ঝাঁ চকচকে ফ্ল্যাট থেকে দামি গাড়ি চড়ে বের হয় বাড়ির বাসিন্দারা। দেখে বোঝার উপায় নেই, কিন্তু তারাই আসলে ডাকাত। দুমাস ধরে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি গুলশন কলোনি বা আনন্দপুরের বাসিন্দারা। মঙ্গলবারই পর্দা ফাঁস হতেই চোখ কপালে তাঁদের।
আরও পড়ুন, আশঙ্কায় কলকাতাবাসী, মেঘলা আকাশের মাঝেও কি মিলবে দেখা বলয় গ্রাসের
গত দুমাসে ইএম বাইপাস এবং বেহালা সংলগ্ন প্রায় হাফ ডজন সোনার দোকানে রাতের বেলায় লুঠপাঠ চলে। বারবার অভিযোগ পেয়েও এতদিন পুলিশ তাদের ধরতে পারছিল না। তবে গোপন সূত্রে এটা জানা গিয়েছিল যে, ওই ডাকাতরা মোটামুটিভাবে ইম বাইপাসের সায়েন্স সিটি সংলগ্ন কোনও এলাকাতেই লুকিয়ে রয়েছে। এরপরই ওই এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তারপরেও তাদের শায়েস্তা করা যায়নি। মঙ্গলবার, রাতে অবশ্য নির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে বাইপাসের ওই এলাকায় ফাঁদ পেতেছিল পুলিশ।
ওই রাতে ডাকাতি করতে বেরিযে হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় ৬ জন ডাকাতের একটি দল। সিপি মুরলিধর শর্মা জানিয়েছেন, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে তারা বিহারের পূর্ব চম্পারণ এবং মতিহারি জেলার বাসিন্দা। দুই মাস আগে সায়েন্স সিটির কাছে পঞ্চানন গ্রামের গুলশন কলোনিতে এসে ওঠে। তারপর আনন্দপুর এলাকাতেও একটি ফ্ল্য়াট বুক করেছিল। প্রায় রাতেই অনলাইনে গাড়ি বুক করে বের হত ডাকাতি করতে। মূলত, দক্ষিণ শহরতলীর ছোট ছোট দোকানগুলিকেই নিশানা করত তারা।
আরও পড়ুন, 'দিদি'কে বলেও মিলল না সুরাহা, পচনধরা পা নিয়ে চার হাসপাতালে চক্কর যুবকের
তবে, পুলিশের সন্দেহ, গড়িয়া, সোনারপুর এবং নরেন্দ্রপুর এলাকার কিছু অপরাধচক্রের সঙ্গেও তাদের যোগ ছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর তিলজলা থেকে ৩০০০০ টাকা চুরির দায়ে মহম্মদ আজাহার নামে এক দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ অনুমান করছে।
অপরদিকে, এই ঘটনার পর গুলশন কলোনি ও আনন্দপুরের বাড়ি মালিকদের মধ্যে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। পুলিশ থেকে বারবার সতর্ক করার পরও এতদিন ভাড়াটেদের মুখের কথাকেই বিশ্বাস করতেন তাঁরা। কিন্তু নিরীহ প্রতিবেশিই ডাকাত জানার পর তাঁরা বলছেন এখন থেকে যাবতীয় নথি প্রমাণ দেখেই বাড়িভাড়া দেবেন।