চিনা ভূখণ্ডে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাস নিয়ে এখন নাজেহাল গোটা বিশ্ব। এখনও পর্যন্ত ১৯০টি দেশে পাওয়া গিয়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগী। এই মারণ ভাইরাসকে কাবু করতে বিশ্বের সব দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালালেও এখনও প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। এই অবস্থায় অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছে সুপার কম্পিউটার। জানা যাচ্ছে, মানবদেহের কোষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর রাসায়নিকের হদিশ দিয়েছে এটি।
জানা যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সমৃদ্ধ সুপার কম্পিউটার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে কার্যকর রাসায়নিক যৌগের সন্ধানে কয়েক হাজার সিমুলেশন চালিয়েছিল। এই সুপার কম্পিউটার করোনাভাইরাস সহ একাধিক প্রাণঘাতী ভাইরাস রোধে উপযুক্ত রাসায়নিকের খোঁজে নতুন দিশা দেখাতে শুরু করেছে বলে আশার বাণী দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ল্যাপটপটির থেকেও ১০ লাখ গুণ বেশি শক্তিশালী এই সুপার কম্পিউটার।
মানবদেহের কোষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পারে এমন ৭৭টি যৌগ চিহ্নিত করেছে এই সুপার কম্পিউটার সামিট। কার্যকারিতার দিক থেকে এই যৌগগুলিকে ক্রম পর্যায়ে সাজিয়েও ফেলেছে সামিট। এমনটাই দাবি করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা।
আরও পড়ুন: আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে কেন্দ্র, লোকসভায় অভিযোগের জবাব দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গবেষকরা বলেছেন, ভাইরাস কোষগুলোকে আক্রমণ করে তাদের স্পাইক দিয়ে। এটি একটি জিন গঠিত বস্তু। একে স্পাইক প্রোটিনও বলে। সামিটের কাজ ছিল, এমন একটি রাসায়নিক যৌগ খুঁজে বের করা যেটি এই স্পাইকের সঙ্গে জড়িয়ে যাবে এবং কোষে ভাইরাসের বিস্তার আটকে দেবে। সুপার কম্পিউটারটি ৮ হাজারের বেশি যৌগের সিমুলেশন করেছে এই কাজ করতে গিয়ে। তার মধ্যে ৭৭টি যৌগকে বেছে নিয়েছে সামিট।
ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষক জেরেমি স্মিথের মতে, করোনাভাইরাসের চিকিৎসা পেয়ে গেছি, এখনি বলা সম্ভব নয়। তবে এই ৭৭টি যৌগ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজে লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাস বিস্তার রোধ করতেও এই তথ্য কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: করোনায় প্রতি ১০ মিনিটে মারা যাচ্ছেন ১ জন, ৫০ জনের শরীরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এক ঘণ্টায়
প্রসঙ্গত, সামিট সুপার কম্পিউটারটি ২০১৪ সালে মার্কিন জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে স্থাপন করা হয়েছিল। জটিল সমস্যার সমাধান খুঁজতে এই সুপার কম্পিউটারের সিম্যুলেশন ক্ষমতা কাজে লাগানো হয়।
আইবিএমের তৈরি সামিটে রয়েছে ২০০ পেটাফ্লপস। প্রতি সেকেন্ডে ২০০ কোয়াড্রিলিয়ন হিসাব সম্পন্ন করতে পারে এটি। বর্তমানে সামিট রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে।