে আফগানিস্তানের মাটি থেকে অন্য কোনও দেশে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালানো যাবে না। তিনি আরও বলেন কোরও প্রতি তাদের কোনও শত্রুতা নেই। সংগঠনের প্রধান নেতার আদেশে তালিবানরা সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আফগান জনগণের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে এমন নিয়মই আগামী দিনে চালু করা হবে। তবে বিশ্বের বাকি দেশগুলির উচিৎ আফগানিস্তানের জনগণের মূল্যবোধকে সম্মান জানান।
তালিবান মুখপাত্র এদিন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন আফগান ভূখণ্ড থেকে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলির বিরুদ্ধে কোনও রকম জঙ্গিকার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না। বিশ্ববাসী তাঁদের ওপর আস্থা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আফগানিস্তানের মাটি থেকে বিশ্বের কোনও দেশের কোনও ক্ষতি হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিবানদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের তালিবানদের সঙ্গে তাঁদের কিছু ফারাক রয়েছে। বর্তমান তালিবানরা অনেকটাই অভিজ্ঞ বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবে আগের তালিবানদের মতই তাঁরা মুসলমান ধর্মে বিশ্বাসী। তাই মতাদর্শ আর বিশ্বাস একই। কিন্তু নতুন এই তালিবানদের একটি আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা কাশ্মীর ইস্যুতে তালিবানদের প্রভাবিত করে কিনা সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
তালিবান জমানায় ভারতীয় বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন, আফগানিস্তান উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ঢেলে ছিল ভারত
Afghanistan Crisis: তালিবানদের সমর্থন 'নয়', খোয়াতে হতে পারে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
নাজিবুল্লাহ থেকে ঘানি, আফগানিস্তানে তালিবানদের ক্ষমতা দখলের দুই অধ্য়ায়ের ফারাক
কাবুলে তালিবান দখলদারিতে আফগানিস্তানের দ্বিপাক্ষিক আর অভ্যন্তরীন বিষয় বলেও দাবি করেছেন তালিবান মুখপাত্র। একটি সূত্র বলছেন তালিবানরা আপাতত কাশ্মীর ইস্যুতে মনোনিবেশ করবে না। যদিও সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী দলের সদস্যরা আফগানিস্তানে পৌঁছে গেছে। তালিবানদের সহযোগিতায় তারা বেশ কিছু চেকপোস্টও তৈরি করেছে। আফগানিস্তানের এই পালাবদলের কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ সতর্ক রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে স্বভাবতই আফগান নারীদের প্রসঙ্গও উঠে আসে। তালিবানদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারীদের প্রতি কোনও বৈষম্য থাকবে না। ইসলামিক নীতি মেনে আফগান মহিলা অধিকার ভোগ করবেন। স্বাস্থ্য আর অন্যান্য সেক্টর যেখানে তাঁদের প্রয়োজন রয়েছে সেখানে তাঁরা কাজ করতে পারবেন। একই সঙ্গে তালিবান মুখপাত্র কাবুলের দূতাবাসগুলির নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলিকে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, দূতাবাস, মিশন, আন্তর্জাতিক সংস্থা, স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা দিয়ে তালিবান বাহিনী রয়েছে। তালিবানরা জানিয়েছেন তাদের নেতা মোল্লা বরাদর আফগানিস্তানে পৌঁছেছেন। খুলে দেওয়া হয়েছে কাবুল বিমান বন্দর। ইতিমধ্যেই।