ওড়িশায় মরণকামড় দিয়ে দৈত্যের মতো আসছিল সে। তার কোপের মুখে প্রখম যে জনপদটি পড়ে তা হল খড়্গপুর। ৯০ কিলোমিটার বেগে প্রায় ঘন্টা দুয়েক খড়্গপুরে মস্তানি চালালেও কলকাতাকে রেহাইই দিল ফণী। রাজ্যে দুর্যোগের আবহ বহাল, তবে বড় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচল কলকাতাবাসী।
আবহবিদদের মতে , ফণী অনেকটাই শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এখন তার অভিমুখ বাংলাদেশ। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ পেরিয়ে দুপুরের দিকে সে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশে।
ফণীর প্রভাবে দুই মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগণা. ঝাড়গ্রাম , বাকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলাতেও।
ফণীর কোপ থেকে কলকাতাকে রক্ষা করতে চেষ্টার কসুর করেনি প্রশাসন। বেনজির তৎপরতা দেখা যায় কলকাতা পুরসভার তরফেও। সমস্ত বিপজ্জনক বহুতল খালি করা হচ্ছ। দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এমন গাছের ডালপালা ভেঙে দেওয়া হয়। নিকাশি পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। আগেভাগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় স্কুলগুলি। তবে ফণীর ফণা থেকে শেষমেশ রক্ষাই পেল ফণী। যদিও ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর অঞ্চলে। সেখান থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ২৩ হাজার ৬৮০ জনকে নিরাপদ জায়গায় সরাতেও পেরেছে রাজ্য প্রশাসন। সরানো হয়েছে দুই চব্বিশ পরগণার মোট কুড়ি হাজার মানুষকেও।
ঠিক দশ বছর আগে এই মে মাসেই সারা রাজ্য জুড়ে তান্ডব চালিয়েছিল সাইক্লোন আয়লা। ফণীর দাপট তার থেকেও বেশি হবে বলে অনুমান ছিল রাজ্যবাসীরা। অভিঘাতের তীব্রতা কম হওয়ায় স্বস্তির হাওয়া প্রশাসনে। অন্য দিকে রক্ষা পেল অসংখ্য কলকাতাবাসী।
রাস্তার ধারে থাকা কয়েক হাজার ফুটপাথবাসীর মুখে স্বভাবতই হাসির রেখা। সুন্দরবনে জলের তলায় জমি চলে গিয়ে রহিম মণ্ডল ও তপন সেনাপতির। কলকাতাতেই নিযুক্ত হয়েছেন গাড়ি সারাইয়ের কাজে। থাকেন ভবানীপুরের ফুটপাতে। সকাল সকাল একে অপরকে বলছেন, "বলেছিলাম না ওরমটা আর হবে না"।