'কোনও নিদিষ্ট তারিখ করা উচিত নয়', ১২ ফেব্রুয়ারি পুরভোট নিয়ে কমিশনের ঘোষনার পরেই তোপ দিলীপের। এদিকে রবিবার প্রতিদিনের মতোই নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে অভিষেক-কল্যাণ ইস্যুতেও খোঁচা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
'কোনও নিদিষ্ট তারিখ করা উচিত নয়', ১২ ফেব্রুয়ারি পুরভোট (Municipal Election 2022) নিয়ে কমিশনের ঘোষনার পরেই তোপ দিলীপের। কারণ ওই নির্দিষ্ট তারিখে আদৌ রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি কেমন থাকবে, তা কী করে আগে থেকেই বোঝা যাবে। এনিয়েই প্রশ্ন তোলেন এদিন তিনি। এদিকে রবিবার প্রতিদিনের মতোই নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে অভিষেক-কল্যাণ (Abhishek Banerjee and Kalyan Banerjee) ইস্যুতেও খোঁচা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (BJP Leader Dilip Ghosh)।
পুরভোট নিয়ে কী কারণে এই বার্তা দিলীপের
পুরভোটের ইস্য়ুতে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা দাবি করেছিলাম, কমিশন আধাআধি মেনেছে। সবাইকে খুশি করার চেষ্টা করেছে। বাস্তব পরিস্থিতি যা হয়েছে করোনার প্রকোপ সেটা দেখে করা উচিত। যতক্ষণ না নর্মাল হচ্ছে, মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারছে, ততক্ষণ ভোট করা উচিত নয়। কোনও নিদিষ্ট তারিখ করা উচিত নয়, যখন পিছোচ্ছে তখন একমাস পিছোনো উচিত। সরকার কী বলতে পারবে ১৫ দিনে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।' উল্লেখ্য, ২২ জানুয়ারি পুরভোট হওয়ার কথা ছিল বিধাননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি এবং চন্দননগরে। তবে এবার কোভিড পরিস্থিতির কথা ভেবে রাজ্যে এবং সকল দলের সঙ্গে মত নিয়ে ২২ জানুয়ারির বদলে ওই ৪ কেন্দ্রে ১২ ফেব্রুয়ারি পুরভোটের ঘোষণা করেছে কমিশন। তবে যেভাবে কোভিড লাগামছাড়া এগোচ্ছে, তাই পরের মাসেই কীকরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এনিয়েই প্রশ্ন তোলেন দিলীপ ঘোষ।
'ওনার বলা উচিত না হলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে', কল্যাণ প্রসঙ্গে খোঁচা দিলীপের
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পার্টির মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ হতেই পারে, কোন বিষয়ে একমত না হতে পারে। তাঁর জন্য কথাবার্তা বলে ব্যবস্থা আছে পার্টিতে। ক্ষোভ-বিক্ষোভ যথাস্থানে বলা উচিত। আমাদের এখানে মন্ত্রী মহামন্ত্রীর মধ্যে মারামারি হয় না। পরিবর্তন হলে সেটা মেনে নিতে সময় লাগে, পার্টির মধ্যে বড় পরিবর্তন হচ্ছে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। যারা এগুলো মেটাবার দায়িত্বে আছে মেটানো উচিত এটাই রাস্তা। পাশাপাশি, কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ খোঁচা দিয়ে বলেন, 'ওনার বলা উচিত না হলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে, বলুন শরীরটা ঠিক থাকবে।'
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ডায়মণ্ডহারবারের সভায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছেন, '২ মাসের জন্য সব বন্ধ রাখা হোক'।আক্ষরিক অর্থে তা, পুরভোটকে কেন্দ্র করেই। আর এই বক্তব্যের পর আওয়াজ তোলেন কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়। যে ব্যক্তিগত মতামত বলে অভিষেকের কিছু থাকতে পারে না। তার বলা কথা অর্থাৎ দলেরই কথা হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। এরপরেই শুরু হয় যাবতীয় জল ঘোলা।এরপরেই বিতর্ক থামাতে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, এনিয়ে কোনও বিবৃতি চলবে না।বিতর্কের পর বিশেষ বার্তায় তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রকাশ্য মুখ খোলা যাবে না। লোকসভার কোনও সাংসদ দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে 'লিডার'কে না জানিয়ে কোথাও কোনও সই করা যাবে না।
'গঙ্গাসাগর মেলা কেউ মানেনি, মানা সম্ভবও নয়'-দিলীপ
সরকারের নোটিফিকেশন বিধিনিষেধ নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'এসব কথা বলার জন্য বলা। ইকোপার্কে নববর্ষে ৭৫ হাজার লোক এসেছে। তারপর বিধি মানা সম্ভব। সাধারণ মানুষ মেলা থেকে রোজগার করে সেটাও দেখতে হয়, গঙ্গাসাগর মেলা কেউ মানেনি, মানা সম্ভবও নয়।প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্যাবলো বাতিল প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেন, তাঁরা এমনভাবে ট্যাবলো করে যাতে বাদ যায় আর আর খবর হয়, ওটা ট্যাবলো করে না রাজনীতি করতে চায়। কথাবার্তা বলে করা উচিত যেটায় ঠিকঠাক ম্যাসেজ যায়। শহরে বিজেপির বিরুদ্ধে পোস্টার প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, পোস্টার রাজনীতি সহজ, যারা বাড়িতে বসে আছে তারাই করে, পোস্টার দিয়ে রাজনীতি হয় না। খবরের জন্য পোস্টার মারে।'
'পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা ডায়মন্ড হারবার, তৃণমূল থেকে আলাদা অভিষেক'-দিলীপ
অপরদিকে, অভিষেকের টিমের ইস্যুতে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ওই টিমকে রাজ্য চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হোক। তারা ভ্যাকসিনেশন করুক, ভারত থেকে আলাদা পশ্চিমবঙ্গ, আর পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা ডায়মন্ড হারবার। তৃণমূল থেকে আলাদা অভিষেক। এই বার্তায় জানি না কার উপকার হতে পারে, হতে পারে নেতা হিসাবে তাতে সমাজের কোনও লাভ হয় না। মদন ফেসবুক লাইভ প্রসঙ্গেও এদিন কথা বলতে ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ। তিনি এদিন বলেন, ওনাদের পার্টিতে কী ব্যবস্থা আছে জানি না, যারা আছেন তারাই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। আমাদের দলে যারা নেতৃত্বে আছে, তারা অনেকে অসুস্থ ছিলেন, তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি যথা সময় কথা হবে।'