জাগুয়ার দুর্ঘটনায় নাটকীয় মোড়। আরসালান পারভেজ নয়, দুর্ঘটনার রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর দাদা রাকিব। ঘটনার পরদিনই তিনি দুবাইয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এদিন বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
জাগুয়ার দুর্ঘটনায় নাটকীয় মোড়। বুধবার কলকাতা পুলিশ জানালো আরসালান পারভেজ নয়, দুর্ঘটনার রাতে গাড়ি চালাচ্ছিল তাঁর দাদা রাকিব। এদিন দুপুরেই বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন সন্ধেবেলাই তিনি দুবাইয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
গত শুক্রবার (১৬ অগাস্ট) গভীর রাতে একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িকে ধাক্কা মারে তীব্র গতিতে ধেয়ে আসা একটি জাগুয়ার গাড়ি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই বাংলাদেশি পথচারীর। ঘটনার তদন্তে কলকাতার এক নামজাদা রেস্তরাঁ-মালিকের ছেলে আরসালান পারভেজকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকেই তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তদন্ত এগোতেই কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পায় পুলিশ।
কী কী অসঙ্গতি?
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনা ঘটানো জাগুয়ার গাড়িটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করে দেখা যায় গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলেছিল। পুলিশের দাবি, এয়ারব্যাগ খুললে চালকের মুখে ও শরীরে তার প্রতিঘাতের কিছু চিহ্ন থাকে। যাকে 'সিলিকন বাইটস' বলে। ডাক্তারি পরীক্ষায় আরসালান পারভেজের শরীরে সেইরকম কোনও চিহ্ন মেলেনি।
এতেই আদৌ আরসালান চালকের আসনে ছিল কিনা তাই নিয়ে পুলিশের মনে প্রথম খটকা তৈরি হয়েছিল। এরপর এই সম্ভাবনা খতিযে দেখতে পুলিশ রাকিবের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। সেখান থেকে রাকিবের ছবি জোগার করা হয়। ঘটনাস্তলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যে ব্যক্তিকে পালাতে দেখা গিয়েছিল, তার সঙ্গে রাকিবেরই বেশি মিল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন - ৯ মাসে ৪৮টি কেস, বরাবরই বেপরোয়া ছিল আরসালানের জাগুয়ার
আরো পড়ুন - বেপরোয়া গতির বলি দুই বাংলাদেশি, গ্রেফতার আরসালান রেস্তোরাঁর মালিকের ছেলে
আরও পড়ুন - রাতের কলকাতায় মার্সিডিজে ধাক্কা বেপরোয়া জাগুয়ারের, মৃত দুই বাংলাদেশের নাগরিক
পরের ধাপে পুলিশ রাকিব-আরসালানদের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটে সংগ্রহ করে। সেখানে দেখা যায় রাত ১১.১০ নাগাদ গাড়ির স্টিয়ারিং ছিল রাকিবের হাতে। তাতেই পুলিশ প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় ওই রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন আরসালান নয়, তাঁর দাদা রাকিব পারভেজ।
এরপর আরসালানকে চেপে ধরলে তিনিও জানান, ঘটনার দিন তিনি ওই গাড়িতে ছিলেনই না, ছিলেন বাড়িতে।
কেন আত্মসমর্পণ করেছিলেন আরসালান?
আরসালান পারভেজ জানিয়েছেন দুর্ঘটনার পরই তাদের মামা মহম্মদ হামজার সহায়তায় তাঁর দদা রাকিব দুবাই পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে পুলিশের নোটিশ যাওয়ায় পর ভয় পেয়ে তাঁর বাবাই তাঁকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পনের জন্য পাঠিয়েছিলেন। এদিকে আরসালান ধরা পড়ার খবর পেয়ে দেশে ফিরে আসেন রাকিব। বুধবার তাঁকে বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে রাকিব তাঁর দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। এই মুহূর্তে আরও জিঞ্জাসাবাদ চলছে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে পালাতে সাহায্য করা মহম্মদ হামজা-কেও। এমনকী শাস্তি হতে পারে আরসালানের বাবা মহম্মদ আখতারেরও।