একুশের নির্বাচনে বাংলা দখলে ৫ বিজেপি নেতাকে পাঠাল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সুনীল দেওধর, দুষ্মন্ত গৌতম, বিনোদ তাওড়ে, হরিশ দ্বিবেদী, বিনোদ সোনকর-এই পাঁচ নেতা বাংলার দায়িত্ব সামলাতে বাংলায় পাঠিয়েছে বিজেপি। উল্লেখ্য, এরা প্রত্য়েকেই অবাঙালি। অতীতে দূর-দূরান্তে হেঁটে গেলেও এরা কোনওদিন বাংলার রাজনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এরা প্রত্য়েকেই ভিন রাজ্যেই কাজ করেছেন। তবে এরা প্রত্য়েকেই মোদী-শাহ ঘনিষ্ঠ। তাই একুশের ভোটকে পাখির চোখ করে বাংলাকে ৫ টি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই 'পঞ্চপান্ডব'কেই।
আরও পড়ুন, 'বাংলায় প্রধানমন্ত্রী এলেই বহিরাগত-রোহিঙ্গারা তাহলে কী', সুখেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ দিলীপের
জুঁটল 'বহিরাগত'-র তকমাও
একদিকে যখন রাজ্য়ে নীলবাড়ি বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছে তৃণমূলের প্রশান্ত কিশোরের টিম। আরও ওদিকে আসন্ন বিধানসভা ভোটে সেই নবান্ন দখলেই 'পঞ্চ পান্ডব' পাঠিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মূলত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য-বিজেপির দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদিকে ভোটের আগে বাংলায় দিলীপ-মুকুল থাকা সত্ত্বেও ভিন রাজ্য়ের ৫ অবাঙালি বিজেপি নেতাকে কী কারণে পাঠাল কেন্দ্র, এখানেই প্রশ্ন ঠুকেছে বিরোধি শিবির। 'বাংলার লড়াই এ বাঙালির উপর ভরসা রাখতে পারছে না বিজেপি' বলে তীব্র আক্রমণও করা হয় তৃণমূলের তরফে। এমনকী 'বহিরাগত'-র তকমাও দিতেও ছাড়া হয়নি।
আরও পড়ুন, 'প্রতিমাসেই বাংলায় আসবেন শাহ-নাড্ডা', দিল্লি যাওয়ার পথে জানালেন দিলীপ ঘোষ
'পঞ্চপান্ডব'-র ঝুলিতে আছে ঐতিহাসিক জয়
অপরদিকে, বাংলার লড়াই এ যাদের উপর তাহলে ভরসা রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নের্তৃত্ব, তাঁদের প্রত্য়েকেরই ঝুলিতে আছে ঐতিহাসিক জয়। এই ৫ স্তম্ভের মধ্য়ে সুনীল দেওধর এখন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক। দুষ্মন্ত গৌতম ছত্তীসগঢ়ের পর্যবেক্ষক দুষ্মন্ত মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-র সাফল্য়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। বিনোদ তাওড়ে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক। ওদিকে উত্তরপ্রদেশ থেকে ২০১৪ এবং ২০১৯ পরপর দুবার লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী এবং বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের সর্বভারতীয় সম্পাদক হলেন হরিশ দ্বিবেদী। এবং পঞ্চম স্তম্ভ বলতে গেলে ২০১৮ ও ১৯ এ পরপর দুবার লোকসভা নির্বাচনে তিনিও বিজয়ী। জন্ম থেকে রাজনীতিতে দক্ষ সেই পঞ্চমতম পান্ডবের নাম বিনোদ সোনকর। যিনি সদ্য ত্রিপুরার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন।
আরও পড়ুন, 'বাংলাকে গুজরাট বানাবে বিজেপি', রাজ্য়ে চাকরির প্রসঙ্গ তুলে বিস্ফোরক দিলীপ
একটু একটু করে 'ডানা ছাঁটা হচ্ছে দিলীপের'
প্রসঙ্গত,বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভূমিকা-পালন নিয়ে বহুদিন ধরেই চাপান-উতোর চলছিল। সেই আগুনে বাড়তি ঘি মুকুল রায়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে রাজ্যের সংগঠনের নতুন সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকে করার পরও কথা ওঠে, একুশের আগে এভাবেই একটু একটু করে 'ডানা ছাঁটা হচ্ছে দিলীপের'। কারণ দিলীপ ঘোষের টিমের অন্যতম মুখই ছিল সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। প্রকাশ্য়ে বেরিয়ে পড়ে গোষ্ঠী কোন্দল। ধামাচাপা দেওয়ার আগেই সেই বেলুনে খোঁচা মারে তৃণমূল শিবির। এরপর দুর্গা পুজোর পরেই অমিত শাহ আসেন কলকাতায়। এদিকে একের পর এক বৈঠকের পর দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে সতর্কও করে দেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই বিপদের ঝুঁকি না নিয়ে 'মা-মাটি-মানুষ'-র রাজ্য়কে, রাম-রাজ্য প্রতিষ্ঠায় বিজেপির 'তুরুপের তাস' এখন এই 'পঞ্চ পান্ডব'ই ।