ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের জেরে বাতিল হতে পারে বিমান। পাশপাশি ঘূর্ণীঝড়ের আশঙ্কায় এদিন ফের বাতিল করা হয়েছে আরও ৩৬টি ট্রেন।
ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের (Cyclone Jawad) জেরে দুর্যোগের আশঙ্কায় সতর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (Airport)। বিশেষ করে এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িশা এবং অন্ধ্রে। তাই এই স্থানগুলিতে ঝুকি নিতে চায় না কর্তৃপক্ষ। তাই জাওয়াদের জেরে বাতিল হতে পারে বিমান (Flight)। পাশপাশি ঘূর্ণীঝড়ের আশঙ্কায় এদিন ফের বাতিল করা হয়েছে আরও ৩৬টি ট্রেন (Indian Railways)।
কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আবহাওয়া দফতর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, সেন্ট্রাল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স, বিভিন্ন বেসরকারি বিমান সংস্থার জরুরী ভিত্তিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বৈঠক হলেও সব ধরনের ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে পরিস্থিতি সামনে রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে খবর। সেক্ষেত্রে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিমানবন্দরগুলো বাড়তি সতর্ক। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পরিস্থিতির অবনতি হলে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে থাকা বিমানবন্দরগুলিতে বেসরকারি বিমান সংস্থার বিমান বাতিল করা হতে পারে। ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা।
অপরদিকে ইতিমধ্য়েই ঘূর্ণীঝড়ের আশঙ্কায় এদিন ফের বাতিল করা হয়েছে ট্রেন। শনিবার বাতিল হওয়া আপ ও ডাউন এক্সপ্রেস ট্রেনের তালিকাগুলি জেনে নিন। আপের মধ্যে রয়েছে- হাওড়া-সেকেন্দ্রাবাদ , হাওডা়-যশবন্তপুর, হাওড়া-তিরুপতি এক্সপ্রেস। পাশাপাশি হাওড়া-হায়দ্রাবাদ, হাওড়া-এমজিআর চেন্নাই মোট দুটি, হাওড়া এনরাকুলাম, জয়নগর-পুরি, আরও ৩টি হাওডা়-পুরী, হাওড়া- যশবন্তপুর, হাতিয়া-পুরী, হাওড়া-ভাস্কদাগামা, ধানবাদ-আল্লাফুৎজা, রাউরকেল্লা-পুরি। অপরদিকে, ডাউনে বাতিল হওয়া ট্রেনের তালিকায় রয়েছে- চেন্নাই-হাওড়া, হায়দ্রাবাদ -হাওড়া, পুরী-হাওড়া মোট দুটি, পুরী-হাতিয়া, পুরী- যোগ নগরী ঋষিকেশ, পুরী-দিল্লি, পুরী -পাটনা, যশবন্তপুর-হাওড়া, কন্যাকুমারি-হাওড়া, তিরুপতি-হাওড়া, জগদ্দলপুর-রাউলকেল্লা। পাশাপাশি সেকেন্দ্রাবাদ-হাওড়া, সেকেন্দ্রাবাদ-গুয়াহাটি, ভিল্লুপুরম-পুরলিয়া, দুটি এমজিআর চেন্নাই-হাওড়া,আল্লাফুৎজা- ধানবাদ, তাম্বারম-জসিধ, আরও দুটি পুরী- হাওড়া, পুরী-রাউরকেল্লা, পুরী-আনন্দবিহার।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণীঝড় পুরীর উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্ধ্রের উত্তর উপকূলীয় জেলাগুলিতে, সরকারি যন্ত্রপাতি সতর্ক অবস্থায় নজরে রাখা হয়েছে। কারণ প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কিমি গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। শনিবার অন্ধ্র উপকূলের বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্য়েই জেলা গুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এর অভিমুখ হবে উত্তর-পশ্চিম দিকে। শনিবার সকালে এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ অথবা উড়িষ্যা উপকূলে পৌঁছোবে। সেখান থেকে আবার গতিপথ পরিবর্তন। এবার অভিমুখ উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিক। শনিবার দুপুরের পর এটি প্রথমে উত্তর অন্ধপ্রদেশ উপকূল বরাবর এবং পরে উড়িষ্যা উপকূল বরাবর ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ দমকা হাওয়ায় ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে এগোবে।
ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বাংলার উপকূলে সমুদ্র উত্তাল হবে। শনিবার সকালে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগ ৬৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার হতে পারে। মৎস্যজীবীদের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়াতে মৎস্যজীবীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতাসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় বৃষ্টি এবং উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনিবার ও রবিবার ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি র সম্ভাবনা রয়েছে।