অসহায় আফগানদের জন্য ৪.৪ বিলিয়ন ডলারের ত্রাণ সংগ্রহ করতে সবথেকে বড় তহবিল গড়েছে রাষ্ট্রসংঘ। ত্রাণ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে দেশগুলিকে।
প্রায় দু’দশক পর ফের আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করেছে তালিবানরা (Taliban)। কিন্তু, সেই দেশের পরিস্থিতি একেবারেই ভালো নয়। গৃহযুদ্ধের জেরে বিপর্যস্ত সেখানকার অর্থনীতি (Economy)। সব ক্ষেত্রেই দেখা দিয়েছে সঙ্কট। সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। খাদ্য সঙ্কট (Food Crisis) দেখা দিয়েছে সেখানে। তার জেরে অপুষ্টিতে (Malnutrition) ভুগছে বহু শিশু। এই অবস্থায় অসহায় আফগানদের জন্য ৪.৪ বিলিয়ন ডলারের ত্রাণ সংগ্রহ করতে সবথেকে বড় তহবিল গড়েছে রাষ্ট্রসংঘ (United Nations)। ত্রাণ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে দেশগুলিকে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দফতরের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, "এর আগে কখনও একটি দেশের জন্য এত বড় তহবিল তৈরি করা হয়নি। এই প্রথম মানবিকতার স্বার্থে এই তহবিল তৈরি করে সেখানে আবেদন জানানো হচ্ছে।" আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের অবস্থাই শোচনীয়। তলানিতে ঠেকেছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। অপুষ্টিতে ভুগছে বহু শিশু। অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে।
আরও পড়ুন- বিশ্বে এই প্রথম, মানবদেহে শূকরের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করলেন চিকিৎসকরা
খাদ্য সঙ্কটের পাশাপাশি কড়া ঠান্ডার মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দেশের মধ্য ও উত্তরদিকের বেশিরভাগ এলাকায় পুরু বরফের চাদরে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ঘর গরম করার মতো কোনও জিনিস কেনার সামর্থ নেই বেশিরভাগ আফগানের কাছে। ফলে এই ঠান্ডার মধ্যেই কোনওরকমে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। তার মধ্যে ঠিক করে খাবারও পাওয়া যাচ্ছে না। দিনের বেশিরভাগ সময়ই সেখানে বিচ্ছিন্ন থাকছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে চরম অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। আর তাঁদের সাহায্যের কথা মাথায় রেখেই মানবিকতার স্বার্থে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য এই তহবিল তৈরি করেছে রাষ্ট্রসংঘ।
আরও পড়ুন- 'মোস্ট ওয়ান্টেড' পাক জঙ্গি খোরাসানি, হত আফগানিস্তানে
গ্রিফিথস বলেন, "অসহায় পরিবারগুলোর জন্য আমাদের খাবারের প্রয়োজন, আমাদের বীজের প্রয়োজন যা দিয়ে কৃষকরা ফসল উৎপাদন করবেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাসপাতালের প্রয়োজন যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত করবে।"
উল্লেখ্য, তালিবানের দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত বছর অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দফতর জানিয়েছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সেদেশের লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে।