ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙায় ফুঁসছে বাঙালি। তৃণমূল ও বিজেপি পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছে মূর্তি ভাঙার অভিযোগে। সেই মূর্তির মতোই বাঙালির আবেগও সেদিন ভেঙে চুরমার হয়েছে। তবে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙায় লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার অমিত শাহের রোড শো-কে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্য়ে বচসা লাগে। ভাঙা হয় বিদ্যাসাগেরের মূর্তি। অভিযোগের তীর বিজেপির দিকেই। কিন্তু এই দিনের ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখছে। দেদার বিক্রি হচ্ছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ও ছবি। তবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন বই পাড়ার ব্যবসায়ীরা। কলেজ স্ট্রিটের দোকানে দোকানে হু-হু করে বিক্রি হচ্ছে বর্ণপরিচয়।
দেব সাহিত্য কুটিরের সুকুমার মল্লিক বলছেন, "সরস্বতী পুজোর আগে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বর্ণপরিচয়। কারণ সেই সময়ে শিশুদের হাতে খড়ি দেওয়ার ব্যাপার থাকে। বছরের এই সময়ে কখনওই এতগুলো করে বর্ণপরিচয় বিক্রি হয় না। কিন্তু এখন সরস্বতী পুজোর সময়ের থেকেও বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন দোকানদাররা আসছেন, একসঙ্গে ১০-১৫টা করে বর্ণপরিচয় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা সেগুলি দিয়ে কী করবেন জানি না। তবে কিনে নিয়ে যাচ্ছে সব। ভাল, আমার বিক্রি হচ্ছে।"
তবে শুধু বর্ণপরিচয় নয়, এই কদিন ঢেলে বিক্রি হচ্ছে বিদ্যাসাগরের জীবনী নিয়ে বইও। তবে সুকুমার বাবুর কথায়, "বর্ণপরিচয়ের মতো সেগুলি বিক্রি হচ্ছে না। আগে তো বর্ণপরিচয় পড়ুক। পরে বাকি বই পড়বে।"
শুধু ব্যবসার ক্ষেত্রে নয়। এই কদিনে ইন্টারনেটেও বেড়ে গিয়েছে বিদ্যাসাগরের জনপ্রিয়তা। যে বাঙালির বাংলাটা ঠিক আসে না, তাঁরাও ফেসবুকে প্রোফাইল ছবি বদলে বিদ্যাসাগরকে রাখছেন। শয়ে শয়ে পোস্ট পড়ছে দয়ার সাগরকে নিয়ে। যে বিদ্যাসাগরকে প্রয়োজন ছাড়া বাঙালি মনে করতে ভুলে গিয়েছিল, গুগলেও এখন প্রতিনিয়ত সার্চড হচ্ছেন তিনি। একটি সফটওয়্যারের মারফত দেখা যাচ্ছে, বিগত কয়েকদিনে প্রায় ৩৪ হাজার বার সার্চ করা হয়েছে বিদ্যাসাগরের নাম।
প্রসঙ্গত, সারা দেশ জুড়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বেগতিক দেখে বাংলায় ভোটের প্রচারের সময় কমিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এই ঘটনা ভোট বাক্সে কেমন প্রভাব ফেলবে তা কিন্তু ২৩ মে-ই বোঝা যাবে।