বিধানসভা ভোটের আর বেশি দেরি নেই। দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে দরাজ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বার্ধক্যভাতা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, সবক্ষেত্রেই বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন তিনি। এমনকী, রাজ্যবাসীকে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ-ও বিনামূল্যে সরবরাহ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এ রাজ্যের তফশিলি জাতির প্রবীণ নাগরিকদের জন্য 'বন্ধু' নামে চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে যাঁদের বয়স ষাটের বছরের বেশি এবং যাঁরা অন্য কোনও ভাতা বা পেনশন পান না, তাঁদের মাসে ১ হাজার টাকা করে বার্ধক্যভাতা দেওয়া হবে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, এই প্রকল্পে চালু হলে উপকৃত হবেন আনুমানিক ২১ লক্ষ মানুষ। এই প্রকল্পের বরাদ্দ করা হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আলাদা একটি প্রকল্পে একই সুবিধা পাবেন তফশিলি উপজাতির ও আদিবাসী বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারাও। সেই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে 'জয় জহর'। এই প্রকল্পে উপকৃত হবে ৫ লক্ষ মানুষ। প্রকল্পের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।
এদিকে আবার কর্মসংস্থানের অবস্থাও ভালো নয়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকার যুবক-যুবতীর সংখ্যাও। এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেটে এ রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য 'কর্মসাথী' নামে নয়া প্রকল্প ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কী সুবিধা মিলবে এই প্রকল্পে? অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে প্রতি বছর ১ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীর জন্য দু’লক্ষ টাকা নতুন প্রকল্পে লগ্নির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের লোন দেওয়া হবে সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। সেই টাকা চাইলে কেউ ছোট উৎপাদন প্রতিষ্ঠান খুলতে পারেন, আবার খুচরো ব্যবসাও শুরু করতে পারেন। তবে গোটা রাজ্যের তুলনায় বাংলার বেকারত্বের হার যে কম, বাজেট পেশ করতে গিয়ে সেকথাও জানাতে ভোলেননি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
এবারের বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রেও নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী বছর আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হতে চলেছে। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, আদিবাসীদের জন্য ঝাড়গ্রামে তৈরি হবে বিশেষ বিরসা মুণ্ডা বিশ্ববিদ্যালয়। তফসিলি জাতি অধ্যূষিত এলাকার জন্য তৈরি করা হবে আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়। এবং অন্যান্য অনগ্রসর জাতির উন্নয়নের জন্য একটি আলাদা OBC বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে।