সম্প্রতি ভারতে শ্রদ্ধা ওয়াকার নামের এক তরুণী হত্যার পর রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদকের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পারিবারিক হিংসার দ্বারা প্রাণহানি নজির শুধু মাত্র ভারত কিংবা পশ্চিমের দেশগুলিতেই নয়, সারা বিশ্ব জুড়েই দাপিয়ে বেড়ায় এই ভয়ঙ্করতা। আন্তর্জাতিক হিংসা দূরীকরণ দিবসের আগে সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক অ্যান্তোনিও গুত্তেরেস জানিয়েছেন, সারা বিশ্ব জুড়ে প্রতি ১১ মিনিটে একজন করে নারী খুন হয়ে যাচ্ছেন নিজের লিভ ইন পার্টনার বা পরিবারের সদস্যদের দ্বারা। পৃথিবীতে মহিলাদের ওপর ক্রমাগত বেড়ে চলা হিংসা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অ্যান্তোনিও। পৃথিবীর সমস্ত দেশের সরকারকে এই হিংসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ২৫ নভেম্বর নারীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হিংসা দূরীকরণ দিবস। সেই দিবস পালনের আগেই সমগ্র রাষ্ট্রনেতাদের জাগিয়ে তুললেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক।
অ্যান্তোনিও গুত্তেরেস বলেন, ‘নারীদের ওপর হিংসার অর্থই হল মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। কোভিড মহামারীর সময় থেকে মহিলাদের ওপর হিংসা আরও অনেকটা বেড়ে গেছে।’ এর প্রকৃত কারণ কী? এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যান্তোনিও বলেন, ‘করোনার পরে অনেকেই আর্থিক সমস্যার কবলে পড়েছেন। যার ফলে বিশ্ব জুড়ে রাগ বাড়ছে পুরুষদের, সেই রাগের শিকার হচ্ছেন নারীরা। মানসিক এবং শারীরিকভাবে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।’
সম্প্রতি ভারতে নিজের সঙ্গীর দ্বারা শ্রদ্ধা ওয়াকার নামের এক তরুণী হত্যার পর সারা দেশ জুড়ে নিজের সঙ্গীদের অত্যাচারে নারীদের কী হাল, সেই সমীক্ষায় তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদকের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে, শুধুমাত্র নিজের বাড়ির মধ্যেই নয়, মেয়েদের হয়রানি এবং নির্যাতন করা হচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমেও। বিদ্বেষমূলক মন্তব্য থেকে শুরু করে তাঁদের ছবির অপব্যবহার, প্রভৃতির মাধ্যমে মহিলারা হিংসার শিকার হচ্ছেন বলে জানান অ্যান্তোনিও গুত্তেরেস।
নারীদের উপর হিংসা বন্ধ করানোর জন্য সমস্ত দেশকে আহ্বান জানিয়েছেন গুত্তেরেস। তাঁর মতে, এই উদ্যোগ সফল করতে হলে সব দেশের সরকারকে উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং তা কার্যকর করতে হবে। আইন প্রয়োগ করে মহিলাদের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। এছাড়াও, বিভিন্ন নারী সুরক্ষা সংগঠনকে বরাদ্দ করা অর্থ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। ২০২৬ সালের মধ্যে এই বিষয়ে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন-
সোনা পাচারেও জড়িয়ে গেল রাজ্যের শাসক দলের নাম, গ্রেফতার বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলে
বন্যা এবং আর্থিক সংকট, দুই দানবের চাপে পড়েও ভারতীয় বিমানঘাঁটি লাগোয়া বিমানবন্দর তৈরি অব্যাহতই রেখেছে পাকিস্তান
পাহাড়ের রাজনীতিতে দুর্বল হল হামরো পার্টি, দার্জিলিং পুরসভা চলে গেল গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার হাতে