গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফেরার সময় রাজ্যবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এখনই রাজ্যে লকডাউন করা হবে না। তবে সংক্রমণ রুখতে বিদেশ থেকে আসা বিমান বন্ধ করা প্রয়োজন।
হাতে বাকি রয়েছে আর মাত্র একটা দিন। ব্যস তারপরই চলে আসবে নতুন বছর (New Year)। আর সেই আনন্দে গা ভাসাতে প্রস্তুত রয়েছেন বঙ্গবাসী। মন খুলে আনন্দের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে চান তাঁরা। কিন্তু, তার মধ্যেই কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস (Coronavirus)। করোনার নতুন রূপ ওমিক্রনই (Omicron) এখন সবথেকে বেশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। রাজ্যেও আক্রান্তের সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যবাসীর মনে। তাহলে কী ফের লকডাউনের (Lockdown) পথে হাঁটবে রাজ্য? নতুন বছরকে এভাবেই স্বাগত জানাতে হবে? গঙ্গাসাগর (Gangasagar) থেকে কলকাতায় (Kolkata) ফেরার সময় রাজ্যবাসীকে সেই প্রশ্নেরই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি জানিয়েছেন, এখনই রাজ্যে লকডাউন করা হবে না। তবে সংক্রমণ রুখতে বিদেশ (Foreign) থেকে আসা বিমান (Flight) বন্ধ করা প্রয়োজন।
বিদেশ ভ্রমণ করেছেন এমন ব্যক্তিরাই সবথেকে বেশি ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। আর সেই কারণে বিদেশ থেকে আসা বিমান নিয়ে একটু বিরক্তবোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমি ইউকে-কে ভালোবাসি। কিন্তু, দেখতে পাচ্ছি ওখানকার বিমানে করেই সংক্রমণ এদেশে বেশি ছড়াচ্ছে। আমরা সকলেই জানি বিদেশ থেকে যে বিমানগুলি আসছে, সেখান থেকেই ওমিক্রন ছড়াচ্ছে। অবিলম্বে বিদেশি বিমান ওঠানামা বন্ধ করা দরকার। যে সব দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেই সব দেশ থেকে আসা বিমানের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।"
আরও পড়ুন- ব্রিটেন-কলকাতা সরাসরি সব বিমান বাতিলের সিদ্ধান্ত রাজ্যের
দেশের একাধিক রাজ্যেই থাবা বসিয়েছে ওমিক্রন। তবে এই ওমিক্রনের কারণে রাজ্যে ফের লকডাউন হবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "গত দু'বছর লকডাউন দেখেছি আমরা। মানুষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়েছে। তাই এখনই লকডাউন করা হবে না। যে এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে সেখানে কনটেইনমেন্ট জোন করা হবে। বিধিনিষেধ জারি করা হবে। আর লক্ষ্য রাখা হবে জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়।"
এদিকে আগামীকালই বর্ষ শেষের (End of the Year) রাত। আর সেই রাতে ভিড় দেখা যায় কলকাতার রাস্তায়। কিন্তু, এই পরিস্থিতির মধ্যে আনন্দে গা ভাসিয়ে দেওয়া কতটা ঠিক হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এদিকে বর্ষবরণে রাজ্যবাসী মাতলেও মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, বছরের শেষ ও শুরুতে আনন্দ করার সময়ও সচেতন হতে হবে। মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই মানুষকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। কোনও জায়গাতেই অকারণে ভিড় না করাই ভালো। কারণ এবার করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণ। বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দৈনিক সংক্রমণ একলাফে ১ হাজার পার করে গিয়েছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৯ জন। মূলত ক্রিসমাসের পরেই উৎসবের মরশুমে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় সংক্রমণের সম্ভবনা বেড়েছে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। এদিকে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র সহ দেশের একাধিক রাজ্যে নাইট কারফিউ সহ একধিক বিধি কার্যকর থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও তা শিথিল রয়েছে।